শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শিক্ষাঙ্গন

‘বর্ণমালা’র প্রত্যাশা প্রাপ্তির দুই বছর

| প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

‘মাত্রই তো ক্যাম্পাস লাইফের তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করলাম। মনে হচ্ছে এইতো সেদিনই লাল পাহাড়ের সবুজাভ ক্যাম্পাসে পা রেখেছিলাম। প্রত্যাশা-প্রাপ্তির হিসাব মেলানোর সময়ইবা পেলাম কই? লাল-সবুজের নিজস্ব এ ভুবনে প্রিয় বন্ধুদের আবরণে বিভোর ছিলাম বলেই প্রত্যাশা-প্রাপ্তির হিসাবটা না হয় দূরেই রাখলাম’- বলছিলেন দুই বছর আগে এমনই বসন্তের কোন একদিনে মুগ্ধতার ক্যাম্পাস কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ে স্বপ্নচারীদের সাথী হওয়া বাংলা ৬ষ্ঠ আবর্তনের শিক্ষার্থী ফাহিমা নাজনীন উর্বি।
ক্যাম্পাস জীবনের দুই বছর পূর্ণ হলো বাংলা ৬ষ্ঠ আবর্তন ‘বর্ণমালা’র। স্বীয় আড্ডাস্থল ‘বর্ণমালা চত্বর’র নামানুসারেই বন্ধুদের ভোটের মাধ্যমে আবর্তনের নাম দেওয়া হয় ‘বর্ণমালা’। প্রথমদিনের পর থেকে ‘বর্ণমালা’র প্রতিটি সদস্যের কাছে ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, আবেগ-অনুভ‚তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় বাংলা বিভাগ। সৃজনশীলতা ও মুক্তচিন্তার প্রকাশ সাধনের জন্য বিভাগের প্রতিটি শিক্ষকের কাছেও তাদের যথার্থ কদর বিদ্যমান। পাহাড়ঘেরা সবুজ-শ্যামল বৃক্ষরাজির এই ছোট্ট ক্যাম্পাসে প্রথম থেকেই তাদের বিচরণ সর্বত্র। মূলকাজ পড়াশোনা ঠিক রেখেই বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে উঠে তারা। মিমি থিয়েটারে; তন্বী আবৃত্তিতে; শাকিল সাংবাদিকতায়; ইমরান, মেহেদুল বিতর্কে; মেহেদী, কান্তা, এস্কান্দার উপস্থাপনায়; সানি, জজ, লিজন, নাসের খেলাধুলায় সকলের প্রিয়মুখ হয়ে উঠে। এছাড়াও নাচে-গানে আশিক, তাসমিন, তিথির নাম বাদ দিলে যেন অন্যায় হয়ে যাবে। বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের সরব উপস্থিতি মুগ্ধ করে সবাইকে।
ছোট পরিসরের এই বিশ^বিদ্যালয়ে দুই বছরের প্রত্যাশার কাছে প্রাপ্তি হয়তো হার মানবে। তারপরও ‘বর্ণমালা’র প্রতিটি সদস্যই যেন নিজেদের প্রাপ্তির উচ্ছ¡াসই প্রকাশ করতে চান বর্ষপূর্তির আনন্দে আবিরের রঙে। ‘পরিবার ছেড়ে নতুন একটি পরিবার খুঁজে পেয়েছিলাম। কিভাবে পড়াশোনা করলে কর্মজীবনে সফল হওয়া যাবে তা আমি বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও বড়ভাই-বোনদের কাছ থেকেই জেনেছি। এছাড়াও সহশিক্ষার প্রতি গুরুত্ব ও তার আবশ্যিকতা জানতে পেরেছি এই প্ল্যাটফর্ম থেকেই।’-জানালেন ‘বর্ণমালা’র সদস্য সাইদুর রহমান।
সৃজনশীলতার তাড়না থেকেই নিজেদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি করতে প্রথম থেকেই প্রতিমাসে একটি করে ‘মাসিক পুনর্মিলনী’ করে আসছে ‘বর্ণমালা’। সবার স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণে প্রতিমাসের কোন একদিন অনুষ্ঠানের দিন-তারিখ ঠিক করা হয়। সেদিন জন্মদিনের কেক কাটা, অনুভ‚তি প্রকাশ, বিভিন্ন খেলাধুলা, নাচ-গান, আবৃত্তিসহ বিভিন্ন বিষয় যুক্ত থাকে অনুষ্ঠানসূচিতে। এছাড়াও দুপুরে চড়–ইভাতির আয়োজন আনন্দের মাত্রাকে যেন দ্বিগুণ করে দেয়। হাসি-ঠাট্টা, আনন্দ কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠে ‘মাসিক পুনর্মিলনী’র প্রতিটি মুহূর্ত। ক্যাম্পাসের ব্যতিক্রমী এই উৎসবটি একমাত্র ‘বর্ণমালা’ই করে আসছে গত দু’বছর ধরে। নিজেদের দুই বছরের প্রাপ্তির ঝুলিতে তাই এই অনুষ্ঠানাদির স্থিরচিত্রগুলো নিঃসন্দেহে স্মৃতিফলক হিসেবেই রয়ে যাবে আজীবন।
প্রত্যাশা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি মিলিয়েই মানুষের জীবন। জীবনের ক্ষুদ্র একটি অংশ বিশ^বিদ্যালয়ের সাথে জুড়ে আছে ‘বর্ণমালা’র প্রতিটি সদস্যের। তাই তারা এই অল্প সময়ে প্রাপ্তির কাছে প্রত্যাশাকে ছোট করেই দেখছেন। তাদের ভাষ্য- এভাবেই যাক না কেটে ক্যাম্পাস লাইফের বাকিটা সময়!
ষ মাহফুজ কিশোর

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন