তামাকজাত পণ্যের মোড়কে উৎপাদনের তারিখ না থাকায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ (সংশোধনী ২০১৩) এর ১০ ধারার সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানের উদ্দেশ্য। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরও এব্যাপারে নিশ্চুপ। এছাড়া আমদানিকৃত তামাকপণ্যে ও মানা হচ্ছে না আইনটি। যার ফলাফল গত ফেব্রæয়ারি হতে এপ্রিল মাস পযর্ন্ত পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায় ৮২% তামাকপণ্যে সচিত্র সতর্কবাণী আসলেও তাদের ৪৫% তামাক পণ্যেই আইন অনুযায়ী ছবি প্রদান করে নিধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো।
গত ২৫ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্স সেল ’আয়োজিত“ আইন অনুযায়ী তামাকজাত দ্রব্যে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন-বর্তমান অবস্থা ”শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বক্তারা। এ সময় বক্তারা বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো অধিকাংশ তামাকজাত পণ্যে আইন অনুযায়ী সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান করছে না। এছাড়া তামাক পণ্যের মোড়কে উৎপাদনের তারিখ না থাকায় নির্দিষ্ট সময়ে আইন অনুযায়ী ছবি পরিবর্তন হচ্ছে কিনা, তা নিরূপণ করাও অসম্ভব হয়ে পড়ছে। ফলে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সতর্কবাণী প্রদানে সরকারের যে উদ্দেশ্য তা ব্যাহত হচ্ছে। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিসিআরসির গবেষণা সহকারী ও প্রকল্প কর্মকর্তা ফারহানা জামান লিজা। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ফেব্রæয়ারি হতে এপ্রিল পর্যন্ত টিসিআরসি নেতৃত্বে পরিচালিত এ জরিপ কার্যক্রমটি যশোর, নড়াইল, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, চাঁদপুর, বান্দরবন, ফেনী, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, পাবনা, নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটÑ মোট ২৫টি জেলায় পরিচালিত হয়। যেখানে মোট ৪৪৫টি ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের মোট ১৭৫৭টি ধোঁয়াযুক্ত তামাকপণ্য সংগ্রহীত হয় যার ৯৫ শতাংশে সচিত্র সতর্কবাণী পাওয়া গেছে এবং ৪৪৫টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোট ৩৪৭৭টি ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য সংগ্রহীত হয় যার মাত্র ৭৬ শতাংশ পণ্যে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী এসেছে।
যদি ও এর ৪৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই আইন অনুযায়ী সচিত্র সতর্কবাণী প্রদান করেনি তামাক কোম্পানিগুলো। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবু নাসের খান। সংবাদ সম্মেলনটির সভাপতিত্ব রেনটিসিআরসির উপদেষ্টা ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অতিরিক্ত রেজিষ্ট্রার ড. শাহ্আলম চৌধুরী। বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের মুখপত্র সমস্বরের নির্বাহী সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সুজন-এর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক সংস্থা দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের প্রকল্প কর্মকর্তা জনাব ডা. এস.এম. মাহবুবুস সোবহান, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান, এইড ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বকুল, মানবিকের কারিগরিক পরামর্শক রফিকুল ইসলাম মিলন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটিতে বাংলাদেশের তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ষ শিক্ষাঙ্গন রিপোর্ট
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন