১। মোহাম্মাদ লাবীবুল বারী উসাইদ, উত্তরা, ঢাকা।
জিজ্ঞাসা : আল-কুরআনে উদ্ধৃত বিশ্বনবী (স:)-এর বর্ণিত বিশেষ দু’আ সম্পর্কে আলোকপাত করুন?
জবাব : (পূর্ব প্রকাশিতের পর) এই দু’আয় দুনিয়া ও আখিরাতের সব ধরনের কল্যাণ লাভ করার এবং পরকালের সর্বপ্রকার অকল্যাণ থেকে আত্মরক্ষার প্রার্থনা করা হয়। ইহকালীন কল্যাণের মধ্যে জাগতিক সব প্রার্থিত বিষয় শামিল রয়েছে। যেমন মানসিক শান্তি, সুপ্রশস্ত নিবাস, উত্তম ও সুদর্শন জীবনসাথী, জীবিকার প্রাচুর্য, উপকারী ইলম ও সুখকর প্রশংসা ইত্যাদি। পরকালের কল্যাণের মধ্যে রয়েছে সব রকম ভীতিকার বিষয় থেকে মুক্তি, হিসাব সহজ হওয়া এবং আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পুরস্কার জান্নাত লাভ করা। জাহান্নাম থেকে নাজাতের প্রার্থনায় রয়েছে যেসব কাজ দ্বারা জাহান্নামে অগ্নিদগ্ধ হতে হবে, সেসব গোনাহ, পাপ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ থেকে দুনিয়ায় বেঁচে থাকার সামর্থ্য লাভ করা। হযরত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ সর্বদা পাঠ করতেন- ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা আতিনা ফিদ্ দুনিয়া হাসানাতান ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাউ ওয়াকিনা আজাবান না’র হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, রাসূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা পাঠ করতেন, হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার জনৈক অসুস্থ মুসলিমকে দেখতে গেলেন। দেখলেন তিনি শুকিয়ে পাখির বাচ্চার মতো হয়ে গেছেন। নবীজী তাকে বললেন, তুমি আল্লাহর কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা কর?’ তিনি বললেন জ্বী হাঁ, আমি বলি, ‘হে আল্লাহ পরকালে আমার জন্য যে শাস্তি রয়েছে তা আপনি দুনিয়ায় দিয়ে দিন।’ একথা শুনে নবী সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম বলে উঠলেন, সুবহান্নাল্লাহ! তুমি তা সহ্য করতে পারবে না- ‘হে আমার রব! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দিন এবং পরকালেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন। -সূরা বাকারা-২০১’ নবীজীর নির্দেশক্রমে সাহাবী এই দু’আ করেন এবং রোগমুক্ত হন।-সহীহ মুসলিম
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সায়েব রা. থেকে বর্ণিত তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রুকনে ইয়ামনী ও হজ্বরে আসওয়াদের মধ্যখানে রাব্বানা আতিনা ফিদদুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানা, ওয়াকিনা আযাবান নার, পাঠ করতে শুনেছেন- ‘রাওয়াহুল ইমামুশ শাফিয়িয়্যু ওয়ার রুয়াতু কুল্লুহুম সালিহুন ওয়া বা’জুহুম ফাওক্বা বা’জিন।’ আরশের উপহার : আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমের সূরা বাকারার শেষ আয়াতগুলোতে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সকল মুমিনের প্রশংসা বলেছেন, তারা সকলে বিশ্বাস স্থাপন করেছে আল্লাহ পাকের প্রতি, তার ফেরেশতাগণের প্রতি, আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি এবং আল্লাহর সকল নবী রাসূলের প্রতি। তারা নবী রাসূলদের মাঝে কাউকে বিশ্বাস ও কাউকে অবিশ্বাস করার ন্যায় পার্থক্য করে না এবং তারা আল্লাহ পাকের নিকট প্রার্থনা করে, আমরা শুনেছি এবং অনুগত হয়েছি। হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপনার নিকট ক্ষমা চাই। প্রত্যাবর্তন তো আপনারই নিকট। “হে আমাদের, প্রতিপালক যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি তবে আপনি আমাদেরকে পাকড়ারও করবেন না।” “হে আমাদের রব, আমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর যেমন গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করবেন না।” “হে আমাদের প্রতিপালক, এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করবেন না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের পাপ মোচন করুন, আমাদেরকে ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। উত্তর দিচ্ছেন : মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন