বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

পথ নির্দেশ : হযরত ইমাম-মাহ্দী (আ.)-এর খোঁজে

| প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাজীর আহমদ জীবন
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
ইমাম মাহ্দী (আ.) অল্পবয়স হতেই মাদারজাত ওলীদের মতো আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি প্রেমের আগ্রহ বাড়বে। এই আগ্রহের কারণে কোনো কামেল বা ওলীর নিকট বায়য়াত হয়ে বিলায়েত-এর উচ্চস্তরে আরোহন করবেন। তার গভীর রাসূল প্রেম ও বিরাট দায়িত্বের কারণে রাসূল (সা.) তাঁর জীবন সাথী হবেন। তিনি জাহেরী-বাতেনী ইলম ও ইল্মে লাদনীতে অভিজ্ঞ হবেন। সাধারণ বেলায়েতপ্রাপ্ত ওলীগণই যদি এসব গুণ অর্জন করতে পারেন, আর তিনি তো আল্লাহর দয়াপ্রাপ্ত রাসূল কর্তৃক মনোনীত প্রতিশ্রæত ইমাম মাহদী (আ.)। রাসূল (সা.)-এর গুণাবলী তাঁর মধ্যে পূর্ণরূপে বিকশিত হবে। তিনি তো অসাধারণ। (দ.বই. খোস্ আমদেদ ইমাম মাহ্দী (আ.) ইমাম মাহ্দী কোনো স্কুল, কলেজ বা মাদ্রাসায় শিক্ষা গ্রহণ করবেন না। এমনকি কোনো সামরিক প্রশিক্ষণ ও কোনো সামরিক একাডেমী হতে গ্রহণ করবেন না। তাঁর এলেম লাদুনী অর্থাৎ আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান-বিজ্ঞান থাকবে। যার ফলে জ্ঞান-বিজ্ঞানের যে কোনো শাখায় অসীম জ্ঞানের অধিকারী হবেন। যে জ্ঞান সাধারণ মানুষের পক্ষে অর্জন করা সম্ভব নয়। (দ. বই. ইমাম মাহদী (আ.) সারাংশ মিশকাত ও আবু দাউদ শরীফ) শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের পূর্বে সারাটা বিশ্বের যে মানবতাহীন রূদ্র রূপে সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিশ্বমানব খুঁজে ফিরছিল শান্তি ও মুক্তির পথ। এমনই এক ঘোর সংকটকালে বিশ্ব মানবের জন্য শান্তি ও মুক্তির বাণী নিয়ে প্রেরিত হনÑ ‘শান্তির দূত’Ñ রাহ্মাতুল্লিলÑআলামিন”Ñহযরত মোহাম্মদ (সা.)। তার চেয়ে বর্তমান বিশ্ব অনেক বেশি সংকটময়। বর্তমান সময়ের বিজ্ঞ আলেম; কামেল, চিন্তাশীল ও জ্ঞানীগণ বলছেনÑ এটা ইমাম মাহ্দী প্রকাশের সময়। হযরত শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (র.) ভবিষ্যবাণী করে গেছেন, আমার চারশত বছর পর পৃথিবীতে একজন মোজাদ্দেদ আসবেন। তার সে ভবিষ্যৎ বাণী সফল হয়েছে। হযরত শায়খ আহমদ সিরহিন্দী (র.) ছিলেন সেই মোজাদ্দেদ। মোজদ্দেদ আল ফেছানী ভবিষ্যৎ বাণী করে গেছেন যে, আমার চারশত বছর পরে পৃথিবীতে আরেকজন মোজাদ্দেদ আসবেন। তার নাম হবে আহমদ। হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগেই সেই চারশত বছর পূর্ণ হয়েছে। রাসূল (সা.) যেমন প্রতিশ্রæত নবী ছিলেন এবং তাঁর জন্য তাঁর জন্মের বহু পূর্ব হতে তাঁর আগমনী বার্তা প্রচারিত হয়ে আসছিল, তেমনি ইমাম মাহদী (আ.) ও একজন প্রতিশ্রæত মোজাদ্দেদ। রাসূল (সা.) তার সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বাণী করে গেছেন। ওলীগণ ও তার সম্পর্কে অনেক তথ্য ও ভবিষ্যৎ বাণী প্রকাশ করেছেন। এ সম্পর্কে মওলানা আজিজুর রহমান নেছারাবাদী যিনি শর্ষিনার মরহুম পীর হযরত মাওলানা নেছার আহমদ সাহেবের একজন বিশিষ্ট খলিফা, চিন্তাশীল আলেম ও লেখক। আধ্যাত্মিক জ্ঞানসম্পন্ন একজন ওলী। “এ যুগ মাহদী (আ.)-এর যুগ” নাম পুস্তকে তাঁর একটা মূল্যবান ভাষণ প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত ভাষণে তিনি বলেনÑ“ফুরফুরা শরীফের মরহুম মোজাদ্দেদ সাহেব হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দীক (র.) মেদীনিপুর, নোয়াখালীর লক্ষèীপুর; প্রভৃতি স্থানে তরুণ বয়স্ক বহু লোকের নিকট বলে গেছেন যে, আমার পরবর্তী মোজাদ্দেদ হযরত মাহদী (আ.)। আমি বার্ধক্যে উপনীত হয়েছি। তাঁর সাথে আমার মোলাকাতের সম্ভাবনা নেই। তোমরা তরুণ, তোমাদের সাথে তাঁর সাক্ষাতের সম্ভাবনা আছে। যদি তাঁর জিয়ারত নছীব হয় তবে আমার সালাম তাঁর খেদ্মতে পৌঁছে দিও। তিনি আরো বলেন; মোমেনশাহী জিলা নিবাসী ছারছিনা দরবারের খলীফা মাওলানা আব্দুস সালাম সাহেব বলেছেন যে; তিনি এক সময় কয়েকজন বুযর্গ লোকের খেদমতে হাজির ছিলেন। তিনি তাদেরকে বলতে শুনেছেন যে; আলমে আরওয়াহার মোরাকাবা করে দেখা গেছে উক্ত আলমে হযরত মাহদী (আ.)-এর রুƒহ মোবারক নেই বরং আলমে নাছুতে বা জড় জগতে স্থানান্তরিত হয়েছে। এটা ১৯৮০ সালের ঘটনা। এ পুস্তকের এক স্থানে মাওলানা সাহেব বলেন, আমার সাথে এরূপ বহু লোকের মোলাকাত আছে, যারা খাবে বা মোরাকাবায় এক ব্যক্তির দর্শন লাভ করেছেন, যার বয়স ১৬/১৭ বছর বলে অনুমিত এবং তিনি যুদ্ধের পোশাকে সুসজ্জিত। তাঁর চেহারা অত্যন্ত জ্যোতির্ময়। তাঁর চেহারার নূরে দুনিয়ার সমস্ত অন্ধকার নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। মাওলানা সাহেব বলেন; তারা লোকায়ে রাহানীতে হযরত মাহদী (আ.)-এর ছুরতে মেছালীর দর্শন লাভ করেছেন। (দ. বই. ইমাম মাহদী (আ.) লেখক : ফারিদা আখতার ও ইশরাত জাহান বেবী। মুদ্রন :১৯৮৮ ইং) বিখ্যাত ওলীয়ে কামেল-নেয়া মতল্লাহশাহ সাহেব তার মালফুজাতে বলেছেনÑ ১৩৮০ হিজরীতে ইমাম মাহদী (আ.) জন্মলাভ করবেন। ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রæয়ারি মাসে ঈশ্বরদীর ইসালে সওয়াবের মাঠে ফুরফুরা শরীফের পীর মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে ঘোষণা করেন, ইমাম মাহদীর জন্ম হয়ে গেছে। ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ; ১৮ই মেÑ১৯৮১ ইং ১৩ই রজব সোমবার : বারো শরীফের মহান ইমাম হযরত শাহসূফী মীর মাস্উদ হেলাল (র.) সবাইকে সালাম দিয়ে ছুটি দিয়ে আমাকে বললেন, “ফুরফুরার পীর সাহেব যশোর এসেছিলেন এবং ওয়াজ করে গেছেন। বলে গেছেন সব দ্বার (পথ) বন্ধ হয়ে গেছে এমনকি আমাদেরও। এখন মোহাম্মদী দ্বার উন্মুক্ত এবং রোজ কেয়ামত পর্যন্ত একমাত্র দ্বীনে মোহাম্মদী ছাড়া পথ নেই। লোকজনকে বেশি দরুদ পড়তে বলেছেন এবং বলেছেন যে, এ জামানার মোজাদ্দেদ শিঘ্রই প্রকাশ পাবে। যদি পশ্চিম বাংলা হতে প্রকাশিত হন তাহলে ফুরফুরার পতাকা তাঁর হাতে তুলে দিব, আর যদি বাংলাদেশ হতে হন তাহলে পাকশির খান্কা হতে পতাকা তার হাতে তুলে দিব তাঁর দলভুক্ত হবো।
ইমাম মাহদীর প্রকাশের পূর্ব থেকেই বিশ্বে বড় ধরনের পটপরিবর্তনের যে অবস্থা শুরু হয়েছে তা ক্রমশ: বেগবান হচ্ছে। এক সময়ের অদ্বিতীয় সমরশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে কয়েক টুকরা হয়েছে এখন মধ্যপ্রাচ্যে যে পটপরিবর্তন ও যুদ্ধ শুরু হয়েছে এর নেতৃত্বে এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রকে ভেঙে ফেলার লক্ষণ হিসাবে ক্যালিফোনিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে চাচ্ছে। এসবের নেতৃত্বে আছেন হযরত ইমাম মাহদী (আ.)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন