চাদর মুড়ো দিয়ে আসে শীত। শিশিরের কণাগুলো যেন ঘাসে মিশে হীরার প্রতিরূপে সেজে উঠে। শীতের তিব্রতা কমে আসতে শুরু করে কালের বিবর্তনে। শীতের বিদায়ীকালে প্রকৃতি যেন নতুনরূপে সেজে উঠার তাড়া শুরু করে। বৃক্ষের পাতাগুলোও ঝরে জায়গা করে দিচ্ছে নতুন কুড়ির জন্য। আর ঝরে যাওয়া পাতাগুলোর মরমর আওয়াজ শ্রুতি মধুর হয়ে উঠে। মৌ মৌ সুভাস ভেসে বেড়ায় চারদিক জানিয়ে দেয় বসন্তের আগমনী বার্তা। পলাশ, শিমুল গাছ তলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফুলের মেলা।
মৌমাছির গুঞ্জরণ আর ছুটে বেড়ানো ফুলে ফুলে, পাখির কলরবে প্রকৃতিও গান গায়। প্রকৃতি যেন অপেক্ষাই করছিল এই দিনটির জন্যে। ললনার হলদে শাড়ির সাঁজ প্রকৃতির রঙে মিলে যায়। তেমনি যেন বসন্তের রঙে রঙিন গণবিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসে লেগেছে বসন্তের লীলাময় আগুন। বৃক্ষ সবুজের সমারোহে সেজে ওঠেছে। হলুদ শাড়ি, হলুদ পাঞ্জাবি পরে শিক্ষার্থীদের আড্ডা, গল্পগুলো যেন ক্যাম্পাসের পরিবেশের চারদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে বাসন্তী রঙের উৎসবের আবির।
বসন্তের আবির ছড়িয়ে প্রাণে আড্ডায় গণবিশ্ববিদ্যালয়ের বাদাম তলায় বসেছে ফার্মেসি বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তন্নি, তামান্না, সেতু, সজল, রূপকদের গল্পমেলা। ক্যাম্পাসে বসন্তের সাঁজ অপরূপ প্রকৃতির দেখে আড্ডায় গুনগুন করে গান শুরু করেন তন্নি ,“আহা, আজি এ বসন্তে এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়, সখীর হৃদয় কুসুম-কোমল কার অনাদরে আজি ঝরে যায়।”
গানের সাথে কোথা থেকে যেন সুর মেলাচ্ছে বসন্তদূত কোকিল। তা শুনে সেতু বলে উঠল, ককিলের কুহু ডাক শুনেই যেন মন হারিয়ে যায় প্রকৃতির মাঝে। পলাশ ফুলগুলো ঝরে পড়ে বিছিয়ে আছে মেঠোপথে। দেখে মনে হয় প্রকৃতি যেন ধারণ করেছে এক অপরূপ স্বর্গধারায়।
আড্ডার মাঝে চুপ হয়ে কল্পনার জগতে হারিয়ে কি যেন ভাবছে রূপক, বসন্তের আগমনী বার্তাই যেন অন্যরকম আনন্দের ¯্রােত বয়ে আনে। ভালোবাসার ক্যাম্পাসের প্রকৃতিও যেন পরেছে বসন্ত মুকুট, সেজেছে এক নতুন সাঁজে আর অপূর্বরূপে রাঙিয়ে তুলেছে ক্যাম্পাস।
ফুল ফোটার অপেক্ষায় না থেকেই বসন্ত চলে আসে তার নিয়মে। প্রাণে দোলা দিয়ে প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলে স্বর্গরূপে। ফুলে ফুলে ছড়িয়ে দেয় সুভাস, আর অলংকার হয়ে অপরূপ সাঁজে সাজিয়ে তোলে বাংলা মাকে।
ষ শাহীনুর আলম ছবি : তন্ময়
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন