শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সোহরাওয়ার্দী বা নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চায় বিএনপি

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান না হলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চায় বিএনপি। পূর্বঘোষিত শনিবারের এই কর্মসূচির আগের দিন গতকাল শুক্রবার বিকালে দলের এ যৌথসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে বিএনপি। এ উপলক্ষে গত ২৮ ডিসেম্বর দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। ৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকা ছাড়া সব জেলায় কালো পতাকা মিছিল করেছে বিএনপিবিএনপি শনিবার (আজ) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশের ঘোষণা দিলেও গতকাল রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার অনুমতি দেয়নি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
শুক্রবার বিকালে সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপির এক প্রস্তুতি সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছি। আমরা এখনও বলছি, যদি সন্ধ্যার মধ্যেও অনুমতি দেন, ইনশা আল্লাহ, আমরা কালকে (শনিবার) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ সফল করতে সক্ষম হবে। আশা করি, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেবে।
তিনি বলেন, আবার এটাও বলছি, যদি সেখানে দিতে অসুবিধা হয়, আমাদের পার্টি অফিসের (নয়া পল্টন) সামনে দেন, সেটাও সফল করতে পারব। আমরা দুটি প্রস্তাবই রাখছি।
সরকারের প্রতি সমাবেশের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই অনুমতি দিয়ে অন্তত আপনারা দেখান যে, আপনারা ‘আন্তরিক’ রয়েছেন। আপনারা কোন দিক দিয়ে, কোন খান দিয়ে ‘আন্তরিক’ আমরা এখন পর্যন্ত টের পাইনি।
গণতন্ত্র বিকাশের স্বার্থে ‘কথা বলার অধিকার’ রক্ষার আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রকে মুক্ত বাতাসে চলতে দিতে হবে। জানালা-দরজা খুলে দিতে হবে। হাজারো মত আসবে, পথ আসবে, সেখান থেকেই তো গণতন্ত্র বিকশিত হবে।
তিনি বলেন, একদিকে বলবেন, গণতন্ত্রের কথা। অন্যদিকে গণতন্ত্রের শেকড় কাটবেন, জনগণের সমস্ত অধিকার কেড়ে নেবেন, তাদের ভোটের অধিকারটুকু কেড়ে নিয়েছেন। কথা বলার অধিকার  তো নেই।
সরকার ‘ভয় পায়’ বলে বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে দিতে চায় না দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনগণের উত্তাল যে ‘তরঙ্গরোষ’ সেটা তারা দেখেছে বলে ভয় পায়।  দেশ ও জনগণের স্বার্থে আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে, আমাদের মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে।
সভায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস বলেন, ৫ জানুয়ারি এদেশের মানুষের জন্য একটি অভিশপ্ত দিন। এদিন এই সরকার বিনা ভোটে ‘সিন্দাবাদের ঘোড়ার’ মতো জাতির ঘাড়ে  চেপে বসল, সে আর ঘাড় থেকে নামে না এখন।
আব্বাস বলেন, এখন নিশ্চিত নই, সরকার আমাদের অনুমতি দেবে কি না। তবে আপনারা প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন, যেই মুহূর্তে ঘোষণা আসবে, সেই মুহূর্তে আমরা এই সরকারকে দেখিয়ে দেব- এক ঘণ্টার নোটিশেও আমরা জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে পারি।
ইসলামী ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে পরিবর্তনের জন্যও সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, একদিকে দুর্নীতি, দুর্নীতিতে কালো টাকার পাহাড়  তৈরি করেছেন। ব্যাংক-ট্যাংক দখল করে নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে আপনারা শেয়ার মার্কেট ধ্বংস করেছেন। ব্যাংকগুলোতে লুট করে সব টাকা নিয়ে চলে গিয়ে বিরাট পাহাড় গড়ে তুলছেন।
তিনি বলেন, আজকেও খবর আছে, ইসলামী ব্যাংক তারা নিয়ে নিয়েছে। এখন কোন দিন দেখব  যে, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের হাতে, দলীয় লোকের আওতায়।
বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় শীর্ষ পর্যায়ের তিন পদে পরিবর্তন হয়। সাবেক সচিব আরাস্তু খানকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের নতুন চেয়ারম্যান করা হয়েছে। পরিবর্তন হয়েছে ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদেও। বেসরকারি এই ব্যাংকটিতে জামায়াতে ইসলামীর বেশ কয়েকজন নেতার সংশ্লিষ্টতা থাকায় ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবির আন্দোলনকারীরা। কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারিও ছিল ব্যাংকটির উপর। ২০১০ সালে এই ব্যাংকে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়।
ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাসের সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সদস্য আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আবুল বাশার বক্তব্য রাখেন।
প্রসঙ্গত: গত ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে। আওয়ামী লীগ নেতারা আগে থেকেই বলে আসছিলেন ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করতে দেয়া হবে না।
৭ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে তখনও নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। কিন্তু সেই অনুমতি দেয়া হয়নি। পরে দুই দিন পর নির্ধারিত স্থানের বদলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দেড় থেকে দুই ঘণ্টার নোটিশে সমাবেশের অনুমতি  দেয় পুলিশ। কিন্তু বিএনপি তখন সেই সমাবেশ করেনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন