১শ’ আসনে নতুন মুখ
আফজাল বারী : একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। প্রস্তুতি চলছে জোটের শরিক দলগুলোতেও। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগে বিএনপি এবার দুই শর্ত জুড়ে দিতে চায়। প্রথমত: সহায়ক সরকার ও সমতল মাঠ। দুই শর্তের ধরণ ও পুরণের জন্য সরকারের সাথে সংলাপের আহ্বান জানাবে বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া।
ইতোমধ্যে পর্দার আড়াল থেকে নির্বাচন নিয়ে দূতিয়ালীর ভূমিকা পালন করছে ভিনদেশী ও দেশীয়
দূতরা। বিএনপির তরফ থেকে ইতোমধ্যে দুই শর্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠনের মতো নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের ধরণ নিয়ে প্রস্তাব দেবেন খালেদা জিয়া। প্রস্তাবগুলো নিয়ে সংলাপের আহ্বানও জানাবেন তিনি।
বিএনপি সূত্রমতে, নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগের দাবি-দাওয়ার সাথে তাল রেখেই বিএনপির প্রস্তুতি। তৃণমুলকে সুসংগঠিত করতে চলছে পক্ষকালের দুর্বার কার্যক্রম। সংগঠনের সাড়ে ৪’শ নেতা মহানগর-জেলা চষে বেড়াচ্ছেন। মাঠ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেই এজেন্ট নির্বাচন করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তাদের। কেন্দ্র ভিত্তিক গঠন করা স্বেচ্ছাসেবিরা ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসার জন্য সাহস দেবেন।
এদিকে আগেভাগেই দলের দুইশ’ প্রার্থীর চূড়ান্ত করে রেখেছেন শীর্ষ নেতা। এ তালিকায় রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা। প্রতিকূল অবস্থা ভেদ করেই তাদেরকে নিজ নির্বাচনী মাঠ গোছানো নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। বাকি আসনগুলোতে নতুনমুখ আসবে। সেক্ষেত্রে সাবেক ছাত্র ও যুব দল নেতা, সাবেক আমলা ও আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নিষ্কন্টকদের তালিকা করা হচ্ছে। ফাইল ওয়ার্ক করছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া নিজেই।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি একটা নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। আমরা নির্বাচনে বিশ্বাস করি। যদি সহায়ক সরকার থাকে, নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত থাকে, আমরা নির্বাচনের জন্য সবসময় প্রস্তুত। নির্বাচনে প্রার্থী তো আমাদের ৯‘শ আছে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ইনকিলাবকে বলেন, বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। তবে সেটা নির্বাচন হতে হবে। সব দলের অংশগ্রহণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন থাকতে হবে। নির্বাচনের নামে প্রহসন, প্রতারণা হলে তো তাতে অংশ না নেওয়াই ভালো।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি স্পষ্ট। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি সহায়ক সরকার। যারা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগীতা করবে। দ্বিতীয়ত সমতল মাঠ। আমাদের দলের শীর্ষ নেতা, নীতিনির্ধারক, সাবেক মন্ত্রী, এমপিসহ সকল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা। প্রশাসন তাদের তলপিবাহক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্ষমতাসীনদের ক্যাডারের ভূমিকা পালন করছে। এই চিত্র ও পরিবেশ পাল্টাতে হবে। সমান মাঠ তৈরী করতে হবে যাতে প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ন নির্বাচন হয়। জনগণ ভোট দিতে পারে। তাহলেই বিএনপি ও তাদের শরিকরা অংশগ্রহণ করবে অন্যথায় ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন হলে তা প্রতিহত করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেন তিনি। নির্বাচনে লড়াই করতে এবং নির্বাচন প্রতিহত করার উভয় প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
সংবিধানের আলোকে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার প্রসঙ্গ টেনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ইনকিলাবকে বলেন, সংবিধান তো ধর্মগ্রন্থ নয় যে, তা সংশোধন করা যাবে না। এটি দাফায় দফায় সংশোধিত হয়েছে হবে সামনেও। জনগণের জন্য সংবিধান। জনগণের প্রয়োজনেই তা সংশোধন করতে হবে। এ জন্যই আমরা সংলাপের আহ্বান জানাবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন