একপক্ষের যুক্তি, ‘ফেইসবুক শিক্ষার্থীদের জন্য মারাত্মক একটি ক্ষতিকারক ব্যাধি। রাতজেগে ফেইসবুকে মগ্ন থাকায় শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় মন বসছে না। ফেইসবুকে খারাপ ছবি দেখে, খারাপ খবর পড়ে তাদের মনে প্রভাব পড়ছে। শিক্ষার চেয়ে খারাপের দিকে ঝুঁকছে। ফেইসবুকের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে কুপ্রভাব পড়ছে।’ আরেক পক্ষের যুক্তি, ‘ফেইসবুক হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। ফেইসবুকের মাধ্যমে টেলিভিশন, প্রিন্ট মিডিয়ায় খবর আসার আগে ফেইসবুকে মানুষ পেয়ে যাচ্ছে। ফেইসবুকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নানা সাধারণ জ্ঞান অর্জন করতে পারছে। অসুখ হলে ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হতে পারছে সহজে। ফেইসবুকের উপকারিতা অপকারিতার চাইতে বেশি।’
গতকাল বেলা ১১টা থেকে রাউজান একেএম ফজলুল কবির চৌধুরী অডিটরিয়ামে সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজান’র ব্যবস্থাপনায় ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় আন্তঃস্কুল বির্তক প্রতিযোগিতায় এমন তর্কে-বির্তকে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে পুরো হল। বিতার্কিকদের স্ব স্ব দলের যুক্তিতে মুহূর্ত মুহূর্ত করতালি দিয়ে উৎসাহ যোগান হলভর্তি দর্শকরা। এর আগে ‘যুক্তিতে মুক্তি আসে, এগিয়ে যাবো এই বিশ্বাসে’ এই ¯েøাগানকে সামনে রেখে সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজানের ব্যবস্থাপনায় ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় আন্তঃস্কুল বির্তক প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন দৈনিক পূর্বকোণের চিফ রিপোর্টার নওশের আলী খান। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেন। সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আলহাজ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের আহŸায়ক আরিফুল ইসলাম চৌধুরীর সঞ্চালনায় উদ্বোধক নওশের আলী খান বলেন ‘তর্কের জন্য জ্ঞানের প্রয়োজন, আর জ্ঞান অর্জন করতে বই পড়া প্রয়োজন।’ বির্তক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সমাজ মাদক, ফেইসবুকের খারাপ ব্যবহার থেকে মুক্তি পাবে।’ তিনি বির্তক প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন ‘আজকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন, কিন্তু এটা কাম্য নয়, আমিতো মনে করি, যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়ে, খাবার বা নানাভাবে সহযোগিতা করেছে, তাদেরকে সম্মান দেয়া উচিত।’ তিনি বলেন ‘দেশের চট্টগ্রাম দেশের রাজস্বের ৬০ ভাগ পূরণ করে। চট্টগ্রামকে সবদিক দিয়ে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।’
প্রধান অতিথি শামীম হোসেন বলেন ‘বিতর্ক ন্যায়ের সাথে অন্যায়ের। যুক্তির মাধ্যমে বির্তক করতে হবে। আজকে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। কিন্তু জঙ্গিবাদের পক্ষে বিপক্ষে কিংবা স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষে কোন যুক্তিতর্ক, বির্তক প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত নয়।’ তিনি বলেন, ‘বিতর্ক প্রতিযোগিতা গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে দিতে হবে। কারণ যুক্তির মাধ্যমে সমাজ সুন্দর পথে এগিয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠানে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন ফেনী দায়রা জজ আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক সাইমুম, সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রকাশ দাশগুপ্ত, প্রভাষক আবু বকর সিদ্দিক, ইন্ডিপেন্ডেট’র স্টাফ রিপোর্টার ইফতেখার ফয়সাল। অতিথি ছিলেন উপদেষ্টা আবদুল্লাহ ছগীর, আবৃত্তি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাজু পালিত, তরুণ সংগঠক এস. এম ইউসুফ আমিন, সংগঠনের সভাপতি সাইদুল ইসলাম, উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ক্রমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
ষ এম বেলাল উদ্দিন
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন