স্টালিন সরকার : আজ ২৩ জুন ঐতিহাসিক দিন; বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬৮তম জন্মদিন। উপমহাদেশের মানুষের জন্য দিবসটি যেমন বেদনার তেমনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য বেদনা-আনন্দের। বেদনা এ কারণে ১৭৫৭ সালের এই দিনে পলাশির প্রন্তরে বাংলা-বিহার-উরিষ্যার স্বাধীন নবাব সিরাজ উদ দৌল্লাকে পরাজিত করে ইংরেজরা দেশের দখল নেয়। আর আনন্দ হলো ১৯৪৭ সালে ১৯০ বছরের উপনিবেশিক শাসন অবসানের দুই বছরের মাথায় ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে আওয়ামী লীগ আত্মপ্রকাশ করে। মা-মাটি-মানুষের এই রাজনৈতিক দলটির আত্মপ্রকাশ প্রায় দেড় লাখ বর্গ কিলোমিটার এই ভূখন্ডে নতুন ইতিহাস। তবে ঐতিহ্য ও গৌরবসমৃদ্ধ দলটিকে চলার পথে নানা চড়াই-উতরাই, ঘাত-প্রতিঘাত ও প্রতিবন্ধকতা পেরুতে হয়েছে। ৬৮ বছর থেকেই দলটি একের পর এক ইতিহাস বিনির্মাণ করেছে। ভূখন্ডের মানুষের চিন্তা-চেতনা ধারণ করে অদম্য বাসনা আর বিসর্জনের ক্যানভাসে নিজ জাতির মুক্তির মানচিত্র এঁকে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। জন্মের দুই বছরের মাথায় ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, ’৬৬ সালে ঐতিহাসিক ৬ দফা, ’৬৯ সালের গণঅভূস্থান, ’৭০ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে এই দলটি নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ক্রমশ এগিয়ে নিয়ে গেছে আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠায় স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালে ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা লাভের গৌরব অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ স্থান করে নেয়। এই দীর্ঘ সময়ে প্রচীন দলটির সঙ্গে এ দেশের মা মাটি মানুষের গড়ে উঠেছে হৃদয়ের সম্পর্ক। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, রুপসা থেকে পাথুরিয়া প্রতিটি গ্রাম-মহল্লায় দলটির সাংগঠনিক কমিটি রয়েছে। তৃর্ণমূলে দলটির কর্মী সমর্থকের যে বিস্তীতি তা অন্য কোনো দলের ক্ষেত্রে বিরল। শুধু দলের সাংগঠনিক শক্তি-সমর্থই নয়; সরকার পরিচালনায় দলটির সাফল্য উল্লেখ করার মতোই।
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় আত্মপ্রকাশের সময় পাকিস্তান সৃষ্টির নায়ক মুসলিম লীগের তরুণ নেতারাই সময়ের প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক। প্রতিষ্ঠার সময় বয়সে তরুণ শেখ মুজিবুর রহমান হন যুগ্ম-সম্পাদক, অলি আহাদ সাংগঠনিক সম্পাদক। ১৯৫৩ সালে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত দলের দ্বিতীয় কাউন্সিলে সভাপতি মওলানা ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক হন উপমহাদেশের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। অবশ্য ১৯৫৫ সালের অক্টোবর মাসে ঢাকার সদরঘাটের রূপমহল সিনেমা হলে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে ‘মুসুলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নামকরণ করা হয়। প্রতিষ্ঠার সময় বয়সের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক হলেও তাঁর চিন্তা চেতনায় আওয়ামী লীগ পরিচালিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুই আওয়ামী লীগকে আকাশ ছোঁয়া উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
আজ ৬৮ বছরে পা দেয়া আওয়ামী লীগের রাজনীতি কালভেদে চার ভাগে ভাগ করাই স্বেয়। প্রথমত ১৯৪৯ সাল থেকে ’৭০ সাল। দ্বিতীয়ত ’৭২ থেকে ’৭৫ সাল। তৃতীয় ’৭৫ থেকে ’৮১ সাল। এবং পরবর্তীতে শেখ হাসিনার নের্তৃত্বের সময়কাল। প্রথমেই বলে নেয়া ভাল জন্মের পর থেকে দলটি দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নের্তৃত্ব দিয়েছে। শোষণমুক্ত সমাজ গঠন এবং জনগণের ভোটের অধিকারের আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে নের্তৃত্ব দিয়েছে। দলটির স্বপ্নদ্রষ্টা বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র পরতে পরতে সেটা লিপিবদ্ধ আছে। আওয়ামী লীগের নেতাতো বটেই; দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের উচিত বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ করা। জানা প্রয়োজন টুঙ্গিপাড়ার একজন খোকার রাজনীতিতে একটার পর একটা পাটাতন ভেঙ্গে বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা হয়ে উঠার ত্যাগ-নিষ্ঠা-দেশপ্রেমের কাহিনী। ’৫৪ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে যুক্তফ্রন্ট সরকারে ছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু ’৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি হলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ড স্থগিত করা হয়। দীর্ঘ ৬ বছর আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি চলে। বঙ্গবন্ধুকে কখনো কারাগার কখনো আদালত দৌঁড়াতে হয়। অতপর ’৬৪ সালে দলটির কর্মকান্ড পুনরুজ্জীবিত করা হয়। ১৯৬৬ সালের কাউন্সিলে দলের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তাজউদ্দীন আহমেদ। এর পরে ’৬৮ এবং ’৭০ সালের কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে তাঁরাই অপরিবর্তিত থাকেন। ’৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন এবং ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে নের্তৃত্ব দেয় দলটি। ৬ দফার আন্দোলনের সময় তো আনোয়ারা বেগম ছাড়া দলটির অফিসে সন্ধ্যায় বাতি জ্বালানোর লোক পর্যন্ত ছিল না। প্রায় সব নেতাই ছিলেন কারাগারে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনেকেই আস্থা হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু দৃঢ়চেতা বঙ্গবন্ধুর ধৈর্য্য, চিন্তাশীল সিদ্ধান্তের সুদূর প্রসারী রাজনীতি তাঁকে মহানায়কের আসনে বসিয়ে দেয়। মূলত এ সময় দলটির সাংগঠনিক ভাবে শিখর থেকে শেকড়ে ছড়িয়ে পড়ে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ’৭০ সালের নির্বাচনে বিজয় এবং ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নের্তৃত্ব দেয়ার কাহিনী আজ ইতিহাস। এর আগে ’৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে সোহরাওয়ার্দী-ভাসানীর মতপার্থক্যের কারণে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ ভেঙ্গে যায়। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হয় ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। মূল দল আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ ও সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমানের দায়িত্ব অপরিবর্তিত থাকে। ’৬৪ সালে দলটির কর্মকান্ড পুনরুজ্জীবিত হলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মাওলানা তর্কবাগীশ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অপরিবর্তিত থাকেন।
দ্বিতীয় কাল ’৭২ থেকে ’৭৫ সাল। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিলে সভাপতি হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জিল্লুর রহমান। ’৭৪ এ বঙ্গবন্ধু দলের সভাপতির পদ ছেড়ে দিলে সভাপতির দায়িত্ব পান এ এইচ এম কামরুজ্জামান। সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল থাকেন জিল্লুর রহমান। তৃতীয় সময়কাল ’৭৫ থেকে ’৮১ সাল। ’৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে দলটি। মহান নেতার রক্তাক্ত লাশ ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের সিঁড়িতে রেখে অনেক নেতা মন্ত্রীত্ব গ্রহণ করেন। অনেকে পালিয়ে যান। কাদের সিদ্দিকীর নের্তৃত্বে কিছু নেতা এবং ছাত্রলীগের কিছু নেতা অবশ্য বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে দলের ভেতরেও শুরু হয় ভাঙন। ’৭৬ সালে ঘরোয়া রাজনীতি চালু হলে মহিউদ্দিন আহমদকে সভাপতি ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবিত হয়। ’৭৭ সালে এই কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নের্তৃত্বে গঠন করা হয় আহবায়ক কমিটি। ’৭৮ সালের কাউন্সিলে দলের সভাপতি হন আবদুল মালেক উকিল এবং সাধারণ সম্পাদক হন আবদুর রাজ্জাক। ওই সময় দলীয় কার্যক্রমে গতি আনার লক্ষ্যে ভারতে নির্বাসনে থাকা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি তোলেন নেতাকর্মীরা। ’৮১ সালের কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল রাখা হয় আবদুর রাজ্জাককে। ওই বছরের ১৭ মে দেশে ফেরেন গণতন্ত্রের মানস কন্যা শেখ হাসিনা। ’৮৩ সালে মহিউদ্দিন আহমদ ও আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে দলের একটি অংশ বাকশাল গঠন করলে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে বসানো হয়। মুলত ’৭৫ পরবর্তী সময়ে আবদুল মালেক উকিল-জোহরা তাজউদ্দীনের দৃঢ় নের্তৃত্বে সংকট কাটিয়ে উঠতে শুরু করে দলটি। তারপরও সুবিধাবাদীরা বিভিন্ন দলে চলে যায় এবং দলটি নানা ধারা উপধারায় বিভক্ত হলে কার্যত ক্ষয়ে যেতে থাকে দলটির সাংগঠনিক শক্তি। নেতাদের মধ্যে মতভেদের সুযোগ নিয়ে তথাকথিত প্রগতিশীলতার নামে কিছু নেতার ‘বামঘেষা’ চিন্তা চেতনায় দলটিকে কিছুটা হলেও ইসলামী আকিদার মুসলিমদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নেয়। আবার দলটির বিরুদ্ধেও ইসলাম বিদ্বেষের প্রচারণা ছিল। বঙ্গবন্ধুর নের্তৃত্বের সময় থেকেই দেশের শেকড় থেকে শিখরে দলটির সাংগঠনিক বিস্তীতি ঘটে। কিন্তু ৯২ ভাগ মুসলমানের এই দেশের আমজনতার মনন-চিন্তা-চেতনা বুঝতে না পারায় দলটি অনেকটাই দূর্বল হয়ে পড়ে। চতুর্থ কাল হলো ’৮১ সালে শেখ হাসিনা দলটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়া। শেখ হাসিনা নের্তৃত্ব গ্রহণের পর আশির দশক থেকেই পাল্টে যায় রাজনীতির চালচিত্র। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকৌশল ও জনসংযোগে পরিবর্তন আনা হয়। এতে দেশের রাজনীতির চালচিত্রও পাল্টাতে শুরু করে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে ’৭৫ বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের পর শেখ হাসিনার নের্তৃত্বের আগ পর্যন্ত কয়েক বছর আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে উজ্বল্য ছড়াতে পারেনি। কিন্তু শেখ হাসিনা নের্তৃত্ব গ্রহণের পর ’৯২ ভাগ মুসলমানের দেশের মানুষের চিন্তা চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে শেখ হাসিনা দলের কর্মকৌশল প্রণয়ন করেন। দেশের অধিকাংশ মানুষ যা চায় তিনি সে চিন্তা চেতনা ধারণ করেই দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন। এতে ব্যাপক সাফল্য পান। যা তাকে বার বার জনগণের ভোটে ক্ষমতাসীন হতে সহায়তা করে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দিকে তাকালে দেখা যায়, শেখ হাসিনা দলের হাল ধরার পর ’৮৭ সালের কাউন্সিলে তিনি (শেখ হাসিনা) সভাপতি ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক হন। ’৯২ এবং ’৯৭ সালের কাউন্সিলে শেখ হাসিনা এবং জিল্লুর রহমান দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০০ সালের বিশেষ কাউন্সিলে ওই কমিটি বহাল থাকে। ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি ও আবদুল জলিল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দৃঢ়তা, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের একক বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি পদে বহাল থাকেন এবং নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর কাউন্সিলে সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বহাল থাকেন। গত বছরের কাউন্সিলে সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্বাচিত হন।
১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ওই বছর ২৩ জুন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। অতপর ২০০৯ সালে এবং ২০১৪ সালে দলটি সরকার গঠন করে। সরকারে থেকে দলটি দেশী ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে। এই সাফল্যের ফিরিস্তি ব্যপক। শেখ হাসিনা জাতীয় নেত্রী থেকে আন্তর্জাতিক নেত্রীতের পরিণত হন। তারও চেয়ে দলটির বড় সাফল্য দেশের মানুষের চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করতে পারা। শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে দলটি মানুষের হৃদয়ে যায়গা করে নিতে পেরেছে। এখন কেউ আর আওয়ামী লীগকে ইসলাম বিদ্বেষী দল বলে না। তথাকথিত প্রগতিশীলরা শত চেস্টা করেও আওয়ামী লীগকে এখন আর নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতে পারে না। দলের ভিতরে-বাইরে থাকা কিছু প্রগতিশীল নেতা, বামনেতা, বুদ্ধিজীবীর উপদেশ-চাপ উপেক্ষা করে দলের নের্তৃত্ব আপামোর তৌহিদী জনতার চিন্তা চেতনা ধারণ করে তাদের হৃদয়ে যায়গা করে নিচ্ছে এটা দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কম সাফল্য নয়। এটা শেখ হাসিনার দৃরদৃষ্টি সম্পন্ন নের্তৃত্ব, প্রজ্ঞা, বিচক্ষতার জন্যই সম্ভব হচ্ছে। পলাশির প্রন্তরে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিনষ্টের বেদনা যেমন দিবসটিতে আছে; তেমনি দেশের স্বাধীনতার নের্তৃত্ব দেয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের জন্মদিবস হওয়ায় দিবসটি গৌরবের বটে। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশির প্রান্তরে বাংলা-বিহার উরিষ্যার সূর্য্য অস্তমিত হলেও ১৯৪৯ সালের এই দিনে জন্ম নেয়া আওয়ামী লীগ নের্তৃত্ব দিয়ে ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয় ঘটিযেছে। অতএব দিবসটি ঐতিহাসিক ভাবে গৌরবের। প্রচীন দল আওয়ামী লীগের ৬৭ বছরের পথ পরিক্রমায় অভিনন্দন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন