খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের বিভক্ত দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ ও পথচারীসহ আহত হয়েছে অন্তত ১৩ জন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শহরের আদালত সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এসময় লাঞ্ছিত হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম সালাহউদ্দিন। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে। সংঘর্ষ থামাতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খাগড়াছড়ি পৌর শ্রমিকলীগের সভাপতি বেলাল হোসেনের উপর হামলার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার অনুসারীরা কদমতলী এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি মাষ্টারপাড়া মুখের সামনে সামনে পৌঁছালে মেয়র রফিকুল আলম অনুসারীদের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ রূপ নেয় রণক্ষেত্রে।
এসময় উভয়পক্ষ কিরিচ ও লাঠিসোটার পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্রও ব্যবহার করে। সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত আট রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে। এসময় একপক্ষের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের হাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাহউদ্দিন লাঞ্ছিত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে পুলিশ। একটি ট্রাকের গøাস ভাঙচুর করা হয়।
খাগড়াছড়ি সহকারী পুলিশ সুপার হেডকোয়ার্টার আব্দুল আওয়াল জানান, শ্রমিক লীগ নেতা বেলাল হোসেনের উপর হামলার প্রতিবাদে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলে মেয়র রফিকুল আলমের অনুসারীরা হামলা চালালে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে। তবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার অনুসারী খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী অভিযোগ করেন, তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে মেয়র রফিকুল আলমের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে। এতে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রোঠান চৌধুরীসহ পাঁচ নেতাকর্মী আহত করেছে।
অপরদিকে মেয়র রফিকুল আলম পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিনে পুলিশের সহযোগিতায় এমপি গ্রæপের সন্ত্রাসীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে তার একাধিক অনুসারীর বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে অন্তত দশজনকে আহত করেছে। গতকালও পুলিশের উপস্থিতিতে এমপির অনুসারীরা তার নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে পথচারীসহ অন্তত ছয়জনকে আহত করেছে। এছাড়া প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগও করেছেন মেয়র রফিকুল আলম।
প্রসঙ্গত, গত পৌরসভা নির্বাচনী ইস্যুতে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগে বিভক্তির সৃষ্টি হয়। সেই থেকে দুই পক্ষের মধ্যে ধারাবাহিক সংঘর্ষ চলমান রয়েছে। এ পর্যন্ত অন্তত অর্ধশতাধিক পাল্টাপাল্টি হামলা ও মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে এমপির অনুসারী পৌর শ্রমিকলীগ সভাপতি বেলাল হোসেনের উপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষ গ্রুপ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন