শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

সিট দখল ও অন্তর্ভুক্তিকরণ নিয়ে বিশৃঙ্খলা ঢাবি শিক্ষক সমিতির শিক্ষা-বান্ধব পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান

| প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : সম্প্রতি বিভিন্ন হলের সিট দখল ও সরকারি কলেজগুলোকে ঢাবির অন্তর্ভুক্তিকরণ নিয়ে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে তাতে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এসকল কর্মকান্ড শিক্ষাবান্ধব পরিবেশের জন্য অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ রক্ষার্থে সকলকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ডুটা) সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
ঢাবিতে গত সোমবার মধ্যরাতে বিজয় একাত্তর হলের বিভিন্ন কক্ষে হল ছাত্রলীগ নিজেদের কর্মীদের রুমে তুলে সিট দখল করতে রাতভর তান্ডব চালায়। তারা হল প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে তার কার্যালয় ভাঙচুর করাসহ আবাসিক শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করে এবং ইউএনবির বিশ^বিদ্যালয় প্রতিবেদক ইমরান হোসেনকে মুখে গামছা পেঁচিয়ে রাতের আঁধারে তার কক্ষে গিয়ে মারধর করে। তাদের মারধরের একপর্যায়ে ইমরান হোসেন সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হয়। এই ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ঢাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক মানববন্ধন করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ঢাবি সাংবাদিক সমিতি (ডুজা) বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদকে। কিন্তু ছাত্রলীগ এ দাবিতে কোনো সাড়া না দেয়ায় সাংবাদিক সমিতির কার্যকরী পরিষদের এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্রলীগের সকল ইতিবাচক সংবাদ ও কর্মসূচি বর্জনের ঘোষণা দেয়।
এ ঘটনার দু’দিন না যেতেই গেল শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে ছাত্রলীগ হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ নিজ কক্ষ থেকে বের করে সেখানে তাদের নিজেরদের কর্মীদের উঠাতে চেষ্টা করে। এতে বাধা দেয়ার ফলে হলের আবাসিক শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে তারা মারমুখী আচরণ করতে থাকে। এসব ঘটনার সূত্র ধরে শিক্ষক সমিতির দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে আমরা লক্ষ্য করেছি, সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন হলে সিট বন্টনকে কেন্দ্র করে পরস্পরের প্রতি দোষারোপ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা এবং একদল উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র কর্তৃক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের নাজেহাল করা হয়েছে।
এদিকে, আজিমপুরের গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজকে ঢাবির পূর্ণাঙ্গ ইনস্টিটিউট করার দাবি নিয়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাল্টা অবস্থানকে তারা শিক্ষা-পরিবেশের অন্তরায় হিসেবে দেখছেন।
এদিকে, আজিমপুরের গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজকে ঢাবির অধীনে ইনস্টিটিউট করার দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা একটানা চারদিন চার-পাঁচ ঘণ্টা ধরে নিউমার্কেট-নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে লাগাতার বিক্ষোভ করে। এতে নিউমার্কেট থেকে মিরপুর রোড, সাইন্সল্যাব মোড়, আজিমপুর, পলাশী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তাদের আন্দোলনে জনসাধারণের ভোগান্তি ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে উল্লেখ করে ঢাবি সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও নিউ মার্কেটের হকাররা গত বৃহস্পতিবার তাদের আন্দোলনের প্রতিবাদে পাল্টা আন্দোলন করে।
এসকল ঘটনাকে লক্ষ্য করে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেছেন কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্তিকরণ ও ইনস্টিটিউট-এ রূপান্তর করার অজুহাতে রাস্তাঘাটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আন্দোলন, প্রতি-আন্দোলন কর্মসূচি পালনের নামে যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টিসহ একটি গোষ্ঠী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে অস্থিরতা সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে যেমন শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে তেমনি আইন-শৃঙ্খলার অবনতিরও আশংকা দেখা দিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন