সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তী পুরুষ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে নিয়ে স্মারকগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। বইটি সম্পাদনা করেছেন লেখক ও গীতিকার গাজী তানভীর আহমদ। প্রকাশ করেছে ‘আদিল প্রকাশ’। গ্রন্থটিতে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণীসহ দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট লেখক, গবেষক, সাংবাদিক, মিডিয়াকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, পরিচালক-প্রযোজক, অভিনয়শিল্পী, কণ্ঠশিল্পী, পরিবারের সদস্য এবং সঙ্গীত সংশ্লিষ্টসহ আরও অনেকের স্মৃতিচারণমূলক লেখা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে দেশের বিশিষ্ট লেখকদের নিবেদিত ছড়া ও কবিতা, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের স্বরচিত কবিতা, নিজস্ব হাতের লেখা, কালজয়ী দেশাত্মবোধক, চলচ্চিত্র এবং অ্যালবামের নির্বাচিত ১০০ গানের নেপথ্য ইতিহাসসহ সম্পূর্ণ লিরিকস। সম্প্রতি শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল স্মারকগ্রন্থ’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়। নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর সভাপতিত্বে দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বগণ স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন। এ সময় প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বুলবুলের একেকটি গান ছিল একেক রকম, একটার সাথে আরেকটার কোনো মিল ছিল না। দেশের গানও যে এমন সুরে আর কথায় হতে পারে তা বুলবুল করে দেখিয়েছে। বুলবুলের সাথে আমার গান করার শুরুর দিকের অনেক অজানা বিষয় এই বইটিতে আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বুলবুলের সকল গান আর্কাইভ করে রাখার জন্য আমি সরকারের কাছে বিনীত আহবান জানাচ্ছি। সঙ্গীতশিল্পী সামিনা চৌধুরী বলেন, বুলবুল ভাই অত্যন্ত ভালো মনের একজন মানুষ ছিলেন। এই বইটিতে বুলবুল ভাইয়ের সাথে আমাদের সম্পর্কের নানান বিষয় উঠে এসেছে। এই স্মারকগ্রন্থ থেকে পাঠক একজন অন্যরকম বুলবুল ভাইকে খুঁজে পাবেন। এ সময় আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের বড়বোন রোখসানা তানজিম মূকুল আবেগঘন ভাষায় ভাইয়ের যুদ্ধদিনের এবং মৃত্যুর পূর্বের দিনগুলোর কথা বর্ণনা করেন। স্মারকগ্রন্থের সম্পাদক গাজী তানভীর আহমদ বলেন, বুলবুল চাচা ছিলেন একজন শিশু-মানুষ। এই মহান মানুষটির নিকট থেকে আমি মানুষ হতে যেসব গুণের প্রয়োজন তার অনেক কিছুই শিখেছি। আমি দেখেছি, একজন মানুষ-আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে। সেই মানুষগুণের মানুষটির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থেকেই আমার দীর্ঘ আড়াই বছরের বেশি সময়ের প্রচেষ্টার ফসল আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল স্মারকগ্রন্থ। সভাপতির ভাষণে নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, বুলবুল দেশকে এবং দেশের মানুষকে ভালোবেসে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করে করে গেছেন। আমরা তাঁর কাছে ঋণী। বুলবুল দেশের জন্য ট্রাইব্যুনালে দাঁড়িয়েছে। তাঁর ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। কিন্তু আমরা তাঁকে নিরাপত্তা দিতে পারিনি। বুলবুলও নিরাপত্তাহীনতা বোধ থেকে বাসা থেকে খুব একটা বের হতো না। একজন সৃষ্টিশীল মানুষ বন্দিত্বে থেকে তার সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটাতে পারেন না। এটা ছিল আমাদের জন্য চরম ব্যর্থতা। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন বুলবুলের একাত্তরের যুদ্ধকালীন বন্ধু মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহিউদ্দিন হায়দার খোকা, মুক্তিযোদ্ধা ও কণ্ঠশিল্পী লীনু বিল্লাহ, বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার ড. মতিন রহমান, ছটকু আহমেদ, গাজী মাহবুব প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন