৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি না দেয়ার প্রতিবাদে আগামীকাল ৬ জানুয়ারি শনিবার ঢাকা মহানগরীর থানায় থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এ তথ্য জানান।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্র হত্যাকারী দল তার আর একটি প্রমান হলো-আজ বিএনপি-কে সমাবেশ করতে বাধা দেয়া। তারা যদি গণতান্ত্রিক রীতি-নীতিতে ন্যুনতম বিশ্বাসী দল হতো তাহলে বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে বাধা দিতো না। এর মাধ্যমে সরকারের গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রে স্বীকৃত বিরোধী দলের অধিকারের ওপর দুর্বৃত্তমূলক আচরণের বহি:প্রকাশ ঘটেছে। মূলত বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার গণতন্ত্রের নিষ্ঠুর প্রতিপক্ষ। তাদের বাকশালী প্রেতাত্মা আরো বিধ্বংসী রূপ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। আওয়ামী দখল আর লুটপাট চিরস্থায়ী রূপ দিতে তারা বিরোধীদলশুন্য রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতে চাচ্ছে। অথচ আজ আওয়ামী লীগ ঢাকায় দু’টি সমাবেশ করবে, আর বিএনপিসহ বিরোধী দলকে সমাবেশ করতে বাধা দেয়া হলো।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিতর্কিত ও কলঙ্কিত নির্বাচনকে আড়াল করার জন্যই আজ বিএনপি’র কর্মসূচি পালনে বাধা দিতে পোড়া মাটি নীতি অবলম্বন করেছে। ভোটারবিহীন সেদিনের নির্বাচন দেশে বিদেশে যা বিতর্কিত ও কলঙ্কিত নির্বাচন হিসেবে গণ্য হয়েছে, কেউ তাদের সেই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়নি বলেই তাদের এই লজ্জা ঢাকতে বিএনপিসহ বিরোধী দলের কণ্ঠরোধ করতেই আজকের কর্মসূচি দুর্বিনীত কায়দায় বাধা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল উপাদান ছিল গণতন্ত্র। আর এই গণতন্ত্র হচ্ছে বহু মত ও পথের বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়া। কিন্তু আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মূলত আওয়ামী চেতনা, তারা বহুমাত্রিকতা ও বৈচিত্র্যে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অন্তর্নিহিত উপাদান হচ্ছে তাদের নিজেদের লোভ, দুর্নীতি ও দখলবাজী অব্যাহত রাখা। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠবে বলেই তারা বিরোধী দল সহ্য করতে পারে না। সরকারের লোভ ও দুর্নীতির প্রকোপে প্রতি বছর দেশ থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। দেশে যখন দীর্ঘদিন ধরে একরকম কোন বিনিয়োগই নেই তখন এই অর্থ পাচারে স্পষ্ট প্রমাণিত হয় দেশ চলছে গণবিরোধী লুটেরাদের রাজত্ব। আদিম অমানবিকতার মনোবৃত্তি নিয়ে গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ছাড়াও দুর্নীতি ও অনৈতিক উপায়ে অর্থ উপার্জন এবং এর ফলশ্রুতিতে মালয়েশিয়ায় আলোচিত সেকেন্ড হোম ও কানাডায় বেগম পাড়া তৈরি ইত্যাদি আড়াল করে রাখতেই বিরোধীদলহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে বর্তমান বিনা ভোটের সরকার। আর এ কারণেই বিএনপি-কে আজ ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যার কালো দিবসের কর্মসূচিতে উন্মত্ত সন্ত্রাসী দলের ন্যায় আচরণ করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন