টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় ২৩টি নতুন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলা ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার গুরুত্বপূর্ন স্থানে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাফিজুর রহমানের পরিকল্পনা ও তত্ববধানে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি শহীদ মিনার নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা। এতে উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরাসহ সর্বস্তরের মানুষ নিজ নিজ এলাকায় নবনির্মিত শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। তাছাড়া সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ নিজস্ব অর্থায়নে উপজেলা সদরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
এলাকাবাসী এবং জনপ্রতিনিধিরা জানান, এ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা কার্যালয়ে কোন শহীদ মিনার ছিল না। এজন্য তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরাসহ সর্বস্তরের মানুষ ভাষা শহীদসহ অন্যান্য শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে পারতেন না। এ অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাফিজুর রহমান প্রতিটি ইউনিয়নে শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। তিনি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিটি ইউনিয়নে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ইতিমধ্যে উপজেলার ১৪টি ইউপি কার্যালয়ের চত্বরে তা নির্মিত হয়েছে। অবশ্য যেসব ইউনিয়নে কার্যালয় নেই সেখানে আশপাশের সুবিধাজনক স্থানে তা নিমার্ণ করা হয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ন স্থানে তিনি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। প্রতিটি শহীদ মিনার নির্মাণে চার থেকে সাড়ে লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এবং ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল থেকে এ টাকা খরচ করা হয় বলে ইউএনও হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন।
যে ২৩টি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো হলো- উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নে দেওহাটা এ জে উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, কোদালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে, আজগানা ইউনিয়নের ঝোপবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে, কুড়িপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, এডিএম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদ, অভিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গায়রাবেতিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তরফপুর ইউনিয়ন পরিষদ, লতিফুর ইউনিয়ন পরিষদ, ফতেপুর ইউনিয়নের হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, মহেড়া ইউনিয়নে ছাওয়ালী ভাতকুড়া এম কে এ বি বালিকা বিদ্যালয়, জামুর্কী ইউনিয়নে জামুর্কী এনএসএজি উচ্চ বিদ্যালয়, বানাইল ইউনিয়ন পরিষদ, বানাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদ, সিবিএ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুইচতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উয়ার্শী ইউনিয়নের সিয়াম একাডেমী, ভাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ, বহুরিয়া ইউনিয়নের দিঘুলিয়া বেত্রাশিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পৌরসভায় মির্জাপুর সরকারি এস কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম, তরফপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিজ রেজা ও লতিফপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন রনিসহ চেয়ারম্যানদের সাথে কথা হলে তারা, ইউএনও’র এই পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞ প্রকাশ করেন। এতে করে শুধু তারাই নয়, এলাকার সর্বস্তরের জনগনও নবনির্মিত শহীদ মিনারে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো সুযোগ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
ইউএনও হাফিজুর রহমান বলেন, ভাষা শহীদ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা প্রতিটি বাঙালির নৈতিক দায়িত্ব। এই উপলব্ধি থেকে তিনি এই শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করেছেন বলে জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন