সরকার ইচ্ছাকৃতভাবেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও নেতাকর্মীদের জিয়াউর রহমানের সমাধিতে যেতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বিএনপিকে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে দেয়নি। এ জন্য সরকার ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে। গতকাল (মঙ্গলবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে বিএনপি। দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল ১০টায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি ছিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিবছর এ দিনটিতে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনে করেন খালেদা জিয়ার। দুর্ভাগ্যক্রমে এবারই আমরা সেই অধিকারটুকু থেকেও বঞ্চিত হয়েছি। কমনওয়েথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের একটি কনফারেন্সের বরাত দিয়ে সরকার ১৪৪ ধারা জারি করায় সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে জিয়ার সমাধিতে বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি রাখা হলেও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের সম্মেলনের কারণে অনুমতি মেলেনি। এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, আমরা মনে করি, এটা সরকার ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছে। ওই জায়গাটা (জিয়াউর রহমানের সমাধি) বাদ দিলে তো তারা (সরকার) পারত। কারণ ওই দিকটাতে তাদের খুব বেশি সম্মেলন এফেক্ট করে না। সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করেছে। আমরা যেটা বিশ্বাস করি, এই সরকার আমাদের সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো কেড়ে নিচ্ছে।
ফখরুল বলেন, সরকারের ওপর মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। মানুষ অতিষ্ঠ। দেশের জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে বিএনপি ‘আন্দোলন’ করছে। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত বিএনপি দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ‘অপশাসন’ দূর করবে, দেশে পরিবর্তন আনবে। তিনি বলেন, বিএনপি সংঘাতের পথে যেতে চায় না। সংঘাত যেন না হয়, সে জন্য বিএনপি আলাপ-আলোচনার কথা বলে আসছে। সংলাপের মাধ্যমে দেশের চলমান সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব।
দলের প্রতিষ্ঠাতার সমাধিতে যেতে না পেরে নয়া পল্টনের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন ও ‘ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প’ চালুর মধ্য দিয়ে ৭ নভেম্বর পালন করে বিএনপি। এদিকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষ্যে প্রথমে ৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। পরে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের সম্মেলনের কারণে তারিখ বদলে ১১ নভেম্বর সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয় দলের পক্ষ থেকে। গতকাল আবার তারিখ পরিবর্তন করে ১২ নভেম্বর সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। সমাবেশ করতে সরকার সহযোগিতা করবে আশা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্যথায় এটাই প্রমাণিত হবে আবারো তারা সমস্ত রাজনৈতিক দলের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, জনগণের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে এবং মুক্ত কোনো ব্যবস্থা রাখতে দিচ্ছে না।
সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক অনুমতি পাওয়া যায়নি। তবে ওই দিন সমাবেশ করা সম্ভব হবে বলে আশ্বাস পাওয়া গেছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন