ডিলান হাসান : যে শাকিব এক সময় মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে আমাদের দেশে কলকাতার সিনেমা চালানোর বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলেন, সেই শাকিব এখন যেন কলকাতার হয়ে গেছেন। এখন নিজ দেশের সিনেমার চেয়ে কলকাতার সিনেমাই তার কাছে আরাধ্য হয়ে উঠেছে। যৌথ প্রযোজনার নামে কলকাতার সিনেমার বড় পৃষ্ঠপোষক হয়ে উঠেছেন। এখন তিনি কলকাতা বলতেই যেন অজ্ঞান হয়ে যান। কলকাতার সিনেমার প্রতি তার প্রীতি এতটাই প্রবল যে একের পর এক যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় অভিনয় করছেন। সম্প্রতি কলকাতার ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের চারটি সিনেমায় তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। শাকিব জানিয়েছেন, চুক্তিবদ্ধ চারটি সিনেমা আগামী চার ঈদকে টার্গেট করে নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সবগুলোর প্রি-প্রডাকশনের কাজ চলছে। এসব সিনেমায় শাকিবের বিপরীতে থাকবেন কলকাতার নায়িকারা। এরমধ্যে রয়েছেন কোয়েল মল্লিক, মিমি, সায়ন্তিকা প্রমুখ। সিনেমাগুলো নির্মাণ করবেন কলকাতার নির্মাতারা। এরমধ্যে ১৬ মার্চ থেকে রাজিব বিশ্বাসের পরিচালনাধীন নতুন সিনেমার শুটিংয়ে কলকাতা যাচ্ছেন শাকিব। তারপর একের পর এক বাকি সিনেমাগুলোর কাজ করবেন। শাকিব বলেছেন, আমি শুধু অভিনয় করব না, বাংলাদেশের হয়ে যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রে প্রতিনিধিত্ব করব। দেশের স্বার্থ রক্ষা করব। একের পর এক যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় অভিনয় করে তিনি কীভাবে দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করবেন, তাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। যে নায়ক নিজের দেশের সিনেমা দিয়ে নিজেদের চলচ্চিত্রের উন্নয়ন ঘটাতে পারছেন না, সে নায়ক যৌথ প্রযোজনার সিনেমা দিয়ে দেশের স্বার্থ উদ্ধার করবেনÑ এটা কি বিশ্বাস করা যায়? যৌথ প্রযোজনার সিনেমা দিয়ে কোন কালে আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের স্বার্থ রক্ষা হয়েছিলÑ এমন নজির খুঁজেও পাওয়া যাবে না। আসল কথা হচ্ছে, শাকিব কাজ করছেন তার নিজের স্বার্থের জন্য। নিজের ক্যারিয়ার বাঁচাতে এখন যৌথ প্রযোজনার দিকে ঝুঁকেছেন। কলকাতার প্রযোজকরাও ভাল করেই তার এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশে তাদের সিনেমার বাজার সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। অবশ্য যে নায়কের চাহিদা এখন আমাদের দেশের দর্শকের কাছে শূন্যের পর্যায়ে নেমে এসেছে, সে নায়ককে দিয়ে যৌথ প্রযোজনার নামে ভারতীয় সিনেমা আমদানি মোটেও সুবিধাজনক হবে না বলে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। কারণ ইতোমধ্যে কলকাতার সিনেমা তো বটেই যৌথ প্রযোজনার সিনেমাও দর্শক বর্জন করেছে। এখন শাকিবের একা অভিনীত যৌথ প্রযোজনার সিনেমাগুলোও কলকাতার সিনেমা বলেই বিবেচিত হবে। তাছাড়া শাকিব পশ্চিমবঙ্গে নিজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সেখানের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার অনুষ্ঠানে নেচে বেড়াচ্ছেন। এর মাধ্যমে এটাই প্রতীয়মান হয়, তিনি দেশের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে কলকাতায় গ্রহণযোগ্য হতে চেষ্টা করছেন। দর্শকও তার এই কলকাতা প্রীতির কারণে যে প্রত্যাখ্যান করবে, তা এক প্রকার নিশ্চিত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন