অর্থনৈতিক রিপোর্টার : মনকাড়া বাহারি পণ্য ও সাশ্রয়ী মূল্য এই দুই মিলিয়ে জমে উঠেছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের আয়োজনে জাতীয় এসএমই মেলা। দেশে উৎপাদিত পাটজাতপণ্য, খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াজাত ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, আইটি পণ্য, প্লাস্টিক ও অন্যান্য সিনথেটিক, হস্তশিল্প, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যারসহ অন্যান্য পণ্য প্রদর্শন এবং বিক্রি হচ্ছে মেলায়। ক্রেতাদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এসব পণ্য। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এই মেলার আজ শেষ দিন। শেষ দিনেও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি থাকবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা।
রোববার মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নারী উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ ব্যাপক। তারা বুটিক ও বাটিক পণ্য নিয়ে মেলায় এসেছেন। তাদের বুটিক ও বাটিক পণ্যের দোকানে মিলছে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে মেয়েদের পোশাক, শাড়ি, পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক ও বিছানার চাদর। হাতের নাগালে পণ্যের দাম হওয়ায় ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে এসএমই মেলা।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে এসএমই মেলায় আসা সোনিয়া ইসলাম বলেন, সকালেই মেলায় এসে ফ্যাশনওয়্যার ঘুরে ঘুরে কিছু ড্রেস কিনলাম। এছাড়াও এখানে পাটজাতপণ্যের অনেক বেশি কালেকশন আছে, সেগুলোও কিনব।
তিনি বলেন, এই এসএমই মেলার আয়োজন আসলেই চমৎকার একটি পদক্ষেপ। এতে করে আমাদের দেশে বিভিন্ন উদ্যোক্তা এবং ক্রেতাদের মাঝে একটা সেতু বন্ধনের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে পরিচিতও হওয়া যায়। কেরানীগঞ্জ থেকে মেলায় আসা ফাতেমা মনসুর বললেন, ছুটির দিন হওয়ায় মেয়ে ও নাতি-নাতনীর সঙ্গে সময় কাটাতে মেলায় এসেছি। নিজের জন্য এখনও কিছু কিনিনি। দুই নাতি-নাতনী তাদের পছন্দের জিনিস খুঁজছে। ওদের কিনে দেব।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, পোশাকের পর মেলায় সবচেয়ে বেশি মিলছে চামড়াজাত পণ্য। এসবের মধ্যে জুতা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, বেল্টসহ চামড়ার তৈরি বিভিন্ন পণ্য তুলনামূলক কমদামে বিক্রি করা হচ্ছে মেলায়। মেলায় বরাদ্দ পেয়েছে কয়েকটি হস্তশিল্পের দোকান। এছাড়া মধুসহ বিভিন্ন পণ্যও নিয়ে এসেছে কিছু প্রতিষ্ঠান। মেলায় রয়েছে বিভিন্ন রকমের পিঠা। এগুলোর দামও হাতের নাগালে, প্রতিটি ৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।
এছাড়া ছোট থেকে মাঝারি আকারের পাপোশ ও কার্পেট মেলায় ৭০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গ্রিটিংস স্টুডিও নামে একটি প্রতিষ্ঠান নিমন্ত্রণের কার্ড তৈরি করেছে বিভিন্ন রকম কাঠের নকশা করে। যাকে বলা হয় উড ক্র্যাফট। আকর্ষণীয় এ নকশা দেখতে অনেকেই দোকানটিকে ভিড় করেছেন।
জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা জানালেন, একেকটি বিয়ের নিমন্ত্রণ কার্ড তৈরিতে খরচ পড়বে ৩৫০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি। তাদের লক্ষ্য কিছু উচ্চ আয়ের ক্রেতা ধরা। ডি জোন নামে একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে এসেছে দেয়াল সাজানোর কাঠ ও পার্টিকেল বোর্ডেও তৈরি নকশা। যাকে বলা হয় ওয়াল প্যানেলিং।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী জহিরুল ইসলাম বলেন, এক বর্গফুটের দেয়াল সাজাতে খরচ পড়ে কমপক্ষে এক হাজার ২০০ টাকা। মেলায় ৩৩ নম্বর স্টলটি ফ্যাশন হাউজের সিজের তৈরি পোশাক নিয়ে এসেছেন রাজশাহীর উদ্যোক্তা উরসি মাহফিলা। তিনি বললেন, দর্শনার্থী-ক্রেতার সংখ্যা আশানুরূপ। অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
বিক্রেতারা জানান, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ভিড়ও বাড়ছে। পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত এবারের মেলায় সারাদেশ থেকে ২০০টি এসএমই প্রতিষ্ঠান ২১৬টি স্টলে তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করছেন। গত ১৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন