শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী

‘কারাগারের রোজনামচা’র আলোকে

| প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

হোসেন মাহমুদ : বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহুদিন কারাগারে বন্দী ছিলেন। সদ্য স্বাধীন পাকিস্তানে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ তিনি প্রথম গ্রেফতার হন। তারপর থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত ২১ বছর সময়কালে বহুবার তাকে কারাগারে যেতে হয়। ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্তিলাভের পর আর তাঁকে বেশ কিছুদিন কারাগারে যেতে হয়নি। তবে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে আবার তাঁকে আটক করা হয় ও পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে মিয়ানওয়ালি জেলে আটক রাখা হয়। সেও অবশ্য কারাজীবনই। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার প্রেক্ষিতে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতাকে মুক্তি দেয়া হয়। উল্লেখ্য, পাকিস্তানি শাসকরা তাঁকে বারবার কারাগারে পাঠিয়েছে । কারাগারে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবেই তিনি আটক থেকেছেন। তার মধ্যেই দু-একবার বক্তৃতা দেয়া বা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার মামলায় তাঁকে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। একবার কয়েদি হিসেবে ফরিদপুর জেলে থাকার সময় তাকে সুতা কাটতে হয়েছে। বড় কথা হলো, বারবার আটক হয়ে দীর্ঘকাল জেলে কাটানোর কারণে জেল জীবন, কয়েদিদের বিভিন্ন ঘটনা, জেলের ভেতরের অন্যায়, অনিয়মসহ বহু বিষয় তিনি দেখেছেন, জেনেছেন। তার অনেক কিছু তিনি টুকরো টুকরোভাবে ‘কারাগারের রোজনামচা’য় তুলে ধরেছেন। সেই সাথে দেশ নিয়ে, জনগণ নিয়ে, আন্দোলন নিয়ে তাঁর চিন্তা-ভাবনা তো আছেই।
‘কারাগারের রোজনামচা’ ২ জুন, ১৯৬৬ থেকে ২২ জুন ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত লেখা দিনলিপি। তখনো তিনি ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে ওঠেননি। উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রæয়ারি রেসকোর্স ময়দানে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। যাহোক, রোজনামচায় তিনি যা লিখেছেন সেসব ঘটনা বা বিষয়গুলো হয়তো স্বাভাবিক বা সাধারণ, কিন্তু তাঁর বর্ণনাগুণে তা আর সাধারণ থাকেনি, অসাধারণ হয়ে উঠেছে। মূলত এর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবনেরই প্রতিফলন ঘটেছে যা তাঁকে ঘনিষ্ঠভাবে চিনতে ও জানতে সাহায্য করে।
এ গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে, প্রথম দিকে তাঁর জেল জীবন সব সময় তেমন ভালো কাটেনি। দীর্ঘ সময় ‘সলিটারি কনফাইনমেন্ট’ হিসেবে তাঁকে একটি কক্ষে একা থাকতে হয়েছে। খবরের কাগজ ও বই ছিল তাঁর সাথী। জেলখানায় তাঁকে সুতা কাটার কাজও করতে হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৫০ সালে ঢাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গের জন্য একটা মামলা চলে। তাতে শামসুল হক, মওলানা ভাসানী ও তাঁকেসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। সে মামলায় তাঁকে সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়। তিনি একই সাথে হন রাজনৈতিক বন্দী ও কয়েদি। তাঁকে পাঠিয়ে দেয়া হয় ফরিদপুর জেলে। বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘আমাকে ফরিদপুর জেলায় আনার পর কাজ দেয়া হলো, সুতা কাটা, কারণ এখন আর আমি রাজবন্দী নই, কয়েদি। সুতা কাটতে হতো। আর কয়েদির কাপড় পরতে হতো।’ তিন মাস এ সাজা খেটে আবার তিনি রাজনৈতিক বন্দী হয়ে যান।
কারাগারে দুর্ভাগ্যের শিকার কয়েদিদের কিছু কিছু কথা তিনি বলেছেন। বঙ্গবন্ধুর কথায় আমরা জানতে পারি, জেলে ঘানি টানার ব্যবস্থা চালু ছিল ব্রিটিশ আমল থেকে। জেলে কেউ মেজাজ দেখালে তাকে আইন দফায় সাজা দেয়া হতো। তিনি লিখেছেন, ‘এদের গরুর মতো ঘানিতে ঘুরতে হতো, আর একটা পরিমাণ ছিল, সেই পরিমাণ তেল ভেঙে বের করতে হতো। পেছনে আবার পাহারা থাকত, যদি আস্তে হাঁটত অমনি পিটান’। এ ঘানি টানা সেন্ট্রাল জেলে বন্ধ হয় ১৯৪৬-এ, আর জেলা জেল ও মহকুমার সাবজেলে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত তা চালু ছিল। একটি ঘটনার কথা জানিয়েছেন তিনি। ফরিদপুর জেলে গিয়ে তিনি দেখতে পান মানুষ দিয়ে ঘানি ঘুরিয়ে তেল বের করা হয়। তিনি লিখেছেন, ‘একদিন জেলার সাহেবকে আমি বললাম, ‘সরকার হুকুম দিয়েছে কয়েদি দিয়ে ঘানি ঘোরানো চলবে না, আপনার জেলে এখনো চলছে কেন? তিনি বললেন, ২/১ দিনের মধ্যে বন্ধ করে দেয়া হবে, গরু কিনতে হুকুম দেয়া হয়েছে। ওপরে লিখেছি, অনুমতি এলেই কয়েদিদের পরিবর্তে গরু দিয়ে করা হবে। সত্যিই আমি থাকতেই জেলার সাহেব বন্ধ করে দিলেন।’ এরপর তিনি বলেছেন, একটি লোক ঘানি ঘুরাতে ঘুরাতে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তিনি তাকে তার অসুস্থতার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বলে, ‘হুজুর দিনভর গরুর মতো ঘুরে রাতে যখন শুতে যাইতাম তখনো মনে হতো ঘুরছি, ঘুমাতে পারতাম না, দেখেন সেই যে শরীর নষ্ট হয়ে গেছে আর ভালো হয় নাই। খোদা আপনাকে বাঁচাইয়া রাখুক, আপনি জেলে না আসলে আর কত দিন যে গরুর মতো ঘুরতে হতো তা বলতে পারি না।’
‘কারাগারের রোজনামচা’য় তাঁর জীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতাজাত কিছু পর্যবেক্ষণ আপ্তবাক্যের রূপ লাভ করেছে। তিনি বলেছেন, ‘জেল দিয়ে লোকের চরিত্র ভালো হয়েছে বলে আমি জানি না।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘তবে রাজনীতি করতে হলে নীতি থাকতে হয়।’
তিনি বলেছেন, ‘রক্তের পরিবর্তে রক্তই দিতে হয়। এ কথা ভুললে ভুল হবে। মতের বা পথের মিল না হতে পারে, তার জন্য ষড়যন্ত্র করে বিরুদ্ধ দলের বা মতের লোককে হত্যা করতে হবে, এ বড় ভয়াবহ রাস্তা। এ পাপের ফল অনেককেই ভোগ করতে হয়েছে।’
এ রোজনামচায় বারবার শেখ মুজিবুর রহমান তার স্বরূপে, স্ববৈশিষ্ট্যে আত্মপ্রকাশ করেছেন। একটি উদাহরণ : ‘শরীরটা ভালো লাগছে না। সেল এরিয়ার সবই বন্ধ হয়ে গেছে, এখন আমাকে বন্ধ করা হবে। দরজা বন্ধ হলো, কিছু সময় বসে রইলাম চুপচাপ। মেটের যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে যাই খেতে গেলে, ‘স্যার আর একটু নেন, একটু মাছ, একটু তরকারি’। বেচারা আমাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ‘এতবড় শরীর আধা পোয়া চালের ভাত খাবেন না, তাহলে বাঁচবেন কেমন করে? শুধু ভাবি, তোমাদের এই স্নেহের প্রতিদান কি করে দিতে পারব?’
রাজনৈতিক নেতা হিসেবে, বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জনগণের শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসার পাত্র হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু নানা অপরাধে অপরাধী জেলখানার কয়েদিদেরও ভালোবাসা-সম্মান লাভ করেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘আমার বাবুর্চি একটু চালাক-চতুর ছেলে, কেরামত নাম। বলে, ‘স্যার আপনি তো জানেন না- যেখানে দুইশ’-তিনশ’ কয়েদি থাকে তারা নামাজ পড়ে আপনাকে দোয়া করে। তারা বলে, আপনি ক্ষমতায় থাকলে তাদের আর চিন্তা থাকত না।’ দুঃখ হয়, এদের কোনো কাজেই আমি লাগব না। অনেক গল্প শুনলাম কয়েদিরা কি বলে সে সম্পর্কে। তবে এ কথা সত্য, যখন আমি জেল অফিসে যাই তখন কয়েদিদের সাথে দেখা হলে জেল অফিসারদের সামনেই আমাকে সালাম দিতে থাকে। যারা দূরে থাকে তারাও এগিয়ে আসে। বুড়ো দু-একজন বলেই ফেলে, ‘বাবা, আপনাকে আমরা দোয়া করি।’
জেলে থেকে বৃদ্ধ বাবা-বৃদ্ধা মা’র কথা ভেবেছেন তিনি। ৪ জুন ১৯৬৬-তে তিনি লিখেছেন, সন্ধ্যা হয়ে এলো। একটু পর ভেতরে যেতে হবে। তাই একটু হাঁটাহাঁটি করলাম। রুমে বসে লেখাপড়া করা ছাড়া উপায় কি! তাই পড়লাম বইটা নিয়ে। পরে আপন মনে অনেকক্ষণ চুপ করে ভাবতে লাগলাম। মনে পড়ল আমার বৃদ্ধ বাবা-মা’র কথা। বেরিয়ে কি তাঁদের দেখতে পাব? তাঁদের শরীরও ভালো না। বাবা বুড়ো হয়ে গেছেন। তাঁদের পক্ষে আমাকে দেখতে আসা খুবই কষ্টকর। খোদার কাছে শুধু বললাম, ‘খোদা তুমি তাঁদের বাঁচিয়ে রেখ, সুস্থ রেখ।’
রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে জেলখানায় বঙ্গবন্ধু একা থাকার সময় কিভাবে সময় কাটাতেন তা তাঁর বিবরণ থেকে জানা যায়। বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘বিকালে কাজ করতে শুরু করলাম। সময় তো আমার কাটে না। আলাপ করার লোক তো নাই। লাউয়ের দানা লাগাইয়াছিলাম, গাছ হয়েছে। ঝিঙ্গার গাছও বেড়ে উঠেছে। ফুলের বাগানটিকে সাজাইয়া গোছাইয়া করতে শুরু করেছি। বেশ সুন্দর হয়েছে দেখতে। আজকাল সকলেই প্রশংসা করে। নতুন জীবন পেয়েছে ফুলের গাছগুলি।’
বঙ্গবন্ধু জেলখানায় নিয়মিত খবরের কাগজ পড়তেন। সাধারণত সকাল ৯টায় কাগজ দেয়ার কথা। কিন্তু প্রায়ই বেলা ২টার দিকে কাগজ দেয়া হতো। যাহোক, পাঁচ-ছয়টি কাগজ পড়ার সুযোগ ছিল তখন তাঁর। তিনি পড়তেন ইত্তেফাক, সংবাদ, আজাদ, অবজারভার, মর্নিং নিউজ আর ডন। এর বাইরে তিনি সাহিত্যও পড়তেন। যেমন শহীদুল্লাহ কায়সারের বিখ্যাত উপন্যাস ‘সংশপ্তক’। আবার পড়তেন ইংরেজি উপন্যাসও। তাঁর লেখায় আমরা জানতে পারি সে কথা- ‘‘ঘরে এসে বই পড়তে আরম্ভ করলাম। এমিল জোলার লেখা ‘তেরেসা রেকুইন’ (ঞযবৎবংব জধয়ঁরহব) পড়ছিলাম। সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনটা চরিত্র- জোলা তাঁর লেখার ভেতর দিয়ে। এই বইয়ের মধ্যে কাটাইয়া দিলাম দুই-তিন ঘণ্টা সময়।’ এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, তিনি জেলখানার লাইব্রেরি থেকে বই এনে পড়তেন। আবার তাঁর নিজের কিছু বইও ছিল।
১৯৬৬ সালের ১৮ জুনের রোজনামচায় বঙ্গবন্ধু তাঁর জেল-জীবনের একটি মূল্যবান তথ্য দিয়েছেন। তাঁর কথায় আমরা জানতে পারি : ‘রাত কেটে গেল। এমনি অনেক রাত কেটে গেছে আমার। প্রায় ছয় বছর জেলে কাটিয়েছি। বোধহয় দুই হাজার রাতের কম হবে না, বেশি হতে পারে। আরো কত রাত কাটবে কে জানে?’ অর্থাৎ ১৯৪৯ থেকে ১৯৬৬ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত তাঁর কারাজীবনের একটি হিসাব তিনি দিয়েছেন এখানে।
জেলখানার মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা-সহমর্মিতার অনেক ঘটনার কথা জানা যায় তাঁর লেখায়। তিনি লিখেছেন, ‘২৬ সেল থেকে আমার জন্য কুমড়ার ডগা, ঝিঙ্গা, কাঁকরোল পাঠিয়েছেন। তাদের বাগানে হয়েছে। আমাকে রেখে খায় কেমন করে! আমার কাছে পাঠাতে হলে পাঁচটি সেল অতিক্রম করে আসতে হয়, দূরও কম না। বোধহয় বলে-কয়ে পাঠিয়েছেন। তারা যে আমার কথা মনে করেন আর আমার কথা চিন্তা করেন, এতেই মনটা আনন্দে ভরে গেল। এরা ত্যাগী রাজবন্দী দেশের জন্য বহু কিছু ত্যাগ করেছেন। জীবনের সবকিছু দিয়ে গেলেন এই নিষ্ঠুর কারাগারে। আমি তাদের সালাম পাঠালাম। তারা জানেন, আমাকে একলা রেখেছে, খুবই কষ্ট হয়, তাই বোধহয় তাদের এই সহানুভূতি।’
বঙ্গবন্ধুর পরিবেশিত আরেকটি তথ্যের কথা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। তা হলো জেলখানার মশা। জেলখানায় সাধারণ কয়েদিরা মশারি পেত না। (এখন পায় কি?) তিনি রোজনামচায় ৪ জুলাই, ১৯৬৬ তারিখে লিখেছেন, ‘রাতে ঘুম ভেঙে গেল, দেখলাম আড়াইটা বাজে। আমি উঠে বসে পাইপ ধরালাম। আপন মনে পাইপ টানতে আরম্ভ করলাম। মশক শ্রেণী সাঁড়াশির মতো আক্রমণ করে। তবে একটা গুণ আছে এই জেলখানার মশক শ্রেণী শূল বসিয়ে রক্ত খেতে থাকে চুপচাপ। একদিনের জন্যও বুনু বুনু শব্দ শুনি নাই। তারা ডাকাডাকিতে নাই, নীরবেই কাজ সারতে পছন্দ করে। কয়েদিরা যেমন অত্যাচার সহ্য করে, মার খায়, সেল বন্ধ হয়, ডান্ডাবেড়ি পরে, হাতকড়া লাগায়- প্রতিবাদ করার উপায় নেই, কথা বলার উপায় নেই। নীরবে সহ্য করে যায়। তাই বুঝি মশক বাহিনী বড় সাহেবদের খুশি করার জন্য শব্দ না করেই শূল বসিয়ে দেয়। জেলখানায় কত রক্ত খাবে? যত মশাই হোক, মশারি তো কয়েদিরা পাবে না। বোধহয়, তিন হাজার কয়েদির মধ্যে দুইশ’ কয়েদি মশারি পায়। রাজবন্দী আর যারা ডিভিশন পায় তারাই মশারি পায়।’ এ রকম বহু বিষয় ও ঘটনা আছে ‘কারাগারের রোজনামচা’য়।
এসবের বাইরে ভিন্ন একটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে। তিনি ১৩ জুলাই, ১৯৬৬ লিখেছেন, ‘ভারতবর্ষে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাইয়া আটজনকে হত্যা করছে।.... কংগ্রেস নেতারা সারাজীবন জেল খেটেছিলেন। গুলির আঘাত নিজেরাও সহ্য করেছেন। আজ স্বাধীনতা পাওয়ার পরে তারাই আবার জনগণের ওপর গুলি করতে একটুও কার্পণ্য করেন না। আমরা দুইটা রাষ্ট্র পাশাপাশি। অত্যাচার আর গুলি করতে কেউ কারো চেয়ে কম নয়। গুলি করে গ্রেফতার করে সমস্যার সমাধান হবে না। ভারতের উচিত ছিল গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মিরের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার মেনে নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি স্থায়ী শান্তিচুক্তি করে নেয়া।.... ভারত যখন গণতন্ত্রের পূজারী বলে নিজেকে মনে করে তখন কাশ্মিরের জনগণের মতামত নিতে কেন আপত্তি করছে?
এই ছিলেন সেদিনের অকুতোভয় সংগ্রামী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। যতদূর জানা যায়, বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর আর তিনি কাশ্মির নিয়ে কিছু বলেননি।
লেখক : সাংবদিক

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
RS Redoy Khan ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৮:০৮ এএম says : 0
বঙ্গবন্ধুর কাছেই একজন কয়েদি পাহারা থাকত তার নাম ফয়েজ। এই ফয়েজের বাড়ি কোথায়?
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন