সারাদেশের ন্যায় রাজধানীতেও শীতের তীব্রতা বেড়েছে। রোববার রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা রাজধানীতে এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এছাড়া রাজধানী ছাড়া ঢাকা বিভাগের প্রায় সব এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। অর্থাৎ রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি বা তার নিচে নেমেছে।
সারাদেশে ঠাণ্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত। তবে তীব্র ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে দেশের অন্তত ৪০ জেলার বাসিন্দা। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার জনজীবন। শনিবার শুধু কুড়িগ্রাম ও শ্রীমঙ্গলে মৃদু মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ ছিল।
একদিনের ব্যবধানে রোববার তা অন্তত ৪০ জেলায় বিস্তার লাভ করেছে। বিভিন্ন জেলায় রাতের তাপমাত্রা কমেছে ৪-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ সর্বোচ্চ ৩৭ জেলায় বিস্তার লাভ করেছিল। তখনও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল এই রাজারহাটেই ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তারপর রবিবারই প্রথমবার এরচেয়ে কম তাপমাত্রা রেকর্ড হল। তাই বলা যায়, চলমান শৈত্যপ্রবাহ এ মৌসুমের সবচেয়ে বিস্তৃত এবং তীব্র মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ।
তীব্র শীতে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষদের ভোগান্তি বেড়েছে। হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। পাশাপাশি ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে সোম ও মঙ্গলবার। এ সময়ে চট্টগ্রাম ও বরিশালের আরও কিছু এলাকায় বিস্তার হতে পারে শৈত্যপ্রবাহ।
অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান রবিবার রাতে জানান, উত্তরের বাতাস বেড়ে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। চলমান শৈত্যপ্রবাহ আগামী দুইদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময়ে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের আরও কিছু নতুন এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ বিস্তার লাভ করতে পারে। একইসঙ্গে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও আরও কমার শঙ্কা রয়েছে। দুদিন পর থেকে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাসে অধিদপ্তর জানায়, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী জেলার উপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অন্যত্র ও টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, নিকলি, শ্রীমঙ্গল, খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, বরিশাল এবং ভোলা অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরণের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
ঢাকার বাইরে পুরো রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। এরমধ্যে রংপুরের কুড়িগ্রাম ছাড়া সব জেলায় বইছে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ।
রবিবার সারাদেশেই দিনের তাপমাত্রা সামান্য বেড়েছে। যদিও এখনো অধিকাংশ এলাকায় দিনের তাপমাত্রা ২২-২৩ ডিগ্রির নিচে রয়েছে। হিমালয়ের ঠান্ডা বাতাসে রংপুরের সব জেলায় দিনের তাপমাত্রাও অনেক কমেছে।
এদন নীলফামারীর ডিমলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মাত্র ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন আরও কম ছিল তাপমাত্রা। ওইদিন ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। রবিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে টেকনাফে ২৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন রাজধানীতে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং অন্যত্র প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন