পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে বিচ্ছিন্ন আমরাঝুড়ি চরের আবাসন প্রকল্পে বাস করে ওরা। ওদের কেউ বাক, কেউ দৃষ্টি, কেউ শারীরিক আবার কেউবা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। ওরা সংখ্যায় দশ জন। দারিদ্র্য আর অসচেতনতার বেড়াজালে বন্দি এসব প্রতিবন্ধীর অক্ষরজ্ঞান লাভের সুযোগ পূর্বে হয়নি কখনো। বর্তমানে একসঙ্গে বসে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে পড়াশোনা শিখছে গরিব ও দুস্থ পরিবারের এসব প্রতিবন্ধী সন্তান। গত দুই বছর যাবৎ সাবলীল অঙ্গভঙ্গিমায় ওদের মত করে এইসব প্রতিবন্ধীদের অক্ষরজ্ঞান শিখিয়ে আসছেন কাউখালীর প্রবীণ বিদ্যোৎসাহী আঃ লতিফ খসরু। শুভ্র চুলের মাঝ বয়সী এই ব্যক্তিটি সকলের কাছে “বঞ্চিতদের বন্ধু” হিসাবে পরিচিত। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই অবহেলিত জনপদে বঞ্চিতদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়াতে গড়ে তুলেছেন প্রতিবন্ধী স্কুল। কাউখালী শহরতলী থেকে খেয়ায় নদী পেরিয়ে সপ্তাহে দু-দিন বর্ণমালা শিখান তিনি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে সে¦চ্ছায় পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষা উপকরণ, পরিধেয় বস্ত্র ও খাদ্য যোগানের ব্যবস্থাও করেন জেলার শ্রেষ্ঠ এই বিদ্যোৎসাহী সমাজসেবক।
কাউখালী প্রশাসনের দেয়া একখÐ জমির উপর ছামিয়ানা বিছিয়ে চলে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের পাঠদান। মানব সেবা ব্রতের সাথে সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রতিবন্ধীদের প্রতিবন্ধকতার জয় করার স্বপ্নে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তার একান্ত প্রচেষ্টায় মিজান (১২),শারমিন (৯), আয়সা (১২),আরিফা (১৩) ও রফিকেরা (১৯) আজ আলোর পথের অভিযাত্রী। প্রতিনিয়ত নিগ্রহের এই বিশেষ শ্রেণীর মানুষ একটু ভালোবাসা, যতœ আর সহযোগিতা দিয়েই সমাজের মূলধারায় যুক্ত করা সম্ভব।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধীরা সাধারণত সীমিত বুদ্ধিমত্তার অধিকারী। প্রতিবন্ধীদের এই সীমিত বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে পরিবারের মাঝে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন একজন আঃ লতিফ খসরু। তার বিশ^াস তার এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ (প্রতিবন্ধী স্কুল) একদিন নতুন প্রজন্মের হাত ধরে বাধার দেয়াল টপকে অনেক বড় রূপ লাভ করবে। সমাজের বিত্তবান শ্রেণী তার এই প্রচোষ্টায় অনুপ্রাণিত হয়ে দেশব্যাপী আরও অনেক প্রতিবন্ধী স্কুল প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হবেন।
ষ মো. রেদোয়ান হোসেন
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন