শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

নির্যাতনের সুনামিতেও ঐক্য অটুট

বিএনপি’র-২০১৬

| প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আফজাল বারী : রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে ১০ বছর পার করেছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এই ১০ বছরের মধ্যে ফেলে আসা বছরের চেয়ে চলমান বছরটি ছিলো চরম প্রতিকূল। আর সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নেমে এসেছে নির্যাতন-নিপীড়ন। সেটা আবার প্রাকৃতিক নয়; রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের। প্রতি সপ্তাহেই বিচারকের কাঠগড়ায় হাজির হতে হয় দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়াকে। অন্যদেরও একই অবস্থা। তাদের প্রতিটি কৌশলই বিএনপির উপর বয়ে গেছে সুনামিরূপে। তবে আশার কথা, গত বছর নানামুখী নির্যাতনেও দলটির ঐক্যে চোট লাগাতে পারেনি। বরং প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করে সংগঠনকে অন্য সময়ের চেয়ে আরো শক্তিশালী করেছে হাইকমান্ড।
একই সাথে নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রস্তাবনা এবং প্রেসিডেন্টের সাথে সংলাপের মধ্য দিয়ে আবারো প্রমাণ দিয়েছে জনতার বিচারে বিএনপিই বিরোধী দল। শুধু জাতীয় সংসদের চেয়ারে বসলেই বিরোধী দল হয় না। ভিনদেশী কূটনীতিকদের মূল্যায়নেও তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। অবশ্য জাতীয় ইস্যুতে যেমন প্রত্যাশা ছিলো তা পূরণ করতে পারেনি।
২০১৬ সাল জুড়ে দল পুনর্গঠনেই ব্যস্ত ছিলো দলটি। পাহাড় ঠেলে সফল কাউন্সিলের পর কেন্দ্রীয় নির্বাহী, জাতীয় স্থায়ী ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কমিটি নতুনভাবে সাজানো হয়। বছরে ২৫টি জেলা কমিটি গঠন করেছে। গত ১ মাসেই ৭টি কমিটি ঘোষণা করা হয়। তৃণমূল পুনর্গঠনও জোরেশোরে চলে। মূল দলের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদল ও মহিলা দলের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। যুবদলসহ আরও কয়েকটি অঙ্গসংগঠনের কমিটি গঠনের কাজও প্রায় শেষের দিকে। দল পুনর্গঠনের পাশাপাশি জাতীয় বেশ কিছু ইস্যুতেও সরব ছিলো বিএনপি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। তাই স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া জাতির সামনে একটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। ক্ষমতাসীনরা ওই প্রস্তাবকে অন্তঃসারশূন্য বললেও দেশের সুশীল সমাজসহ অনেকেই তা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে। সর্বশেষ ইসি পুনর্গঠন নিয়ে বিএনপিকে সংলাপে ডাকেন প্রেসিডেন্ট। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাব ইসি পুনর্গঠনে সহায়ক হবে প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যে নতুন করে আশাবাদী হয়ে ওঠে দলটি।
রাজপথের আন্দোলন না থাকায় আগের চেয়ে গত বছরটিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছিলো কিছুটা কম। দেশে ছিলো না তেমন সহিংসতা। সভা-সমাবেশ বা কিছু ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়ালে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়নি। ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসকে কেন্দ্র করে কিছুটা উত্তাপ ছড়ায়। ওইদিন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চায় বিএনপি। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন অনুমতি দেবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়। এরপর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুমতি চাইলেও শেষ পর্যন্ত পুলিশ অনুমতি দেয়নি। এই নিয়ে কিছুটা উত্তাপ সৃষ্টি হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল করার মধ্য দিয়েই এর প্রতিবাদ জানায় দলটি। রাজপথে উত্তাপ না থাকলেও বছর জুড়েই আলোচনায় ছিলো আদালতপাড়া। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সিনিয়র নেতারা সারাবছরেই আদালত পাড়ায় ব্যস্ত সময় পার করেন। জিয়া অরফ্যানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হয়। এ দুটি মামলার বিচারকাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইনকিলাবকে বলেন, চলতি বছর দল হিসেবে বিএনপির অনেক সাফল্য রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সফলভাবে কাউন্সিল করতে পেরেছি। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও দল গোছাতে পারা এটাও আমাদের সাফল্য। ২০১৬ সাল ছিলো বিএনপি’র ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। সরকারের নানা নির্যাতনে দলের সাংগঠনিক অবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। এসব দুর্বলতা কাটাতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। সফলভাবে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল শেষ হওয়ার পর নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে দলে গতি ফিরে আসে। কেন্দ্রের পাশাপাশি তৃণমূল পুনর্গঠনেও তৎপর ছিলাম। ইতিমধ্যে অনেক জেলায় নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রাজপথে না থাকলেও বিএনপি যে আন্দোলন থেকে সরে গেছে এমনটা ভাবা ঠিক নয়। আন্দোলনের অংশ হিসেবেই আমাদের নেত্রী ইসি পুনর্গঠনে প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বিএনপির সঙ্গে এ বিষয়ে সংলাপ করেছেন। এতে আমরা বর্তমান সংকট নিরসনে আশাবাদী হয়ে ওঠেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির প্রার্থীর পরাজয় হলেও সেখানে আন্দোলনে আমাদের আংশিক বিজয় হয়েছে। বিএনপির আন্দোলনের কারণেই সরকার অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেশে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠাই আগামী দিনে বিএনপি’র প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে জানান দলটির এই নীতিনির্ধারক।  
নাসিকে জয় হাতছাড়া হওয়ায় কিছুটা মনঃক্ষুণœ নেতারা  
বছরের শেষপ্রান্তে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই দলের মধ্যে সুস্থ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। স্থানীয় নির্বাচন হলেও তা জাতীয় উত্তাপ ছড়ায়। নাসিকে জয় দিয়ে বছর শেষ করার প্রত্যাশা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ঘরের শত্রু বিভীষণে তা সম্ভব হয়নি। তাই কিছুটা মনঃক্ষুণœভাবেই বছর শেষ করতে হয়েছে বিএনপি নেতা-কর্মীদের।
নাসিক নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর পরাজয় হলেও এতে আন্দোলনের আংশিক বিজয় হিসেবে দেখছে দলটি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে দলটি রাজপথে যে আন্দোলন করে যাচ্ছে নাসিক নির্বাচনে এর কিছুটা সফলতা এসেছে।
জাতীয় কাউন্সিল ও নতুন কমিটি  
দুই দফা সরকার বিরোধী আন্দোলনে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে বিএনপি। সময়মতো কাউন্সিল না হওয়ায় নেতাকর্মীদের মনোবলও দুর্বল হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন বিরতি দিয়ে দল পুনর্গঠনের দিকে নজর দেয় বিএনপি। বছরের শুরুতেই কাউন্সিলের তোড়জোড় শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত গত বছর ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় দলটির ষষ্ঠ কাউন্সিল। কাউন্সিল ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা তৈরি হয়। সারাদেশ থেকে কয়েক হাজার নেতা কাউন্সিলে অংশ নেন। অত্যন্ত সফলভাবে শেষ হয় জাতীয় কাউন্সিল। এবারের কাউন্সিলে দলের গঠনতন্ত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়। বাড়ানো হয় জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা। এক নেতার এক পদ এমন গুরুত্বপূর্ণ বিধান গঠনতন্ত্রে সংযোজন করা হয়। কাউন্সিলের দিন নতুন কমিটি না দেয়ায় নানা সমালোচনার মুখে পড়ে দলটির হাইকমান্ড। কাউন্সিলের ১১ দিন পর গত ৩০ মার্চ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মহাসচিব, রুহুল কবির রিজভীকে সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও মিজানুর রহমান সিনহাকে কোষাধ্যক্ষ করে তিনজনের নাম ঘোষণা করা হয়। ৯ এপ্রিল ঘোষণা করা হয় যুগ্ম-মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম। আর সর্বশেষ ৬ আগস্ট ৫০২ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটির দুটি পদ ফাঁকা রেখে বাকিদের নাম ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ৭৩ সদস্যের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কমিটির নামও ঘোষণা করা হয়নি।
তৃণমূল পুনর্গঠন :
কেন্দ্রীয় কমিটির পাশাপাশি গত বছরে তৃণমূল পুনর্গঠনে নজর দেয় বিএনপি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর দলটি সাংগঠনিক সংকটে পড়ে। ওই সংকট কাটাতে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে পুনর্গঠন কাজে হাত দেয়। ৯ আগষ্ট কেন্দ্র থেকে চিঠি পাঠিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে তৃণমূল পুনর্গঠনে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু বেঁধে দেয়া সময়সীমার মধ্যে জেলা কমিটি করা সম্ভব হয়নি। এ পর্যন্ত তিন দফা তৃণমূল পুনর্গঠনের জন্য টাইম ফ্রেম বেঁধে দেয়া হয়। সর্বশেষ ডিসেম্বরের মধ্যে সব কমিটি করা হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল হয়নি দলটি। কয়েকদফা সময় বাড়িয়ে ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে প্রায় অর্ধেকের পুনর্গঠন, আংশিক পুনর্গঠন শেষ করেছে দলটি।
জানা গেছে, নতুন গঠিত কমিটি নিয়েও নানা অভিযোগ ওঠেছে। কোথাও কোথাও যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দেয়া হয়েছে। আবার অনেক জায়গায় সিন্ডিকেটের কারণে কমিটি করা সম্ভব হচ্ছে না। এক নেতার এক পদ বিধান কার্যকরে কঠোর পদক্ষেপ নিলেও এখন অনেকেই একাধিক পদ আঁকড়ে আছেন। তাদের কারণে অনেক জেলায় কমিটি গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না।
জানতে চাইলে বিএনপির তৃণমূল পুনর্গঠনের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ইনকিলাবকে বলেন, আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই তৃণমূল পুনর্গঠন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের বাধা, হামলা-মামলায় হয়রানিসহ নানা কারণে তা শেষ করতে পারছিনা। এখন পর্যন্ত ৫০ ভাগ পুনর্গঠন  সম্পন্ন হয়েছে। আমরা প্রায় আশিভাগ জেলার হোমওয়ার্ক সম্পন্ন করে রেখেছি। দ্রুতই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ করতে পারবো বলে আশা করি।
ইসি পুনর্গঠনে প্রস্তাব ও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপ  
২০১৬ সালে বিএনপির রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য দিক ছিলো নির্বাচন কমিশন গঠনে বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া প্রস্তাব এবং সেই প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে নিয়ে প্রেসিডেন্ট দলটির সঙ্গে সংলাপ করে। এতে আশাবাদী হয়ে ওঠেন বিএনপি’র নেতারা। ১৮ নভেম্বর রাজনীতির একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই প্রস্তাব উপস্থাপন করেন বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। নতুন নির্বাচন কমিশন কীভাবে গঠিত হবে, সেই কমিশনের অধীনে কীভাবে আগামী নির্বাচন হবে- সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি। নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, একই সঙ্গে সব দলের ঐক্যের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের খুঁজে বের করতে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি গঠন, ইসি শক্তিশালীকরণে আরপিও’র কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন ওই রূপরেখায়।
তিন বারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্রস্তাব অন্তঃসারশূন্য বলে তা প্রত্যাখ্যান করে ক্ষমতাসীন দল। কিন্তু সুশীল সমাজসহ অনেকেই ওই প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে। ক্ষমতাসীনরা প্রত্যাখ্যান করলেও থেমে যায়নি বিএনপি। প্রস্তাবের একটি কপি তারা প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠান। প্রস্তাবের পক্ষে জনসমর্থন আদায়েও নানা উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। এমন পরিস্থিতিতে ১৮ ডিসেম্বর সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে বিএনপিকে চিঠি দেন প্রেসিডেন্ট। ওইদিন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে যান। তারা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌহার্দ্য পরিবেশে বৈঠক করেন। ইসি পুনর্গঠনে পূর্বের দেয়া প্রস্তাবের একটি কপি প্রেসিডেন্টকে দেয়া হয়। একইসঙ্গে সার্চ কমিটি ও সিইসি এবং অন্যান্য কমিশনারের জন্য দশজনের একটি তালিকাও তাকে দেয়া হয়। বিএনপির প্রস্তাবকে ইতিবাচক উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট। তিনি জানান, ইসি পুনর্গঠনে এ প্রস্তাব সহায়ক হবে। প্রেসিডেন্টের এমন মনোভাবে আশান্বিত হয়ে ওঠেছেন বিএনপি নেতারা। তাদের প্রত্যাশা সব দলের মতামতের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করবেন।  
আদালত পাড়ায় ব্যস্ত ছিলেন নেতারা  
হরতাল অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি না থাকায় রাজপথে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর দমন-পীড়ন থেকে অনেকটাই নিরাপদে ছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে বিগত বছরগুলোতে দায়ের করা নানা মামলায় গত বছর আনুষ্ঠানিক বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন দলটির নেতারা। বিগত বছরগুলোতে উপর্যুপরি মামলার মাধ্যমে আইনী জালে আটকানো হয়েছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের। ২০১৪ সালে সে সব মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটি থেকে তৃণমূল নেতাদের অনেকেই এখন একাধিক মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচারের মুখোমুখি।
ইতিমধ্যে তারেক রহমানের একটি মামলায় রায় হয়েছে। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল মামলার বিচারকার্য দ্রুতগতিতে চলছে। কয়েকদিন পরপরই খালেদা জিয়াকে আদালতে উপস্থিত হতে হচ্ছে। এ দুটি মামলা নিয়ে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নানা শংকায় রয়েছেন। তারা মনে করছেন, সরকার এ মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিতে পারেন। মামলার করণীয় নিয়ে সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছেন খালেদা জিয়া। শুধু দলের দুই শীর্ষ নেতাই নয়, মহাসচিবসহ সিনিয়র প্রায় সব নেতাকেই নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে।
এদিকে নেতা-কর্মীর পরিবারের সদস্যরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। নেতাকর্মীর বাসা-বাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হাতছাড়া হয়েছে। আর গুম-খুনের তালিকায় বছরজুড়েই বিএনপিসহ তাদের মিত্র দলের লোকজনের নামই অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সবকিছু ছাপিয়ে সামনের দিনে নতুন আলোর সন্ধান পাবে- এমনটির প্রহর গুনছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, সে দিন বেশি দূরে নয়।  

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন