প্রতিষ্ঠার প্রায় আড়াই দশক পর গত ১৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিকেল ৩টায় এ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ দিন পরে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়াই শিক্ষার্থীরা যেমন খুশি তেমনি নানা অব্যবস্থাপনা আর ভোগান্তির কারণে অনেককে মন খারাপ করে থাকতে দেখা গেছে। ইডেন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী সুমনা, শিমা ও তামান্না বলেন, অনেক ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সমাবর্তনের আয়োজন করা হলেও গ্র্যাজুয়েটদের সার্টিফিকেট ছাড়াই ঘরে ফিরতে হয়েছে। তারা আরও বলেন, সমাবর্তনে অংশগ্রহণে তিন হাজার টাকা এন্ট্রি ফি নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গাউন ফেরত নিতে ভুল না করলেও সার্টিফিকেট ছাড়াই বাসায় ফিরেছেন সবাই। সরকারি কবি নজরুল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী সৈয়দা ছেয়াবিরীন কাওসার সম্পা বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি ভিষণ খুশী। কিছু অব্যবস্থাপনা থাকলেও এটা ছিল আমার জীবনের একটা বড় অর্জন। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, সমাবর্তনে সার্টিফিকেট দিতে হবে এমন নিয়ম নেই। সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে গিয়ে আনতে হবে। এসব অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, কোনো অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত থাকলে অনেক বাধ্যবাধকতা থাকে। এটাকে কেউ ভোগান্তি মনে করলে কিছু করার নেই। তবে সফলভাবে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে ভাষণকালে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার পরিপূরক শিক্ষাক্রম প্রণয়নের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক অর্জনকারীদের অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনারা এখন দেশের উন্নত জনশক্তি এবং আশা করি আপনারা আপনাদের অর্জিত জ্ঞান ও মেধা মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত করবেন। আপনাদের বিবেক দিয়ে কাজ করবেন। অবশ্যই দেশ ও জাতির স্বার্থ রক্ষার্থে অগ্রাধিকার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখবেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। তাই কষ্টার্জিত গণতন্ত্র যাতে কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয় সে জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে। রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে শিক্ষার মান বাড়ানো পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সেশনজট মুক্ত রাখা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মক- সম্প্রসারণে পদক্ষপের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষা কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের নির্দেশ দেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবারের মতো এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ বক্তৃতা করেন।
ষ জাকারিয়া হাসান
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন