প্রাণীজ আমিষের সহজলভ্য উৎস হিসেবে পরিচিত ব্রয়লার মুরগির দাম চড়তে চড়তে ২৫০ টাকা ছুঁয়েছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডিমের দাম। বাজারসহ পাড়া মহল্লায় এক হালি ডিম কিনতে গুণতে হচ্ছে ৫০ টাকা। সরবরাহ সংকটের কারণেই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে মুরগির বাজার।
শুক্রবার কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা কেজি দরে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহে দাম কমে ২৩০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার বিক্রি হলেও, সংকট থাকায় খামার পর্যায়ে আবারও বেড়ে গেছে দাম।
কারওয়ানবাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, সারা বাংলাদেশেই মুরগি নাই। এইটা হইল আসল কথা। আমরা খামারিদের কাছ থেকে তো কম দামে কিনতে পারি না, যেমন দামে কিনি তেমন বেচি।
এদিকে বাজারে ডাল, ছোলা, চিনি ও তেলসহ বেশির ভাগ খাদ্যপণ্যের দামে তেমন পরিবর্তন হয়নি। আগের মতোই।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৯০ টাকা ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়, ১৩০ টাকার মসুরি ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।চিনির সংকট এখনও কাটেনি। চায়না আদা ঠেকেছে ১৩০ থেকে২৫০ টাকা৷ রসুনের দাম ১০০থেকে ১৪০ টাকা
ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশ চ্যাপ্টার জানায়, গত জানুয়ারির শুরু থেকে বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে, যা কাটিয়ে উঠতে দুই মাসের মতো লাগবে।
ডিম-মুরগিতে আমিষের চাহিদা মেটানো ক্রেতারা বলছেন, ক্রমাগত এই দাম বৃদ্ধি তাদের জীবনযাত্রার মানে প্রভাব ফেলছে। কেউ কেউ কাটছাঁট করছেন কেনাকাটায়।
আলী আসলাম চাকরি করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। তিনি বলেন, বেতন তো আমাদের বাড়েনি। কিন্তু এর মধ্যে সব কিছুর দাম বেড়েছে। গরুর মাংস কেনার সামর্থ হারিয়েছি আরও আগে। এখন মুরগি কিনতেও ভাবতে হচ্ছে।
এদিকে মুরগির দামের এ বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলছেন খোদ বিক্রেতারাও। এক বিক্রেতা বলেন, মুরগির দাম অতিরিক্ত বেশি, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
কিন্তু হঠাৎ কেন এমন অসহনীয় হয়ে উঠল বাজার? সর্বোচ্চ কত টাকা হতে পারে এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম?
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতা জানান, এত বাড়ার কথা নয়। কেন মুরগির দাম এত বেশি বাড়বে? কেন আড়াইশ টাকা কেজি হবে? আমাদের উৎপাদন খরচ সমন্বয় করে ব্রয়লার মুরগির সর্বোচ্চ বাজার দর হওয়া উচিত ২০০ টাকা কেজি।
পরিস্থিতিতে উৎপাদন পর্যায়ে তদারকি করে বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস ওঠার যৌক্তিকতা নিরূপণের তাগিদ জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন