৯০ দশকে জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল ‘সোর্ড অব টিপু সুলতানের’ সঙ্গে পরিচিত বাংলাদেশের অনেকেই। সোর্ড অব টিপু সুলতানের সেই মহারাজার রাজত্ব যে এক সময় ছিল কর্নাটকেই! ব্যাঙ্গালুরে পা রেখে সেটাই জেনে গেলাম। মহীশুরুরের সর্বশেষ স্বাধীন এই মহারাজার স্মৃতি ব্যাঙ্গালুরুর এখানে সেখানে আছে ছড়িয়ে। ‘মহীশুরুরের বাঘ’ নামে পরিচিত বৃটিশদের যম টিপু সুলতানকে জানতে হলো লালবাগ বোটানিক্যাল গার্ডেনে এসে। নগর জীবনের কোলাহল থেকে বৃক্ষরাজির সঙ্গে কিছুক্ষনের জন্য মিতালী করতে এখন যে চিন্তাটা করছে নগরবিদরা, ২৬০ বছর আগে সেই চিন্তাটাই করেছিলেন মহীশুরুরের মহারাজা টিপু সুলতান। আইডিয়াটা অবশ্য তার বাবা হায়দার আলীর। বাবার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে ব্যাঙ্গালুরুতে ২৪০ একর জায়গার উপর নির্মান করেছিলেন বোটানিক্যাল গার্ডেন, সেটা ১৭৫৬ সালের কথা। কালের বিবর্তনে সেই সৃস্টির পরিচয় এখন লালবাগ বোটানিক্যাল গার্ডেন। একটি পার্কই এখন সবুজ বৃক্ষরাজি এবং ফুলের সমারোহে পর্যটকদের আকর্ষনীয় স্পট!
লেক, পাথরের পাহাড়, সারি সারি ফুলে ফুলে ছেঁয়ে যাওয়া পথ,হাজার হাজার অর্কিড,ক্যাকটাস,পাখির অভয়ারন্যÑসবই আছে এখানে। মহীশুরুরের পতনে বৃটিশ সা¤্রাজ্য চেপে বসে এই বোটানিক্যাল গার্ডেনকে আরো আকর্ষনীয় করে তুলেছে। গড়ে তুলেছে এখানে গ্লাস হাউজ। ১৮৮৯ সালে ব্যাঙ্গালুরুর সুপারেনটেন্টড স্যার জন ক্যামেরুন এই বোটানিক্যাল গার্ডেনের সৌন্দর্য বধনে ১৭ হাজার বর্গমিটারের গ্লাস হাউজ করেছেন নির্মান। সেই থেকে এই গ্লাস হাউজটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যে একটা জায়গা করে নিয়েছে। বছরে ২ বার এখানেই বসে ফুল প্রদর্শনী, সঙ্গে স্থানীয় সব ফল প্রদর্শনীও। জানুয়ারি এবং আগস্টে সপ্তাহব্যাপী মেলাটি হয় মূলত এই দু’টি উৎসবকে ঘিরে। এবং তার জন্য বেছে নেয়া হয়েছে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস এবং জাতীয় দিবসকে। ফুলের মেলা দেখার সৌভাগ্য হয়নি ঠিকই, তবে বর্হিগমনের পথটি পুরোটাই হরেক রকমের ফুলের গাছ এবং বাগান দিয়ে সাজানোÑঠিক যেনো হল্যান্ডের রাজধানী আর্মস্টারডামের মতোই পরিকল্পিত। হাঁটতে হাটতে,পুরো বোটানিক্যাল ঘুরে ঘুরে দেখতে লেগে যাবে কম করে হলেও তিন ঘন্টা। পথিমধ্যে পানির তেস্টাতে কস্ট পেতে হবে না কাউকে। সুইট ড্রিংকিং ওয়াটার স্পট যে এখানে সেখানে অজ¯্র। বৃদ্ধ,বৃদ্ধ এবং শিশুদের পার্কে চলাফেরার জন্য আছে বিশেষ বাহনও ! ২০ রুপীর টিকিট কেটে এমন প্রকৃতিরাজ্যে ঘুরতে মন চায় না কার বলুন?
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন