শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

জয়পুরহাটে আলুর বাম্পার ফলন, দামও ভালো

প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জয়পুরহাট থেকে মুহাম্মদ আবু মুসা ঃ চলতি উৎপাদন মৌসুমে খাদ্যে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিপূর্বে এত বেশি ফলন আর কখনো হয়নি এ জেলায়। আবহাওয়া বৈরী আচরণ ও রোগ-বালাইয়ের তেমন আক্রমণ না হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলনের পাশাপাশি বাজারে আলুর দাম আগের বছরের তুলনায় ভালো। ফলে কৃষকের বিগত দিনে লোকসান পুষিয়ে এবার লাভের মুখ দেখছে।
মৌসুমের শুরুতে বীজের দাম ছিল কম। সংকট না থাকায় সার ছিল কৃষকের নাগালের মধ্যে, দামও ছিল কম। গত বছর ফলন ভালো না হওয়ায় বছরজুড়ে আলুর দাম ছিল বেশ চড়া। তাই অধিক লাভের আশায় জেলার কৃষকরা ব্যাপকভাবে আলু চাষে ঝুঁকে পড়েন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, এবার জেলার ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধাারণ করা হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর, পাঁচবিবি উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর, আক্কেলপুর উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর, কালাই উপজেলায় ৯ হাজার ৪০ হেক্টর ও ক্ষেতলাল উপজেলায় ৯ হাজার হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আলু উৎপাদন হচ্ছে।
গত উৎপাদন মৌসুমে আবহাওয়ার প্রতিকূলতায় পাতা পচা রোগে আলুর ফলনে ধস নামে। চলতি উৎপাদন মৌসুমে আবহাওয়া ভালো ছিল। তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।  আলু উৎপাদনের জন্য যেমন আবহাওয়া প্রয়োজন মৌসুমজুড়ে আবহাওয়া ঠিক সে রকমই ছিল। তেমন কোনো রোগবালাই আলু গাছ স্পর্শ করতে পারেনি। গাছও যেমন হয়েছে চমৎকার তেমনি ফলন খুবই ভালো। সদর উপজেলার বম্বু গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ভালো আবহাওয়া থাকাটা আল্লাহরই মেহেরবানী। খারাপ হলে আমাদের করার কিছুই থাকে না। এ জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা দরকার বলে তিনি মনে করেন ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষক মোস্তাক জানান, প্রতি বিঘা জমিতে হাইব্রিড গ্যানোলা ও ম্যানোলা জাতের আলু ১১০ থেকে ১২০ মণ, কার্ডিলাল, ডায়মন্ড, রুমানা, বট পাগড়ী, লেডিস রোজেটা জাতের আলু ৭০-৮০ মণ, পাহাড়ি ৬০-৭০ মণ, প্রবিন্ড ৬৫-৭০ মণ এবং দেশি জাতের আলু ৬০-৬৫ মণ উৎপাদন হয়েছে। বিঘাপ্রতি এবার আলু উৎপাদন খরচ পড়েছে ৯-১০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারে আলুর মূল্য মোটামুটি ভালো। প্রতি মণ আলু পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে। খুচরা বাজারে তা ৪৫০-৪৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ক্ষেতলালের আলু চাষি শামসুল ইসলাম জানান, সার ও বীজসহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতি বিঘা জমিতে আলু লাগাতে খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার দরে বিক্রি করলেও কৃষক ১০-১২ হাজার টাকা বিঘাপ্রতি লাভ করতে পারবেন। জেলা সদরের বম্বু গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, আবহাওয়া ভালো ছিল বলেই বাম্পার ফলন হয়েছে। এটা আল্লাহরই মেহেরবানী। খারাপ হলে আমাদের করার কিছুই ছিল না। এ জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা দরকার। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক এ জেড সাব্বির ইবনে জাহান বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুতে কোনো রাগবালাই হয়নি। ফলে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে, কৃষক আলুতে বেশ ভালো দাম পাচ্ছেন। এবার আলুর যা ফলন হয়েছে তাতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন