বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাঙ্গন

শিক্ষা সফরে বাকৃবি

| প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্বচোখে দেখে হাতে-কলমে শেখা পুঁথিগত বিদ্যাকে সবসময় এক ধাপ বাড়িয়ে দেয়। তা যদি হয় সত্যিকারের কোনো ফ্যাক্টরি তাহলে তো কথাই নেই। অনেক জল্পনা-কল্পনার পর হলো আমাদের সেই কাক্সিক্ষত শিক্ষা সফর। ফার্ম স্ট্রাকচার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফুড ফ্যাক্টরি ট্যুরটি ছিল একদিনের। স্থান ঠিক করা হয়েছিল ঢাকার তেজগাঁয়ে অবস্থিত পোলার আইসক্রিম ফ্যাক্টরি। গত শনিবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ৪৫ জন শিক্ষার্থী ঘুরে আসি পোলারের আইসক্রিম রাজ্যে। আমাদের গ্রুপ শিক্ষক ছিলেন অধ্যাপক মো. সিদ্দিকুর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক মো. রায়হানুল ইসলাম। পরে আমাদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক ড. মো. নূরুল হক স্যার।
শিক্ষা সফর সবসময়ই মনে একটি অন্যরকম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তৃতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের টানা পরীক্ষা দিয়ে এক রকমের একঘেয়েমি চলে এসেছিল। এই একঘেয়েমি পড়ালেখার ফলে মনে যে ক্লান্তি এসেছিল তা দূর করতে এ ট্যুরটি দরকাল ছিল। ভোর ৭টার সময় সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যালি প্যাডে জড়ো হই। বাস আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। সাড়ে ৭টার ভেতরই বাস ছেড়ে দেয় ঢাকার উদ্দেশে। যাওয়ার সময় পুরো রাস্তা চলে গান, আড্ডা, হৈ-চৈ আর সেলফির ক্লিক। আড্ডা চলতে চলতে পৌঁছে গেলাম পোলারে।
ফ্যাক্টরি গিয়ে আমরা দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে গেলাম। প্রথমেই পোলার থেকে আমাদের আইসক্রিমের মাধ্যমে ঠা-া অভ্যর্থনা দেয়া হলো। তারপর তাদের কনফারেন্স কক্ষে পোলারের ইতিহাস, আইসক্রিমের উপাদান, প্রস্তুত প্রণালী সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দেয়া হয়। পরে সেখান থেকে ইচ্ছামত আইসক্রিম খেয়ে চলে গেলাম সরাসরি মূল কারখানায়। এখান থেকেই প্রস্তুত হয় পোলারের সকল আইসক্রিম আর পৌঁছে যায় সারা দেশে সকলের হাতে। প্রবেশ করতে হলো অ্যাপ্রন, মাস্ক, টুপি পরে। ভেতরে অন্যরকম এক পরিবেশ। এতদিন শুধু বই পড়ে, খেয়ে এসেছি তা আজ স্ব-চোখে দেখছি। মনে হলো যেন ডিসকভারি চ্যানেলের ফুড ফ্যাক্টরি অনুষ্ঠানটি চোখের সামনে চলছে। একজন গাইড আমাদের সব জায়গায় ঘুরিয়ে দেখালেন আর সুন্দর করে বর্ণনা করে বুঝিয়ে দিলেন। বইয়ের পড়া সব চোখে দেখে মিলিয়ে নিলাম। সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ছিল আইসক্রিমের কোল্ড স্টোরেজ রুম। মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সব আইসক্রিম সংরক্ষণ করা হয়। ওই রুমে প্রবেশের সাথে সাথে মনে হলো যেন বরফের দেশ সাইবেরিয়াতে প্রবেশ করলাম। চারদিকে শুধু আইসক্রিম আর আইসক্রিম। এ যেন এক আইসক্রিমের রাজ্য। আর কিছুক্ষণ থাকলে মনে হয় আইসক্রিমের সাথে আমরাও বরফ হয়ে যেতাম। এই অভিজ্ঞতা ছিল সবচেয়ে বেশি স্মরণীয়। সবশেষে এবার ফেরার পালা। ফেরার পথে আমাদের শ্রদ্ধেয় সিদ্দিকুর রহমান স্যার সবাইকে বিখ্যাত মিষ্টি খাওয়ালেন।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন মানেই ক্লাস-পরীক্ষা আর অ্যাসাইনমেন্ট। যা মনকে একঘেয়েমি করে তোলে। মাঝে মাঝে একটা শিক্ষা সফর মনটাকে চাঙ্গা করে দেয়। সাথে জ্ঞান আহরণও কম হয় না। একসময় ছেড়ে চলে যেতে হবে চিরচেনা এই ক্যাম্পাস, হয়তো বন্ধুরাও একসময় চলে যাবে নিজেদের ব্যস্ততায়। কিন্তু রয়ে যাবে আমাদের এই আনন্দের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সফরের স্মৃতি।
ষ নাজিব মুবিন

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন