বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাঙ্গন

নারীদের জন্য শিক্ষাঙ্গন হোক নিরাপদ

| প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই নারী। তাই নারী-পুরুষ সবার সম্মিলিত চেষ্টাই পারে আমাদের দেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে। বাংলাদেশের বর্তমান অগ্রগতির পিছনে বড় যে শক্তিটি কাজ করছে তা হলো আমাদের নারী শক্তি। দেশের নারীর এক বিশাল অংশ আজ গার্মেন্ট শিল্পের সাথে জড়িত। যা গার্মেন্ট সেক্টর তথা আমাদের দেশকে করেছে সমৃদ্ধ। শিক্ষা, চিকিৎসা, বিজ্ঞান, গবেষণায়ও কিন্তু আজ নারীরা অনেক এগিয়ে গেছে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক-মনস্তাত্তি¡ক বৈষম্য ও নিরাপত্তাহীনতা সত্তে¡ও অর্থনৈতিক কর্মকাÐে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। তাই নারীদের দাবি যে এখন সমমর্যাদার সেকথা এখন সবার মুখেই। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। তাই নারী দিবস উপলক্ষে শিক্ষাঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা। সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়েও বন্ধুরা মিলে ক্যান্টিনে, খেলার মাঠে, ঝালমুড়ির কিংবা ফুসকা সব আড্ডায় প্রাণ যেন “নারী দিবস”। তাই ক্লাসের ফাঁকে অফ প্রিয়ডে আড্ডা আর গল্পে নারী জাগরণ, লিঙ্গ বৈষম্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা থেকে নারীদের তথা সমাজকে মুক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয় জানাচ্ছে এই তরুণ শিক্ষার্থীরা।
এই বিষয়ে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী জাহানারা আক্তার বলেন, “সমাজ ব্যবস্থায় নারীকে আজ শুধু পণ্য নয় ‘পণ্যের পণ্য’ করা হয়েছে। এই অবস্থান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদেরকে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা তথা সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এবং সমাজের প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে”। মুন্নি বলেন, শিক্ষাঙ্গনে নারীরা আজও নিরাপদ নয়। তাই তার চাওয়া নারীদের জন্য শিক্ষাঙ্গন হোক নিরাপদ।
জাহানারার সুরে সুর মিলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারহানা তারানুম বলেন, “মূলত ১৯৭৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হয় বিশ্বের প্রায় সব দেশেই। বাংলাদেশেও আমরা প্রতিবছর দিবসটি উদযাপন করি। নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন চলে, সংবাদমাধ্যমে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়। কিন্তু উন্নত বিশ্ব ও বাংলাদেশের নারীর অবস্থার মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে। এ দেশে নারীসমাজ আজও সব ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। তাই এই পার্থক্য দূর করতে সমাজের পাশাপাশি নারীদেরকেও তাদের দাবি আদায়ে সচেতন হতে হবে এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে”।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজা আক্তারের মতে, “লিঙ্গ সমতা সূচকে এ দেশের নারীদের অবস্থান এখন পার্শ্ববর্তী ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নারীদের তুলনায় উন্নত হয়েছে। কিন্তু অধিকারের সম্পূর্ণ সমতা আসেনি। চাকরির ক্ষেত্রে নারী সমান সুযোগ থেকে বঞ্চিত; নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীদের মধ্যে নারী-পুরুষের চেয়ে কম মজুরি পান। যা একজন নারী হিসেবে আমি কখনই মেনে নিতে পারি না। সমাজের এসব অসঙ্গতি দূর করতে হলে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে”।
তবে নারীর সম-অধিকারের প্রশ্নটি কেবল নারীসমাজে অগ্রগতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। বস্তুত, এতে রয়েছে নারী-পুরুষের মিলিত বিশ্বে সর্বজনীন প্রগতির প্রতিশ্রæতি। আমাদের সমাজে নারী-পুরুষ সমতা অর্জনের পথে পশ্চাৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গি এক বিরাট বাধা। শিক্ষায় নারীর আরও অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বক্ষেত্রে সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গিতে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে বলে বিশ্বাস করেন সবাই।
ষ মেহেদী তারেক

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন