স্বরূপে আসছে পৌষের শীত : বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা টেকনাফে ৫১ মিমি
বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : চলতি জানুয়ারি (পৌষ-মাঘ) মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে একটি মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সময় তাপমাত্রার পারদ নেমে যেতে পারে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা নেমে আসতে পারে ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সে.। তাছাড়া দেশের অন্যত্র ২-৩টি মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সে.) থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস প্রদানের লক্ষ্যে গতকাল (সোমবার) বিকেলে আবহাওয়া বিভাগের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে জানুয়ারি মাসের উপরোক্ত পূর্বাভাস প্রদান করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও কমিটির চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমেদ।
এদিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাতের তাপমাত্রা ক্রমেই হ্রাস পেতে পারে। রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কোথাও কোথাও শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এর পরের ৫ দিনে রাতের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। ফলে স্বরূপে ধেয়ে আসছে পৌষের স্বাভাবিক শীত। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় টেকনাফে সর্বোচ্চ ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারে ১৯ মিমি বৃষ্টি হয়। এ সময় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল স›দ্বীপে ৩০.৩ ডিগ্রি সে.। সর্বনিম্ন তেঁতুলিয়ায় ৯.৭ ডিগ্রি সে.। ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬.৮ এবং ১৫.৬ ডিগ্রি সে.।
বিশেষজ্ঞ কমিটির সভা সূত্রে পূর্বাভাসে আরও জানা গেছে, চলতি জানুয়ারি মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। তাছাড়া দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি আকারে কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশা পরিস্থিতি কখনও কখনও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়, জানুয়ারি মাসে দেশে দৈনিক গড় বাষ্পীভবন ২.২৫ থেকে ৩.২৫ মিলিমিটার এবং গড় সূর্য কিরণকাল ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে। জানুয়ারি মাসে সার্বিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গত ডিসেম্বর (অগ্রহায়ণ-পৌষ) মাসে সারাদেশে স্বাভাবিক হারের তুলনায় ৩৮৫ শতাংশ তথা অস্বাভাবিক বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে রংপুর বিভাগে কোনো বৃষ্টিপাতই হয়নি। এরআগে গত নভেম্বর মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭০ ভাগ কম বৃষ্টিপাত হয়। অথচ অক্টোবরে ৭৬ ভাগ বেশি বৃষ্টি ঝরে।
গত ডিসেম্বর মাসে সারাদেশের আবহাওয়া পরিস্থিতির পর্যালোচনায় বিশেষজ্ঞ কমিটি জানায়, গত মাসে বিভিন্ন সময়ে বঙ্গোপসাগর, আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ-নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। এর সক্রিয় প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত মাসে বায়ুমন্ডলের নিম্নস্তরে জলীয়বাষ্পের জোগান বেশী থাকায় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কোথাও কোথাও কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
এদিকে সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং সিলেট, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন