স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির সংলাপের আহ্বানের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের। তিনি এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন। সংলাপ শেষ হওয়ার পর সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে আরেক সংলাপের প্রশ্ন আসে না। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিএনপি সন্দেহ বাতিকে ভুগছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত আট বছরে আট মিনিটের জন্যও বিএনপি রাজপথে উত্তাপ সঞ্চার করতে পারেনি। আন্দোলনের ডাক দিয়ে বিএনপি নেতারা ঘরে বসে থাকেন। তাদের যে ৫৯৬ জনের কমিটি। রাজপথে আন্দোলনের সেই সাহস ও যোগ্যতা তাদের নেই।
গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে ঝটিকা অভিযানে গিয়ে বিভিন্ন কাউন্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার বিষয়ে প্রেসিডেন্টের আহ্বানের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখনো বিষয়টি তিনি জানেন না।
বিআরটিএ দালালরা নিয়ন্ত্রণ করছে মন্তব্য করে এতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিআরটিএ পরিদর্শনে গিয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ শুনেন তিনি। এসময় একজন ভুক্তভোগী দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও ডিজিটাল ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছেন না বলে মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন।
জবাবে মন্ত্রী বলেন, আপনাকে ঘুরাচ্ছে। কেন ঘুরাচ্ছে বুঝেন না? টাকার জন্য। টাকা দিলে এতদিনে কাজ হয়ে যেত। এসময় ক্ষুব্ধ মন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কাজটি করে দেয়ার নির্দেশ দেন।
পরে মন্ত্রী টাকা জমা দেয়ার কাউন্টারে গেলে ভুক্তভোগীরা জানান যে, দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও তারা টাকা জমা দিতে পারেন না। কিন্তু দালালরা ঠিকই দ্রুত টাকা জমা দিয়ে চলে যায়।
এসময় কাউন্টারের দায়িত্ব পালনকারী কর্মচারীদের সতর্ক করে দিয়ে সড়ক যোগাযোগমন্ত্রী ভুক্তভোগীদের বলেন, আপনাদের কিছু করার থাকবে না কেন? দালাল আসলে কষে থাপ্পড় দিয়ে দিবেন।
পরে নানা অনিয়মের বিষয়ে বিআরটিএর ঢাকা জোনের ডেপুটি ডাইরেক্টর মাসুদ আলমকে সতর্ক করে দেন মন্ত্রী। তাকে উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন, ৫ বছরেও তুমি ভালো হওনি। এসব কি তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে? এখানে দালালরা ডমিনেট করছে, তোমরা কি করো?
মন্ত্রী পরে বিভিন্ন ধরনের গাড়ির পরীক্ষার বিহাইকেল ইন্সপেকশন সেন্টারে (বিআইসি) যান। এসময় ওবায়দুল কাদের মাসুদ আলমকে বলেন, আরেকটি বিআইসি নষ্ট হলে তোমার চাকরি থাকবে না।
পরে সাংবাদিকদের কাদের বলেন, একসময় বিআরটিএ আর দুর্নীতি সমার্থক ছিল। তবে এখন সেটি কমে এসেছে। আগে যে পরিমাণ অভিযোগ পেতাম, আজ তার কম পেয়েছি।
তিনি বলেন, আজ আমি আকস্মিক আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটি আকস্মিক থাকেনি। আগেই তারা জেনে গেছে। তাই আগে আসলে দালালরা দৌড় দিত, আজ আসার আগেই দৌড়ে পালিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, অভিযোগ কমলেও এখানে দালালের দৌরাত্ম্য কমেনি। আর এর সঙ্গে অফিসাররা জড়িত। এ দালালদের মোকাবেলা করতে হবে।
এসময় মাসুদ আলমকে দেখিয়ে কাদের বলেন, সে এখনো ভালো হয়নি। বাইরে মধুর ব্যবহার থাকলেও ভিতরে ভালো না। তিনি বলেন, এখানে আগে ৫টি বিআইসি ছিল, সেগুলো নষ্ট করা হয়েছে; যেগুলো চেষ্টা করেও উদ্ধার করা যায়নি। এগুলো নষ্ট করা হয়েছিল এ কারণে যে, ২ নাম্বারির সুযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
কাদের বলেন, এখন কোরিয়া থেকে দুটি বিআইসি আনা হয়েছে। এগুলো নিয়ে কোনো চক্রান্ত হচ্ছে কিনা তা দেখতে এসেছি আমি। এগুলো নষ্ট করতে পারলে আবার সুযোগ হবে, আমার কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে।
তিনি বলেন, যারা এগুলোর ক্ষতি করছে তাদের কর্মকা- অপরাধ বলেই বিবেচিত হবে। তাদের সতর্ক করতে এসেছি। আবার যদি বিআইসি নষ্ট হয়, তাহলে কারোর চাকরিই থাকবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন