রমজান মাস সামনে রেখে চাল, গম, আলু, পিঁয়াজ, রসুন, ছোলা, বুট, ডাল, হলুদ, মরিচ, ভুট্টা, আটা, ময়দা, লবণ, ভোজ্যতেল, চিনিসহ সব ধরনের ফল সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই)।
বুধবার (১ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রাক বাজেট আলোচনায় এমন সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম এসব প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।
এমসিসিআই বলছে, আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ধারা ৫২ এর বিধি ১৬ ১(বি) অনুসারে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য সামগ্রী যেমন- চাল, গম, আলু, পিঁয়াজ, রসুন, ছোলা, বুট, ডাল, হলুদ, মরিচ, ভুট্টা, আটা, ময়দা, লবণ, ভোজ্যতেল, চিনি, সব ধরনের ফল ইত্যাদির সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে ২ শতাংশ হারে কর কর্তনের বিধান রয়েছে।
সংগঠনটি বলছে, কৃষিজাত পণ্য মূলত ব্যবসায়ী ও প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়। ফলে তাদের কাছ থেকে উৎসে কর কর্তন করা সরকারের রাজস্ব প্রক্রিয়াগতভাবে একটি অসম্ভব কাজ। নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যে করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হলে দেশের সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই প্রক্রিয়াগত জটিলতা ও সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সব ধরনের কৃষিজাত নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যকে উৎসে কর কর্তনের আওতা বহির্ভূত রাখার প্রস্তাব করছি।
সংগঠনটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের অধিকাংশ সদস্যই এমসিসিআইয়ের সদস্য। সামগ্রিক জাতীয় রাজস্বের প্রায় ৪০ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি আসে এমসিসিআইর সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে। এমসিসিআই বরাবরই রাজস্ব সংগ্রহ এবং নীতি বাস্তবায়নে এনবিআরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে। বাজেট প্রস্তাবনার মধ্যে সবসময়ই বাজেট ব্যবস্থাপনা অধিকতর গতিশীল করার দিকে জোর থাকে। আমাদের বাজেট প্রস্তাবনায় সামগ্রিক কল্যাণ তথা দেশের কল্যাণ ও বিনিয়োগবান্ধব ব্যবসা চিন্তা করে থাকি।
কর্পোরেট কর হার হ্রাসের সুপারিশ করে এমসিসিআই সভাপতি বলেন, বিগত অর্থবছরে কিছু শর্ত সাপেক্ষে প্রায় সবক্ষেত্রে কর্পোরেট কর হার ২.৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। বর্তমান বাস্তবতায় হ্রাসকৃত কোম্পানি করহার সুবিধা কেউই ভোগ করতে পারছে না। অর্থ আইন, ২০২২ অনুযায়ী নগদ লেনদেনের শর্তাবলীর প্রযোজ্যতার কারণে হ্রাসকৃত কর হার সুবিধা নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না। আমাদের দেশে কার্যকরী করপোরেট কর হার অনেক বেশি।
এমসিসিআই ভ্যাট ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যারের মাধ্যমে বর্তমানে প্রায় সব কোম্পানিগুলো মাসিক ভ্যাট রিটার্ন দিয়ে থাকে। তবে এই ব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গভাবে অটোমেশন নয়। ই-ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে এই অটোমেশন ব্যবস্থা গতিশীল হবে বলে এমসিসিআই মনে করে।
এছাড়া সময়ের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে কর নির্ধারণ ব্যবস্থা, আপিল, ট্রাইবুনাল, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পর্যায়ে প্রচলিত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে অনলাইনে শুনানি গ্রহণের বিধান দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআরের পক্ষ থেকে শুল্ক বিভাগের সদস্য মো. মাসুদ সাদেক, ভ্যাট নীতির সদস্য জাকিয়া সুলতানা ও আয়কর নীতির সদস্য সামস উদ্দিন আহমেদ ও এমসিসিআই'র ট্যারিফ ও ট্যাক্সেশন কমিটির চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদসহ সংগঠনটি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন