শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শিক্ষাঙ্গন

দেখা হবে বন্ধু কারণে-অকারণে...

| প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নিজেদের মেধার সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটিয়ে কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় অবদান রাখার লক্ষে ৪ বছর আগে পদার্পণ করেছিলাম বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভর্তির প্রথম দিন থেকেই সৌন্দর্যমন্ডিত এই ক্যাম্পাসে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। সারাদিন ক্লাস, ক্লাসের ফাঁকে বন্ধুবান্ধবসহ আড্ডা, ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে ঘোরাঘুরি, পই পই করে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ানো এই ভাবেই কেটে গেল ৪ বছর। শেষ করে ফেললাম স্নাতক পাঠ। অনেক হাসি কান্না, সুখ-দুঃখের স্মৃতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটি আনাচে-কানাচে। দেখতে দেখতেই শিক্ষাজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে গেল ভাবতেই অবাক লাগে। কেটে গেল জীবনের সব থেকে সেরা দিনগুলো। তাই স্নাতক শেষ করার পর মধুময় দিনগুলোর স্মৃতি হৃদয়ের ফ্রেমে বেঁধে রাখতে ক্লাসের সবাই মিলে মেতে উঠে শিক্ষা সমাপনী তথা র‌্যাগ ডে নামক মহানন্দে। এভাবেই কেটে যাওয়া ৪ বছরের স্মৃতির কথা বলছিলেন বাকৃবির কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দেলোয়ার, রিফাত, রাকিব।
আনন্দ, উচ্ছ¡াস, রঙে রূপে এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়ে র‌্যাগ ডের আনন্দে মেতে ওঠে কৃষি অনুষদের ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। স্মৃতি বিজরিত ক্যাম্পাস মমতাময়ী মায়ের মতো আপন বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যেতে হবে। এ দিনে চোখের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বর্ণাঢ্য ও স্মৃতিময় ঘটনাগুলো ভেসে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন আর্থিক সাহায্য না থাকায় শিক্ষার্থীরা নিজেরাই চাঁদা দিয়ে পালন করে এ মহাউৎসবের। ক্যাম্পাস যেন ছেয়ে যায় উৎসবমুখর পরিবেশে। উৎসবকে সম্পন্ন করতে শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের পাশাপাশি চলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া। নানা রঙের আলপনায় সাজিয়ে তোলে অনুষদ ভবন, ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। শেষ ক্লাসে কেক কাটা দিয়ে শুরু হয় র‌্যাগ ডের উদযাপন কর্মসূচি। সকল শিক্ষার্থীদের গায়ে থাকে র‌্যাগ ডের ¯েøাগান সম্বলিত টি শার্ট যেখানে সবাই লিখছে মনের না বলা কথা। এছাড়া বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়। বন্ধুদের কেউ দুষ্টুমির ছলে রঙ দিয়ে রাঙিয়ে দিচ্ছে অন্য বন্ধুর মুখ, কেউ বা হৈ হুল্লোড়, রং ছোড়াছুড়ি, বাদ্যযন্ত্রের তালে নাচ, গান, আড্ডায় মেতে ওঠে। কেউ আবার ব্যস্ত স্মরণীয় এসব দৃশ্যকে ক্যামেরাবন্দি করতে। বিস্কুট দৌড়, রশি টানাটানি খেলার পাশাপাশি ঘোড়ার গাড়ি ও রিকশায় পুরো ক্যাম্পাস ভ্রমণ শেষে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফ্যাশন শো ও রাতে বার বি কিউ পার্টির আয়োজন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাস জীবনের নানান স্মৃতিচারণ করে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
দেলোয়ার, রাকিব, রিফাত, মুন্না, তুলি, ইতি, সুস্মিতা, তিজা, তনু, অমি, পাপন, লিরা, আঁখি, বিরাজ র‌্যাগ ডে নিয়ে তাদের অনুভ‚তি ব্যক্ত করে বলেন, টানা চার বছর একসঙ্গে একটা পরিবারের মত ছিলাম। অনেক আনন্দ উৎসব করলেও প্রিয় ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে হবে ভেবে খারাপ লাগছে। স্মৃতি হয়ে থাকবে ভালবাসার বাকৃবি ক্যাম্পাস।
অনুষ্ঠানের এক মুহূর্তে এসে একে অন্যকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সবশেষে সবাই যেন বলছেন বিদায়, ভালো থেকো বন্ধু। দেখা হবে কারণে-অকারণে। আর দেখা হলে বলিস, আমরা ফিফটি।
ষ মো. শাহরিয়ার আমিন

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md Nasir Uddin ২৭ মার্চ, ২০১৭, ১০:১১ এএম says : 0
Asolai sai sriti kokono bular noi
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন