বিশেষ সংবাদদাতা : প্রবাস থেকে দেশে ফিরে টাকা মাদক ব্যবসায় লগ্নি করেন টঙ্গীর আক্তার হোসেন মিম (৩৫) ও তার চাচাতো ভাই আসিবুর রহমান (২৭)। তবে বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা। ফলে গত ১২ ডিসেম্বর রাতে তাদের দুই ভাইকে হত্যা করা হয়। মামলায় ছায়া তদন্তকারী র্যাবের হাতে ৫জন গ্রেফতারের পর এই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। র্যাব-১ এর সদস্যরা গত বুধবার রাতে টঙ্গীর দত্তপাড়া ধুমকেতু স্কুলের সামনে থেকে হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হুমায়ুন কবিরসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। অন্যরা হলো- জুয়েল শিকদার (১৯), জীবন (২৯), বিল্লাল হোসেন (১৮) ও রবিউল রবু (১৮)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ও ম্যাগজিন, সাত রাউন্ড গুলি, একটি চাপাতি, ছুরি, ২৪৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত হুমায়ুন এবং বিল্লাল টঙ্গীর স¤্রাট হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক ও ছিনতাই মামলা রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, বিগত ৪-৫ বছর ধরে গ্রেফতারকৃত হুমায়ুনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের সংঘবদ্ধ একটি চক্র টঙ্গীর এরশাদ নগর ও দত্তপাড়ায় মাদক ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল। হুমায়ুনের এ গ্রæপটি দত্তপাড়ায় দুর্ধষ সন্ত্রাসী গ্রæপে পরিচিত। তারা মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। তিনি বলেন, নিহত আসিবুর ও আক্তার হোসেন ওই এলাকায় মাদক ব্যবসার উদ্দেশ্যে একটি সন্ত্রাসী গ্রæপ তৈরি করে। এর আগে আক্তার সাত বছর দুবাই ছিলেন। দুবাই থেকে গত দুই বছর আগে দেশে ফিরে একটি ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করেন। হত্যার দুই মাস আগে ওই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। অন্যদিকে, আসিবুর চার বছর ইতালিতে ছিল। গত ৮-৯ মাস আগে তিনি দেশে আসেন। মুফতি মাহমুদ বলেন, দুই ভাই দ্রæত বিত্তশালী হতেই মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। এলাকার মাদক ব্যবসা তারা দ্রæত নিয়ন্ত্রণে নেয়। এতেই হুমায়ুন গ্রæপের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। একপর্যায় হুমায়ুন তাদের হত্যার পরিকল্পনা করে। এর আগেরও হুমায়ুন দুই ভাইকে বেশ কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করেছিল। উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গী থানার দত্তপাড়ার ইশানাদি সরকার রোডের নির্মাণাধীন ভবনের নিচতলায় আক্তার হোসেন মিম (৩৫) ও তার চাচাতো ভাই আসিবুর রহমানকে (২৭) ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে ১৪ ডিসেম্বর টঙ্গী থানায় ১৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন