শত চেষ্টা করলেও আর ফিরে পাব না ক্যাম্পাস জীবনের সেই মুর্হূতগুলো। সব কিছু কেন জানি স্মৃতি হয়ে যাচ্ছে। ক্যাম্পাসকে খুব মিস করব বন্ধু। তার চেয়ে বেশি মিস করব তোদের। বিদায়ের কথা মনে পড়তেই শেষ কয়েকটা ক্লাসে আনমনা হয়ে যেতাম। এমনই অনুভূতির কথা জানাতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগের ২৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নিয়ামুল হাসান।
২৩ তম ব্যাচের বিদায়ী শিক্ষার্থী শাকিলা মনি জানান, বিদায় শব্দটা তিন অক্ষরের হলেও এটার বেদনা কতটুকু তা এখন বুঝতে পারছি। ক্যাম্পাস জীবনে ছুটির ঘণ্টাটা আজ মনে হল একটু তাড়াতাড়িই বেজে গেল। কিন্তু অন্যদিনের সাথে আজকের ছুটির ঘণ্টার মধ্যে পার্থক্য একটাই যে আজকের পর থেকে ক্লাস করার জন্য ক্যাম্পাসে যেতে হবে না। কথাটা ভাবতেই কেন জানি মনটা খারাপ হয়ে গেল।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগের মাস্টার্সের (২৩ তম ব্যাচ) শিক্ষা সমাপনি অনুষ্ঠান র্যামডে। মাস্টার্সের পরীক্ষা বাদে সকল প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম শেষ হওয়ায় ক্যাম্পাস জীবনের দিনগুলোকে স্মরণীয় করে রাখতে র্যামডে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তারা। নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিনভর অনুষ্ঠানটি পালন করে বিদায়ী শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান উপলক্ষে সকাল ৯ টা থেকে আইন বিভাগের ২৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা একে একে জড়ো হতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মর্শারফ হোসেন একাডেমিক ভবনের সামনে। তারপর সবার হাতে তুলে দেয়া হয় হলুদ রঙের টি-শার্ট। স্মৃতিপটে বন্ধুত্বের বন্ধনকে স্মরণীয় করে রাখতে একজন অন্যজনের টি-শার্টে নিজের স্বাক্ষর ও অব্যক্ত কথামালা লিখে দেয়। আবার কেউ কেউ নানা জ্ঞানগর্ভ কথা বার্তা, ভালবাসার আবেগ অনুভূতির কথা, প্রেম নিবেদনসহ হাবিযাবি লিখে টি-শার্ট ভর্তি করে দেয়। মেয়েরা লাল শাড়ি আর ছেলেরা হলুদ টি-শার্ট পরে মেতে উঠে রং মাখামাখিতে, কেউ রং মাখতে বাদ যায়নি এই রং উৎসবে। এরপর সকাল সাড়ে ১০ টায় শুরু হয় র্যাম র্যালী। র্যালীটি স্বাধীনতার স্মৃতিস্বারক মুক্তবাংলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট, শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধে পৌঁছলে সবাই নিজের মতো করে স্মৃতিগুলোকে ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করতে ভুলে যায়নি। কেউ কেউ স্পেশালভাবে বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে পৃথক পৃথকভাবে ফটোসেশন করেছে।
র্যালীটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন মফিজ লেকে এসে শেষ হয়। এসময় বিদায়ী শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনের নানা দিক ও পাওয়া না পাওয়ার বিষয় নিয়ে হাসি-কান্নার স্মৃতিচারণ করেন। শিক্ষার্থীদের মাঝে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এরপর শুরু হয় লাঞ্চ বিরতি। লাঞ্চ শেষে বিকাল তিনটা থেকে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি, মূকাভিনয়, অভিব্যক্তি প্রকাশসহ গল্প থেকে শুরু করে কোন কিছু বাদ ছিল না। অভিমান, অভিযোগ আছে, থাকবে, পাশাপাশি বন্ধুত্বটাও আছে থাকবে। ১৬ ফেব্রুয়ারি এলএলএম পরীক্ষা শুরু, পরীক্ষা শেষে কে কোথায় থাকবো কেউ জানি না, শুধু বলি অনেক ভাল থাকিস তোরা।”
ষ ইকবাল হোসাইন রুদ্র
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন