বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৪ জেলার সাত লাখ ৭৬ হাজার ২০২ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে কৃষি পুনর্বাসন হিসেবে ১৩৬ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫১ টাকার সহায়তা দেবে সরকার।
কৃষি পুনর্বাসনের বীজ-সার ও নগদ অর্থ ইতোমধ্যে জেলায় জেলায় পৌঁছে গেছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলছেন, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কৃষি কমিটি কৃষকদের তালিকা চূড়ান্ত এগুলো বিতরণ করবে। সচিবালয়ে গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী জানান, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জের ছয় লাখ কৃষককে ১১৭ কোটি টাকার বীজ, ডিএপি ও এমওপি সার এবং নগদ এক হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
আর নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, রংপুর, নাটোর, নীলফামারী, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁগ, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, শেরপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক লাখ ৭৬ হাজার ২০২ জন কৃষক পাবে ১৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫১ টাকার গম, ভুট্টা, সরিষা, চিনাবাদাম, খেসারী ও বোরো ধান চাষের জন্য বীজ, ডিএপি ও এমওপি সার এবং শাক-সবজির বীজ।
হাওর অঞ্চলে আগামী বোরো মৌসুমে আবাদ বৃদ্ধি ও বোরো আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে এই কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। এই সহায়তা নিয়ে হাওরাঞ্চলের ছয় জেলায় ছয় লাখ বিঘা জমিতে চাষাবাদ হবে জানিয়ে মতিয়া বলেন, প্রতি হেক্টর জমিতে চার দশমিক ০৪৮ মেট্রিক টন হিসেবে তিন লাখ ২৪ হাজার ৪৯৫ টন চাল উৎপাদিত হবে।
“প্রতি মেট্রিক টন চালের বিক্রয় মূল্য ৪০ হাজার টাকা ধরে এক হাজার ২৯৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকার চাল উৎপাদন সম্ভব হবে, এতে ব্যয়ের অনুপাতে আয় হবে ১১ গুণ।” এছাড়া ১৮ জেলায় কৃষি পুনর্বাসনের ফলে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২০২ বিঘা জমিতে ছয় ধরণের শস্য চাষ হবে বলে জানান মতিয়া। তিনি বলেন, সরকারি সহায়তা নিয়ে দুই হাজার ৫৩৮ হেক্টর জমিতে আট হাজার ৪২৭ টন গম উৎপাদন করে ২৫ কোটি ২৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা আয় হবে।
“দুই হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে ২০ হাজার ৯৭০ টন ভুট্টা উৎপাদন করে ৪১ কোটি ৯৪ লাখ সাত হাজার ৩০০ টাকা আয় হবে।”
কৃষিমন্ত্রী জানান, ছয় হাজার ৭৮৭ হেক্টর জমিতে আট হাজার ৬৮৮ টন সরিষা উৎপাদন সম্ভব হবে। এতে আয় হবে ৫২ কোটি ১২ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ টাকা। আর ২৬৭ হেক্টর জমিতে ৪২২ টন চিনাবাদাম উৎপাদন করে চার কোটি ২২ লাখ ১৮ হাজার ৬০০ টাকা আয় হবে।
“৫৮৭ হেক্টর জমিতে ৬৬৬ টন খেসারী উৎপাদন সম্ভব হবে। এতে আয় হবে চার কোটি ৯৯ লাখ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা। ১০ হাজার ৯৫৬ হেক্টর জমিতে ৪৪ হাজার ৩৫৮ টন বোরো ধান উৎপাদন করে ১৭৭ কোটি ৪৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০০ টাকা আয় হবে।”
কৃষি সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ ছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন