শাইখুল হাদিস আল্লামা শেখ আহমদ বলেন, কেয়ামতের দিন সকল মানুষের ভাল-মন্দ আমল ওজন করা হবে। যার নেকির পাল্লা ভারী হবে সে জান্নাতে যাবে। আর যার নেকির পাল্লা হালকা হবে সে জাহান্নামে যাবে। কক্সবাজার জামিয়াতুল ইমাম মুসলিম (রহ) ইসলামিক সেন্টারে বুখারী শরীফের সমাপনী দরস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারী)
দুপুরে কক্সবাজারে দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত কাওমী ধারার সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়াতুল ইমাম মুসলিম (রহ) (ইসলামিক সেন্টার) বুখারী শরীফের শেষ সবক উপলক্ষে এক শানদার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এতে সভাপতিত্ব করেন,
জামেয়ার শুরা কমিটির সদস্য মাওলানা আবছার উদ্দিন চৌধুরী। জামেয়ার সুপরিসর মসজিদে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জামেয়া আহলিয়া তথা হাটহাজারী বড় মাদরাসার শাইখুল হাদিস আল্লামা শেখ আহমদ।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জামেয়া ইমাম মুসলিমের শাইখুল হাদিস মাওলানা আব্দুল গফুর নদীম।
আল্লামা শেখ আহমদ বলেন, বুখারী শরীফের প্রথম হাদিস ইন্নামাল আমালু বিননিয়াত। আর শেষ হাদিস কলিমতানে হাবিবতানে ইলার রাহমান, খফিফতানে আলাল লিসান, ছকিলতানে ফিল মিজান, সুবহানাল্লাহি অবিহামদিহি,
সুবহানাল্লাহিল আজিম'।
আল্লামা শেখ আহমদ বলেন, কেয়ামতের দিন সকল মানুষের ভালো-মন্দ কাজের ওজন করা হবে। যাদের নেকির পাল্লা ভারী হবে তারা জান্নাতে যাবে, আর যাদের নেকির পাল্লা হালকা হবে তারা জাহান্নামে যাবে। সুবহানাল্লাহি অবিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম' শব্দ দুইটি আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়। উচ্চারণ খুবই সহজ এবং কিয়ামতের দিন নেকির পাল্লা ভারী করবে এই দুইটি শব্দ।
তিনি বলেন, ইমাম বুখারী (রাহ) মুতাজিলাদের সন্দেহের উত্তর দিয়ে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের আকিদাকে প্রকটভাবে প্রমাণ করেছেন। কিয়ামতের দিন আদম সন্তানের কর্ম ওজন করা হবে।
মুতাজিলারা কেয়ামতের দিন মিজান বা আমল পরিমাপের কথা বিশ্বাস করেনা। অথচ কুরআন হাদিসের অকাট্য প্রমান আছে যে, কেয়ামতের দিন মিজান বা আমলনামা মাপার বিষয়টি সঠিক ও অকাট্য।
তিনি বুখারী শরীফের শেষ হাদিস ৭২৬২ নং হাদিস 'কলিমতানে হাবিবতানে ইলার রাহমান, খফিফতানে আলাল লিসান, ছকিলতানে ফিল মিজান, সুবহানাল্লাহি অবিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম' এর ব্যখ্যা করে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ইমাম বুখারী শত শত মাইল সফর করে হাদিস সংগ্রহ করেছেন। হাজার হাজার হাদিস থেকে বুখারী শরীফে সংকলিত হাদিস গুলোকে তিনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এই বুখারী শরীফ নিয়ে মুসলিম বিশ্ব আজ সমৃদ্ধ ও গর্বিত।
তিনি বলেন, আমাদের আসল বাড়ি কবর। দুনিয়ার সব কিছুর সময় থাকলেও মৃত্যু আসার কোন সময় কারো জানা নেই। তাই ইমাম বুখারী আল্লাহর জিকির করতে করতে যেন আমাদের মৃত্যু হয়ত সেজন্য তিনি জিকিরের হাদিস দিয়ে বুখারী শরীফ শেষ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, ইমাম বুখারী প্রথমে এবং শেষে দুইজন মুহাজির রাবির হাদিস এনেছেন। এতেও হয়ত এই রহস্য আছে, যে তিনি বুঝাতে চেয়েছেন, এই দুনিয়া থেকে সবাইকে হিজরত করতে হবে। এটি কারো চিরস্থায়ী থাকার জায়গা নয়।
আসুন আমরা সকলে এই হাদিস মত আমল করার চেষ্টা করি। পরিশেষ তিনি জামেয়া ইমাম মুসলিম এর পরিচালক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী ও দেশবাসীর জন্য দোয়া করে মোনাজাত পরিচালনা করেন।
সম্মানিত অতিথি কক্সবাজার পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান,
জামেয়া ইমাম মুসলিমের শিক্ষা কার্যক্রমের খোঁজ খবর নেন এবং প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতি ও সফলতা কামনা করেন।
সার্বিকভাবে খতমে বুখারী অনুষ্ঠানটি তদারক করেন জামেয়া ইমাম মুসলিমের সহকারী পরিচালক সউদ নিজামী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন