হাকিমপুর থেকে গোলাম মোস্তাফিজার রহমান মিলন: পবিত্র কুরবানি ঈদকে ঘিরে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুরের হাকিমপুরের কামারপাড়ার লোকজন। সারা বছর খুব একটা কাজের চাপ না থাকলেও কুরবানি ঈদ উপলক্ষে তাদের কর্ম ব্যস্ততা বেড়েছে কয়েকগুন। টুংটাং শব্দে মুখরিত এখন কামারপাড়া।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বাংলাহিলি বাজার, খাট্রাউছনাহাট, জাংগইহাট ছাতনী চারমাথা, মনসাপুর, সাধুরিয়াসহ ছোট-বড় সব বাজারে সর্বত্র কামারের ব্যস্ত সময় পার করছে। কয়লার দগদগে আগুনে লোহাকে পুড়িয়ে পিটিয়ে তৈরী করা হচ্ছে দা, কুড়াল, ছুরি, চাকুসহ ধারালো সামগ্রী। কেউবা অর্ডারকৃত আর কেউ নিজে লোহাদিয়ে ধারালো সমগ্রী তৈরী করছেন।
তবে এ সব তৈরীতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি কামারের দোকানগুলোতে। পুরনো নিয়মেই চলছে লোহগলিয়ে ধারালো সামগ্রী তৈরীর কাজ। কামারেরা জানান, এ পেশায় বেশী পরিশ্রম। শ্রম অনুযায়ী তারা এর মূল্য পাচ্ছেন না। কারণ লোহার দাম বেশী। এতে জীবিকা নির্বাহে তাদের বেশ কষ্ট পেতে হয়। শুধু পরিবারে ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এ পেশাটিকে তারা এখনো আঁকড়ে ধরে আছেন। এছাড়াও সারা বছরে পরিবারে ও কৃষি জমিতে ব্যবহারের প্রয়োজনে অনেকে তা তৈরী করে নিয়ে যাচ্ছে। তবে কুরবানির পশুর জন্য বেশী প্রয়োজন হওয়ায় সবাই এখন ছুটছে কামারদের কাছে। জাংগই বাজারের সখিন কর্মকার জানান, পশু জবাইয়ের বিভিন্ন অস্ত্রের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন তার প্রতিদির ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা আয় হচ্ছে।
খাট্রউছনা বাজারের কামার দেবু কর্মকার জানান, ঈদকে সামনে রেখে তার কর্মব্যস্ততা বেড়েছে কয়েকগুন। এতে খরচ বাদ দিয়ে তার প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় হচ্ছে। একটি সাড়ে তিনকেজির লোহার দা তৈরী করে ৬০০ টাকা, কুড়াল দেড় কেজি ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা, বড় ছোরা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
তিনি আরো জানান, ঈদে যে বেচাকেনা হয় তা আর অন্য সময় হয় না। সারা বছর এসব পণ্য যে পরিমাণে বিক্রি হয়, তার চেয়ে বেশি বিক্রি হয় ঈদের সময়।
বাংলাহিলি বাজারের দিপু কর্মকার জানান, সারা বছর তার দোকানের তৈরী জিনিসের চাহিদা থাকে। কিন্তু ঈদে অনেকেই পশু কুরবানির জন্য নতুন ছুরি, চাপতি, চাকু বিক্রি বেশী হচ্ছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে চাহিদা তত বেড়ে যাবে বলেও তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন