স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, অনেকে ইচ্ছে করে আত্মগোপনে গিয়ে সরকারকে বিব্রত করছে। তবে যাই ঘটুক না কেন, নিখোঁজরা তাড়াতাড়ি ফিরে আসবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বুধবার ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সংস্কারকৃত অফিসের উদ্বোধন ও সদস্যদের পরিচয়পত্র প্রদান অনুষ্ঠান শেষে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতি মাসেই রাজধানী থেকে কোনও না কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী কাজ করছে। আশা করি, তাদের ফিরিয়ে দিতে পারবো। আমি সবসময় বলি, মিসিং হওয়ার পেছনে কিছু কারণ থাকে। অনেকে ইচ্ছা করে মিসিং হয়ে যাচ্ছে বা আত্মগোপনে গিয়ে আমাদের বিব্রত করছে। এ ধরনের মিসিংয়ের সুরাহা করা গোয়েন্দাদের জন্য একটু কষ্টকর। তারপরও আশা করি, তাদের ফিরিয়ে আনতে পারবো।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের নিখোঁজের বিষয়ে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘সম্পূর্ণ খবর আমার কাছে নেই। তবে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেবো। একজন লোক মিসিং হয়ে যাবে আর আমাদের আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা বাহিনী বসে থাকবে এটা হতে পারে না। অবশ্যই আমরা দেখবো কেন ও কিভাবে মিসিং হয়েছে।
পুলিশ সদস্যদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারাই অনিয়ম করছে, তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে। সে যেই হোক, পুলিশ হোক বা নিরাপত্তা বাহিনীর; কেউই ছাড় পাচ্ছে না।
এর আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) কনফারেন্স রুমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশংসা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন,রোহিঙ্গা ইস্যুটি যেভাবে আপনারা তুলে ধরেছেন, সেজন্যই বিশ্ব জানতে পেরেছে। বাংলাদেশের মানুষ মানবতার মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সবাই মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধি দিয়েছে।
সুন্দরবনে জলদস্যুদের প্রতিরোধেও একজন সাংবাদিকের প্রশংসা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আপনারা যে উপকার করেন তাতে সাধুবাদ দিলে বা প্রশংসা করলেই শেষ হবে না। আপনারা কাজ করছেন বলেই সবকিছু সহজ হয়ে যাচ্ছে। আপনাদের ত্যাগ, উপকার সবাই মনে রাখে ও স্বীকার করে। আপনাদের মানুষ সম্মান করে।
সম্প্রতি পুলিশের কর্মকর্তারা চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছেন, এতে বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেখুন আমরা কি সবাই মাথা উঁচু করে বলতে পারি যে, সবাই সবকিছুর ঊর্ধ্বে? লক্ষণীয় বিষয় যারা অন্যায় করছে তারা পার পাচ্ছে কি না। তাদের বিচার হচ্ছে কি না, শাস্তি হচ্ছে কি না। যারা অন্যায় করে, পুলিশ বাহিনী হোক কিংবা নিরাপত্তা বাহিনী কিংবা যেখানেই হোক কাউকে কিন্তু ক্ষমা করা হচ্ছে না। আমাদের সংসদ সদস্যরাওতো ক্ষমা পাচ্ছেন না। কাজেই যেই অন্যায় করুক, পুলিশ করুক যেই করুক কেউ ক্ষমা পাবে না।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ-সাউথের শিক্ষক মোবাশ্বের হাসান সিজারকে উদ্ধারে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, কেউ নিখোঁজ হয়ে যাবে আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বসে থাকবে এটাতো কাম্য নয়। অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেন নিখোঁজ হয়েছেন, কীভাবে নিখোঁজ হয়েছেন এবং তার উদ্ধারের প্রচেষ্টা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী নেবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে রামপুরার বাসা থেকে সিজার বের হয়ে রাতে ফেরার কথা থাকলেও আর ফেরেননি। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন তার বাবা মোতাহার হোসেন। খিলগাঁও থানার সাধারণ ডায়েরি নম্বর-৪৭১।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নিখোঁজ হওয়ার পেছনে কিছু কারণ থাকে। অনেকে ইচ্ছা করে নিখোঁজ হন, অনেকে আত্মগোপন করে অনেককে বিব্রত করতে চান। এই ধরনের নিখোঁজ হলে গোয়েন্দাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়।
চাঞ্চল্যকর অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসামির কাছে কি ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড অনেকটা অধরায় রয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমাদের গোয়েন্দারা অত্যন্ত তৎপর। তারা সূত্র ধরতে ধরতে মূল আসামিকে ধরে ফেলেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মূল আসামি অনেক তথ্য দিয়েছেন। সে তথ্যগুলো আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী ধারাবাহিকভাবে কিছুদিনের মধ্যেই আপনাদের জানাবে। আমরা প্রতিদিনই নতুন তথ্য পাচ্ছি, সেগুলোও জানিয়ে দেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন