মঈন উদ্দিন আহমেদ : শত বর্ষের দ্বারপ্রান্তে ফরিদপুর জেলার শ্রেষ্ঠ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজেন্দ্র কলেজে। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে অবিভক্ত ভারতের কলকাতা, চব্বিশ পরগনা, ঢাকা ও ফরিদপুরের মতো এত অধিকসংখ্যক উচ্চ বিদ্যালয় আর কোনো জেলায় ছিল না। তার মধ্যে ফরিদপুর জেলাতে প্রায় পঁয়ত্রিশটি উচ্চ বিদ্যালয় ছিল। সে সকল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ ফরিদপুরে পেত না। ফলে তারা কলকাতা যেয়ে কলেজে ভর্তি হতে বাধ্য হতো। ফরিদপুরের সাথে কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকলেও সবার পক্ষে সেখানে যেয়ে লেখাপড়া করা সম্ভব হতো না। তাছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষ পূর্ব বাংলার ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির বিষয়টি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতো। আবার শিক্ষা লাভে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ফরিদপুরে একটি কলেজ স্থাপনের জরুরি আবশ্যকতা দেখা দেয়। ফরিদপুরের শিক্ষিত সচেতন মহল বিষয়টিকে অতীব গুরুত্বের সাথে নেন। তারা এ ব্যাপারে তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টরের সাথে আলাপ-আলোচান করেন।
ফরিদপুরে একটি কলেজ স্থাপনের দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে আসেন ফরিদপুর শহর গড়ার কারিগর, তৎকালীন আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ জাতীয় কংগ্রেস নেতা বাবু অম্বিকাচরণ মজুমদার। ১৯১৫ খ্রি. ২১ নভেম্বর তিনি শহরের বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি সভা আহ্বান করেন। সেই সভায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কলেজ স্থাপনের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সভাপতি মনোনীত হন অম্বিকাচরণ মজুমদার।
সে সময়ে শহরের পূর্ব-দক্ষিণ দিকে একটি খেলার মাঠ ছিল। সে স্থানে ১৮৮০ খ্রি. থেকে প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত হতো যার সূচনাকারী ও সেক্রেটারি ছিলেন অম্বিকা মজুমদার নিজেই। মেলার মাঠের দক্ষিণ পাশে ছিল মেলা ভবন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৮৮৯ সালে অম্বিকাচরণ মজুমদার যখন ফরিদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান তখন পৌরসভা মঞ্জুরিকৃত মেলার মাঠে মেলা ভবন নির্মাণ শুরু করে শেষ করতে ব্যর্থ হন। অবশেষে ১৮৯৯ খ্রি. পাঠাগার স্থাপনের লক্ষ্যে ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হলে পৌরসভা মেলামাঠসহ মেলা ভবনের মালিকানা লাভ করে। উক্ত মেলা ভবনকে কলেজ ভবনে রূপান্তরসহ মেলার মাঠে কলেজ নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করে উপরোক্ত কমিটি একটি পরিকল্পনা প্রতিবেদন তৈরি করে। কলেজ নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহের জন্য ৮০ হাজার টাকার তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অম্বিকাচরণের নেতৃত্বেই উক্ত তহবিল সংগ্রহের কাজে নামা হয়। সে সময়ে উপরোক্ত পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করা ছিল একটি দুরূহ বিষয়। অম্বিকাচরণ মজুমদার দৃপ্ত আশা বুকে নিয়ে মূল বিষয়টি সদরপুর থানার বাইশ রশির তরুণ জমিদার রমেশ চন্দ্র রায় চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করেন। এছাড়া আরও অনেকের সাথেই আর্থিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। ১৯১৬ সালের ১৭ জুলাই জমিদার রমেশ চন্দ্র রায় চৌধুরী তার প্রয়াত পিতা রাজেন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরীর নামে প্রস্তাবিত কলেজের নামকরণের শর্তে ৫০ হাজার টাকা প্রদানের কথা এক পত্রের মাধ্যমে কমিটিকে অবহিত করেন। কলেজ কমিটি শর্তটি মেনে নেন। বাকি ৩০ হাজার টাকা প্রদান করেন মহারাজ মনীন্দ্রচন্দ্র নন্দী। এভাবেই অম্বিকাচরণ মজুমদার কলেজের অপরিহার্য শর্ত হিসেবে ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠার জন্য নির্ধারিত অর্থও সংগ্রহ করেন।
১৯১৬ সালের ১৩ আগস্ট ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট রাজেন্দ্র কলেজ সোসাইটি পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করে। অম্বিকাচরণ মেলার ১৩ একর জমির মধ্যে ৫.২০ একর জমি মঞ্জুর করার জন্য ১৯১৬ খ্রি. ২৮ আগস্ট ফরিদপুর জেলা কালেক্টর ও ঢাকা বিভাগের কমিশনারের সুপারিশসহ সরকারের কাছে আবেদন করেন। পৌরসভা থেকে বিনামূল্যে মেলা ভবনটি পাওয়ার জন্যও তিনি প্রচেষ্টা চালান। ১৩ অক্টোবর কমিটির এক সভায় রমেশচন্দ্র রায় চৌধুরী প্রেরিত শর্ত যা ইতোমধ্যে কমিটি মেনে নিয়েছিলেন তা সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয়। ২৫ অক্টোবর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে কলেজের অধিভুক্তির জন্য আবেদন জানান। ১৯১৬ সালে জনশিক্ষা পরিচালক ফরিদপুর শহরে এলে কলেজের অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে ছাত্রাবাস নির্মাণের কথা কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানান। কলকাতা সিন্ডিকেটের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শক মি জেসি ঘোষ এবং ডব্লিউসি ওয়ার্ডস ওয়ার্থ ১৯১৭-এর ৮ মার্চ পুনরায় ফরিদপুরে আসেন এবং পরিদর্শন শেষে ৯ মার্চ প্রতিবেদন পেশ করেন। প্রতিবেদনে কলেজ পরিকল্পনার কিছু ত্রুটি সংশোধনপূর্বক কলেজ সোসাইটিকে পুনরায় আবেদন করতে পরামর্শ দেয়া হয়।
পৌরসভার কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে ভবনটি পেয়ে কলেজ সোসাইটি যখন কলেজ নির্মাণে আশান্বিত হন তখন ৯ এপ্রিল ১৯১৭ তৎকালীন বাংলা সরকারের সচিব খ.ঝ.ঝ ঙ’গধষষবু প্রেরিত একটি চিঠিতে কলেজকে মেলার মাঠের খাসজমি মঞ্জুরের অস্বীকৃতির কথা জানানো হয়। ফরিদপুরের অবিসংবাদিত নেতা ও সর্ব ভারতীয় জাতীয় সংগ্রেসের নেতা হওয়া সত্ত্বেও মেলাভবন ও মেলামাঠ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি ফরিদপুরে কলেজ স্থাপনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। ফলে কলেজ প্রতিষ্ঠা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। অম্বিকাচরণ আশায় বুক বেঁধে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। এই সময়ে তার পাশে এসে দাঁড়ান ফরিদপুরের তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টর গৎ. ঔ.ঈ. ওঁহষড়ঢ় (২২-০৪-১৯১৫-১০-০৩-১৯১৯) ১৯১৭-এর ৩০ জুলাই অম্বিকাচরণ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টরের মাধ্যমে মেলার মাঠের জমির জন্য আবেদন জানান। ২২ আগস্ট ২০১৭ বাংলার গভর্নর ঘোষণা করেন যে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যদি কলেজ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা অনুমোদন দেয় তবে সরকার জমি প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করবে।
এরপর অম্বিকা বাবু দার্জিলিংয়ে গভর্নরের কাউন্সিল সদস্য, শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত স্যার এসপি সিন্হার সহায়তা কামনা করেন। ১৫ সেপ্টেম্বর দার্জিলিং থেকে খ.ঝ.ঝ. ঙ’গধষষবু জানান, সরকার কলেজকে জমি প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করবে, যদি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন করে এবং সেই সাথে কিছু শর্ত আরোপ করে। অবশেষে পরিকল্পনা পুনবিন্যস্ত করে ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরে ১৯১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে অধিভুক্তির জন্য নতুন আবেদন পেশ করা হয়। ১৯১৭-এর ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট অধিবেশনে কলেজ অধিভুক্তির জন্য সিনেট সুপারিশ করবেন, এই মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিনেটের কাছে প্রস্তাব পেশ করার আগে জমি প্রদান সংক্রান্ত সরকারি আদেশ পেশ করতে হবে।
১৯১৮-এর ১২ মার্চ বাংলার সরকার এক পত্রে কলেজ সোসাইটির প্রস্তাব গ্রহণ করেন ও ৫.৫৫ একর জমি প্রদানের সম্মতির কথা জানান এবং ভারত সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন স্বাপেক্ষে কলেজ ভবন নির্মাণের অনুমতি দেন। জেলা কালেক্টর ২৮ মার্চ ১৯১৮ তারিখে খাস-মহল অফিসারের মাধ্যমে খেলার মাঠের ৫.৫০ একর জমি রাজেন্দ্র কলেজ সোসাইটিকে হস্তান্তর করেন।
উপরোক্ত প্রক্রিয়া অতিক্রান্ত করে ১৯১৮-এর ৮ এপ্রিল জেলা কালেক্টর মি. জেসি ডানলপ কলেজ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে জেসি ডানলপ তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ‘এই কলেজের ইতিহাস হচ্ছে এক ব্যক্তির একক প্রচেষ্টার ইতিহাস। আপনাদের সভাপতি যার পরিশ্রমের সুফল আজ আমরা উদযাপন করছি, তিনি মোটেও আজ আর একজন যুবক নন। প্রিয় পুত্রের মৃত্যুশোক বুকে নিয়েও তিনি কলেজ প্রতিষ্ঠার এই বিপুল চাপ সহ্য করেছেন এবং অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।’
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দুইদিন পর ১০ এপ্রিল ১৯১৮ বাংলা সরকারের কাছ থেকে একটি চিঠি আসে। তাতে সচিব জানান, ভারত সরকার নির্দেশ দিয়েছে। অধিভুক্তির আদেশ ইস্যু না করা পর্যন্ত কলেজ সোসাইটিকে জমি হস্তান্তর করা যাবে না এবং সকল নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে হবে। এই পরিস্থিতিতে শোকাতুর ও বয়সের ভারে ন্যুজ অম্বিকা বাবুকে আবার ঘুরে দাঁড়াতে হয়। তিনি দার্জিলিংয়ে স্যার সিনহার সাথে আলাপ করে দিল্লিতে যান। সেখানে অনেক দেনদরবার করে অবশেষে ১৯১৮-এর ১৩ মে কলেজ অধিভুক্তির বিষয়ে ভারত সরকারের অনুমতি আদায় করেন। ২৫ মে ১৯১৮ ভারত সরকার সিমলা থেকে রাজেন্দ্র কলেজকে নামমাত্র বার্ষিক এক টাকা খাজনার বিনিময়ে ৫.৫০ একর জমি মঞ্জুর করে।
১৯১৫-১৯২২ পর্যন্ত অর্থাৎ আমৃত্যু অম্বিকাচরণ মজুমদার তার অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়া প্রাণপ্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজেন্দ্র কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯১৮-এর ১ জুন কলেজের অধ্যক্ষ পদে কামাখ্যানাথ মিত্র এমএকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এ সময় অধ্যক্ষ ও অধ্যাপকদের বেতন নির্ধারণ করা হয়। ১ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে কলেজ চালু করা হয়। ১১ জুন, ১৯১৮ কলেজ ভবন নির্মাণের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। ১০ জুলাই মাত্র ২৯ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে ছাত্রাবাস ভবনে প্রথম ক্লাস শুরু হয়। এই সময়ে ১২ জন অধ্যাপক নিয়োগ দেয়া হয়।
১৯৬২-১৯৬৫ পর্যন্ত তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের সময়ে কলেজকে সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে কলেজের মূল ভবন থেকে প্রায় ৪ কিমি পূর্ব-দক্ষিণে জেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের বায়তুল আমান নামক স্থানে ৩টি বহুতলবিশিষ্ট স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এই স্থানে পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে কলেজের ক্লাস স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ স্বাধীনতা প্রাপ্তির প্রায় দেড় দশক পড়ে ১৯৮৪ থেকে অনার্স ক্লাসসমূহ বায়তুল আমান ভবনসমূহে স্থানান্তর করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের উন্নীত হওয়ার পর মাস্টার্স ক্লাসসমূহও উক্ত স্থানে চালু করা হয়।
১৯৭৩-৭৪ থেকে কলেজের শিক্ষাক্রমকে উন্নীত করা হয়। এই সময় থেকে পর্যায়ক্রমে বাংলা, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নবিদ্যা মোট ৬টি বিষয়ে অনার্স ক্লাস চালু হয়। অনার্স ও সাবসিডিয়ারি ক্লাসসমূহ বায়তুল আমান শাখা এবং মূল ভবনে একাদশ, দ্বাদশ ও স্নাতক শ্রেণিসহ উপাধ্যক্ষ, অধ্যক্ষ ও কলেজের বিভিন্ন অফিসসমূহ বহাল রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে ২০টি বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করার সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয় কলেজটির আয়তন প্রায় ৫৪ একর। ১৯৭ জন শিক্ষক ও কর্মচারী ১৯০ জন। দু’টি কলেজ লাইব্রেরিতে প্রায় ৩৫ হাজার পুস্তক সংরক্ষিত রয়েছে। ৫টি ছাত্রাবাস ও ৩টি ছাত্রীনিবাস আছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। কলেজ প্রতিষ্ঠাকাল ০১-০৬-১৯১৮ থেকে অর্থাৎ অধ্যক্ষ কামাখ্যানাথ মিত্র থেকে কালানুক্রমে বর্তমান (২০১৬) পর্যন্ত ৩৯ জন অধ্যক্ষ এই কলেজের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রায় শত বছর যাবৎ সুনামের সাথে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে জেলার শ্রেষ্ঠ ও বৃহত্তম এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন