কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণ শুরু
চট্টগ্রাম ব্যুরো : ৩৬ হাজার কোটি টাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মধ্যদিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালী মাতারবাড়িতে নির্মিত হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ দ্রæত এগিয়ে চলেছে। এ প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য বন্দরটিই পরবর্তীতে গভীর সমুদ্র বন্দরে রূপান্তরিত করা হবে। শুক্রবার মাতারবাড়িতে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে এমন তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে মাতারবাড়ির এই প্রকল্প এলাকা। এর আগে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর করার কথা বললেও পরে সে অবস্থান থেকে সরে আসে সরকার। চলতি মাসের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মহাপ্রকল্পের নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাতারবাড়িতে ১২শ’ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফার্য়াড পাওয়ার প্রজেক্টের অগ্রগতির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এখানে একটা ডিপ সি পোর্ট তৈরি হচ্ছে ড্রেজিং করে। ১৭ মিটার ড্রাফট এখানে। এখানে ১২শ’ মেগাওয়াট এর কোল (কয়লা) পাওয়ার প্ল্যান্ট হচ্ছে, কোল টার্মিনাল নির্মিত হচ্ছে। কেবল তাই না ভবিষ্যতে একটা এলএনজি টার্মিনাল করব ল্যান্ড বেস (ভূমিতে)। মাতারবাড়িতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের অংশ হিসেবে যে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হবে, তা বিশ্বের সর্বাধুনিক আর্টিফিশিয়াল ডিপ সি পোর্ট হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা হবে এনার্জি-পাওয়ার ডিপ সি পোর্ট। যেটা শুরুতে পাওয়ার, এনার্জি ও কোলের জন্য ব্যবহার করব। পরবর্তীকালে এটার এক্সটেনশন একটা গভীর সমুদ্র বন্দর হবে মাল্টিপারপাস ইউজের জন্য। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর করার লক্ষ্য ধরেই এই প্রকল্পটিতে ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। মাতারবাড়িতে জাপান সরকারের ঋণ সহায়তায় বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ঠিকাদারি সংস্থা জাপানি কনসোর্টিয়াম। প্রকল্পটির দ্বিতীয় প্যাকেজের অংশ হিসেবে ১৪ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ, ২৫০ মিটার চওড়া এবং সাড়ে ১৮ মিটার গভীরতার সমুদ্র চ্যানেল নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কোল পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের এমডি আবুল কাশেম। এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের অংশ হিসেবে কোল লোডিং-আনলোডিং এর জন্য জেটি, কোল স্টোরেজ ইর্য়াড এবং অ্যাশ পন্ড নির্মাণ করা হবে। প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এখানে জায়গা রাখা হচ্ছে ল্যান্ড বেসড এলএনজি টার্মিনাল এবং কোল টার্মিনাল করার জন্য। এই কোল টার্মিনাল হলে পরে সারা বাংলাদেশে যতগুলো কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে সেখানে খুব সহজে কয়লা সরবরাহ দিতে পারব। এই প্রকল্পে প্রতিদিন ৮-১০ হাজার টন কয়লা লাগবে। পরে আরও বেশি কয়লা আমদানি করা হবে যা বিভিন্ন কেন্দ্রে সাপ্লাই করব। প্রতিমন্ত্রী জানান, মাতারবাড়িতে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পাশপাপাশি চলতি বছরের এপ্রিল থেকে গভীর সাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এই এলাকা জুড়ে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করারও পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন