রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাঙ্গন

সমুদ্র জলে অবগাহন

| প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পত্রবিহীন গাছপালার বিচ্ছেদের নিঃসঙ্গতা দূর করে হলদেঘেরা শর্ষে মাঠ। তরুপাতায় জমে থাকা শিশিরবিন্দু মনকে নিয়ে চলে দূর দিগন্তে। আর তাইতো আমরা সিদ্ধান্ত নিই নীল সমুদ্রের গর্জন শুনতে যাব। এই সমুদ্র দর্শনে আমরা বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বিটেক) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। অনেক প্রতীক্ষার পর সাগর ও পাহাড়ের সঙ্গে নীল আকাশের মিতালি দেখার সেই কাঙ্ক্ষিত দিনটি এলো। ১৩ জানুয়ারি শেষ বিকেলে আনন্দযাত্রার শুরুতেই টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্টের দুই শিক্ষক  সেলিম রেজা ও সাইফুল ইসলাম সঙ্গী হওয়ায় আনন্দের মাত্রাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। সেলফিবাজ বন্ধু শাহিনুর আর প্রমিজের সেলফিসেশন পর্বের পরপরই কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দিই। বহু পথপ্রান্তর পেরিয়ে কক্সবাজার পৌঁছতে সকাল ৮টা। এর আগে রাতভর চলন্ত বাসে চলে সানি, নন্দ, খুরশেদ ও আক্কাসের পরিবেশনায় উন্মাদনা! হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সুগন্ধা সমুদ্রসৈকতে নেমে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম সবাই। সৈকতে সাদা নরম বালু, সামনে বিস্তৃত নীল সমুদ্র। তাতে রঙ-বেরঙের ছোট ছোট নৌকা। পেছনে সবুজের চাদর বিছানো পাহাড়। এমন পরিবেশে আত্মহারা না হয়ে উপায় আছে! বিকেলে চান্দের গাড়িতে চেপে হিমছড়ি ইকোপার্ক ও ইনানী সি বিচ ঘুরে এলাম। পরদিন ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, আদিনাথ মন্দির ও সোনা মন্দির দেখতে গেলাম মহেশখালীতে। বিকেলে রামু উপজেলার বৌদ্ধবিহার পরিভ্রমণ শেষে হোটেলে ফেরার পথে সেলিম স্যারের কড়া হুঁশিয়ারি রাতে ঘুম হোক বা না হোক ভোর ৫টায়ই  টেকনাফ অভিমুখে বাস ছাড়বে। তাই চোখে রাজ্যের ঘুম নিয়ে যাত্রা শুরু করে টেকনাফের দমদমিয়া জাহাজ ঘাটে পৌঁছতে বেলা ৯টা। টিকিট কেটে দীর্ঘ লাইন পেরিয়ে জাহাজে উঠতেই নাফ নদীর সৌন্দর্যে বিমোহিত সবাই। চারদিকে নীল রঙের পানি আর আকাশে নীলের যেন একাকার হয়ে গেছে! সেন্ট মার্টিন তথা নারিকেল জিঞ্জিরার নারিকেল খাওয়া, সমুদ্রের পানিতে কিছুক্ষণ ঝাঁপা-ঝাঁপি, ফুটবল খেলা শেষ করে দুপুরের খাবার খেতে বিকেল ৪টা। পরদিন সকালের নাস্তা সেরে বেরিয়ে পড়লাম ছেড়াদ্বীপের উদ্দেশে। সেখানে গিয়ে অনিন্দ্য সুন্দর এক পৃথিবীকে আবিষ্কার করলাম। সামনে দাড়িয়ে শুধু দিগন্ত বিস্তর পানি আর পানি যেন আকাশের নীল দিগন্ত মিশে গেছে সমুদ্রের মধ্যে। এরই মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে একাধিক মাছ ধরার নৌকা। বিভিন্ন দিকে ঘুরে ঘুরে অবশেষে আবারও রওনা হওয়া রিসোর্টের দিকে। তীরের দুই পাশের নারিকেল গাছের ফাঁকে ফাঁকে সাগরের নীলের এক অনুপম সৌন্দর্য। এবার ফিরে আসার গল্প। সবার চোখেমুখে কেমন যেন একরাশ বিরক্তি/বিষন্নতা ও মনমরা ভাব। চাইলেই কি মন এই উপভোগ্য জায়গা থেকে আসতে চায় ! যে সমুদ্র, পাহাড়, নীল পানি, মাছ, প্রাণী এতদিন টেলিভিশনে উপভোগ করেছি আজ তারা আরও সজীব নিজের চোখে। যা স্মৃতিতে সারাজীবন অমলিন হয়ে থাকবে।
ষ রেদোয়ান হোসেন

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন