বিএনপি চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্বে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করার প্রতিবাদ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনকালে বরিশাল গতকাল স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিলে পুলিশের বাধা ও লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের তিন নেতাকে গ্রেফতার করায় পুলিশের সাথে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ। পুলিশের বেপরোয়া লাঠি চার্জে বরিশাল জেলা ও উত্তর জেলা বিএনপির প্রতিবাদ সভা পন্ড হয়ে যায়। অপরদিকে মহানগর বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ দলীয় কার্যলয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল সকাল ১১টায় নগরীর মহিলা কলেজের গলির মুখ থেকে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি মিছিল মহানগর আহবায়ক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মীর জাহিদুল কবীর, আমিনুল ইসলাম লিমন, মাহাবুবুর রহমান পিন্টু, জাবেদ আবদুল্লাহ সাদি, রবিউল আওয়াল শাহিন, মসিউর রহমান মঞ্জু ওভূইয়া মামুনের নেতৃত্বে জেলা ও মহানগর দলীয় কার্যলয়ের দিকে আসার পথে এস,আই সাইদুল ইসলাম একদল পুলিশ ও ডিবি পুলিশ নিয়ে বাধা প্রদান করে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় পুলিশের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মীর জাহিদুর কবীরের শার্টের কলার ধরে টানা-হেচড়া শুরু করলে কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে শ্লোগান দিলে পোষাকধারী ও ডিবি পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে মীর জাহিদ, মাহাবুবুর রহমান পিন্টু, তাজমীর চৌধুরী, গফফার মোল্লা, মসিউর রহমান মঞ্জু, আমিনুল ইসলাম লিমন, জাবের আবদুল্লাহ সাদি ও বানারীপাড়া স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি সাইদুল ইসলাম আহত হয়। লাঠিচার্জকে কেন্দ্র করে এসময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। চলে পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এসময় কতিপয় স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেলও নিক্ষেপ করে।
মিছিলে বাধা প্রদানকালে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ মোঃ আওলাদ হোসেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর আহবায়ক মীর জাহিদের কানে ও গায়ে থাপ্পর দিলে জাহিদ কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। এসময় অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা জাহিদ সহ অন্য সকল নেতাদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মীর জাহিদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক মাহাবুবুর রহমান পিন্টু ও জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন রেজা খানকে আটক করে টেনে-হিচড়ে গাড়ীতে উঠিয়ে থানায় নিয়ে যায়। এসময় তাদের জামা কাপড়ও সম্পূর্ন ছিড়ে ফেলে পুলিশ।
এর আগে টাউন হলের সামনে বরিশাল জেলা দক্ষিন ও উত্তর জেলা বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ করলে এক পর্যায়ে কোতয়ালী থানার ওসি আওলাদ হোসেন একদল পুলিশ নিয়ে তাদের প্রতিবাদ সভা পন্ড করে দেয়। এক পর্যায়ে ওসি জেলা সভাপতির হাত ধরে টানাটানি করে প্রতিবাদ সভার সভাপতি সাবেক সংসদ মেজবা উদ্দিন ফরহাদ, জেলা সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আবুল কালাম শাহিনের সাথেও দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এছাড়া মহানগর বিএনপির প্রতিবাদ সভা জেলা ও মহানগর দলীয় কার্যলয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার। সরোয়ার দেশে গণতন্ত্রহীন সরকার বিরোধী দলের মিছিল মিটিং দেখলে আতঙ্কে ভুগতে থাকে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ভোটারবিহীন সরকার দলীয় পুলিশ দিয়ে বিএনপি সহ সাধারন মানুষকে পিটিয়ে বাকরুদ্ধ করে রাখতে চায়। তিনি বলেন, ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে কুকুর আর পুলিশ গিয়েছে কোন জনগণ ভোট দেয় নাই। তা মিডিয়ার প্রচারের মাধ্যমে দেশের মানুষের পাশাপাশি সারা বিশ্ব দেখেছে। তাই অবৈধ সরকার আরো একবার দলীয় পুলিশ দিয়ে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসার রঙ্গিন স্বপ্ন দেখছেন। এবার আর অবৈধ সরকারের সে স্বপ্ন পুরণ হতে দেবেনা দেশের জনগন। সরোয়ার স্বেচ্ছাসেবক দলের শান্তিপূর্ন মিছিলে লাঠি চার্যের ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিলম্বে আটক নেতাদের ছেড়ে দেয়ার দাবি জানান।
এসময় টাউন হলের সামনে কত্যর্বরত পুলিশের এস আই সাইদুল ইসলাম বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও প্রিন্ট মিডিয়াকে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিএনপিকে তাদের দলীয় কার্যলয়ের সামনে সভা করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাদেরকে মিছিল করার কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিছিল না করার জন্য নিষেধ করা হয়। তারা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে শ্লোগান দিয়ে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্য করতে বাধ্য হয় বলেও জানায় ঐ পুলিশ কর্মকর্তা ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন