বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা সমাপ্ত

মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. হেদায়েত উল্লাহ, টঙ্গী থেকে : | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:২৭ পিএম, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৮

বিশ্ব মুসলিমের শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা
বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে টঙ্গীর তুরাগ তীরে দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো এতদঞ্চলের বৃহত্তম মুসলিম সমাবেশ তাবলীগ জামাত আয়োজিত ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা। গতকাল রোববার সকাল ১০টা ১৯ মিনিটে শুরু হয়ে ১০টা ৪৫মিনিট পর্যন্ত ২৬ মিনিটের আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশ্ব তাবলীগ জামাতের অন্যতম শীর্ষ মুরুব্বী বাংলাদেশের কাকরাইল মসজিদের খতিব হাফেজ হযরত মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের। বাংলা ও আরবি ভাষায় এ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। মোনাজাতে জীবনের সকল গুণা মাফ, কবরের আযাব ও জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি ও জান্নাত নসিবের জন্য আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানানো হয়। আখেরী মোনাজাতে দক্ষিণে বিমানবন্দর ও উত্তরে টঙ্গী কলেজ গেইট, পূর্বে পূবাইল মাজুখান ও পশ্চিমে আশুলিয়া চৌরাস্তা পর্যন্ত এবং ইজতেমা ময়দান ও আশেপাশে খোলা জায়গায় সমবেত মুসল্লিরা ‘আমিন আমিন, ‘ইয়া আল্লাহু’ ‘ইয়া আল্লাহু’ ধ্বনিতে মুখরিত করে তুলেন। আল্লাহর দরবারে আকুতি জানিয়ে দুনিয়ার কৃতকর্মের জন্য নিঃশার্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন তারা। এসময় লাখ লাখ মুসল্লী কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আখেরী মোনাজাতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে অংশ নেন, স্থানীয় এমপি মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. আজমত উল্লা খানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।

ইজতেমা ময়দানে তাবলীগ জামাতের ধর্মীয় সমাবেশে দেশী-বিদেশী মুসল্লিদের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও আশপাশের জেলার কয়েক লাখ মুসল্লী বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে এ আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। গতকাল রোববার টঙ্গীর আবহাওয়াও ছিল অনুকূলে। শীতের তীব্রতাও প্রথম পর্বের চেয়ে তুলনামূলক কম ছিল। ফলে দ্বিতীয় পর্বে মুসল্লিদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে বেশি লক্ষ্য করা গেছে। আখেরি মোনাজাতেও মুসল্লিদের উপস্থিতি প্রথম পর্বের চেয়ে বেশী ছিল।
গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারী) বাদ ফজর বাংলাদেশের মাওলানা ফারুক হোসেনের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবারের ৫৩তম ইজতেমার দ্বিতীয়পর্ব। অত্যন্ত ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে ইবাদত বন্দেগি, জিকির আর কোরআন-হাদিসের আলোকে হেদায়েতী বয়ানের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয় তিনদিন ব্যাপী দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা। গতকাল রোববার সকালে বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিনের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মোনাজাতের প্রস্তুতি কার্যক্রম। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় ১৪টি জেলার মুসল্লিরা ২৮টি খিত্তায় বিভক্ত হয়ে অংশ নেন।

এর আগে একই ময়দানে গত ১২ জানুয়ারী শুরু হয়েছিল বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। প্রথম পর্বে ঢাকার একাংশসহ ১৬ জেলার মুল্লিরা অংশ নেন। ১৪ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছিল প্রথম পর্ব। এদিকে আখেরী মোনাজাতে যোগ দিতে ভোর থেকে মানুষ ছুটতে থাকে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের দিকে। ইজতেমা প্যান্ডেলসহ আশপাশের এলাকা মানুষে মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে যায় মোনাজাত শুরুর আগেই। ছুটে আসা মুসল্লীরা আল­াহর দরবারে গুণাহ মাফের জন্য কান্নাকাটি করেছেন অজরধারায়। মোনাজাতে মানুষের আল্লাহর দরবারে আহাজারিতে টঙ্গীর পুরো এলাকা রূপ নেয় আবেগণ এক ধর্মীয়নগরীতে। নিজের গুণা মাফের জন্য দু’হাত তুলে আল্ল­াহর দরবারে কান্নাকাটি করেন আবাল,বৃদ্ধ বনিতা সকলেই। মোনাজাত শুরুর পূর্বে লাখ লাখ মানুষ রাস্তার উপর, বাড়ির ছাদে, বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে বসে মোনাজাতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। দোয়ায় নবী করিম (সা:) এর তরীকা মনের মধ্যে পয়দা করার তৌফিক দান, গুণাগার বান্দাদের দোয়া কবুল, গুণা মাফ করে জানমাল কোরবানী দেওয়ার তৌফিক দান, মুসলমানদের জানমাল হেফাজত, মুসমানদের দেশকে হেফাজত, ইমানী জিন্দেগী, ইমান আখলাককে কবুল, দ্বীনের কাজকে মজবুত করে দেয়া, আল্ল­াহ হাবিবের সুন্নতের পথে চলার তৌফিক দান, নবীর সুন্নতকে নসিব করার, নবীর হাওজে কাউসারের পবিত্র পানি পান করার নসিব এবং আমলনামা ডান হাতে দেওয়ার ও দ্বীনের পথে এবং আখিরাতকে শান্তিময় করার জন্য লাখো মুসল্ল­ী দু’হাত তুলে দোয়ায় অংশ নেন।

মুসল্লীদের বাড়ি ফিরতে যানবাহন সংঙ্কট : আখেরী মোনাজাত শেষে লাখো মুসল­ীগণ তাদের নিজস্ব গন্তব্যে যেতে যানবাহন সংঙ্কটে পড়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হন। মোনাজাত শেষে লাখ লাখ মুসল্ল­ী ইজতেমা ময়দান থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে স্রোতের মতো এক সাথে ফিরতে শুরু করলে এক পর্যায়ে ময়দানের চতুর দিকে ৬/৭ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকায় মানব বলয় সৃষ্টি হয়। সড়ক-মহাসড়কগুলোতে মুসল্ল­ীর বাড়ি ফেরার স্রোতে কোন যানবাহন চলাচল করতে না পারায় মুসল্লীরা পায়ে হেঁটে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেন। এদিকে টঙ্গী থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার ও টঙ্গী থেকে পূবাইল পর্যন্ত ৫কিলোমিটার, টঙ্গী-আব্দুল­াহপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার, টঙ্গী থেকে আশুলিয়া সড়কের ৫/৬ কিলোমিটার পর্যন্ত এজতেমামুখী সকল যানবাহন চলাচল মুসল­ীদের মোনাজাত শেষে বাড়ি ফেরার জন্য বন্ধ রাখা হয়। এতে মুসল্ল­ীরা পায়ে হেঁটেই ওই সকল দূরত্বের পথ পাড়ি দিয়ে মোনাজাত শেষে যে যার গন্তব্যে পৌঁছতে দেখা যায়।

আখেরী মোনাজাতে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার মহিলা মুসল্ল­­ীও আগের দিন রাত থেকে ইজতেমা ময়দানের আশেপাশে, বিভিন্ন মিলকারখানা, বাসা-বাড়িতে ও বিভিন্ন দালানের ছাঁদে বসে আখেরী মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা যায়। ইজতেমায় মহিলাদের জন্য আলাদা কোন ব্যবস্থা না থাকায় যে যেখানে পেরেছেন সেখানে বসেই লাখো মুসল্লীর সাথে মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা গেছে। আখেরী মোনাজাতের সময় বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও মোবাইলের মাধ্যমে বাড়ি-ঘরে বসে লাখ লাখ নারী-পুরুষ ও শিশু আখেরী মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা যায়।

এবারের বিশ্ব ইজতেমায় নজীরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ৮ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ৭হাজারের অধিক পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি দায়িত্বরত ছিল সাদা পোশাকি গোয়েন্দা পুলিশ। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে আকাশে র‌্যাবের হেলিকপ্টার টহল, নৌ-পথে স্পীড বোটে সতর্ক টহল ও নজরদারী। আকাশ ও নৌ-পথের পাশাপাশি সড়ক পথগুলোতে খালি চোখ ছাড়াও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে বাইনোকুলার দিয়ে মুসল্ল­ীসহ সকলের চলার পথ ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এসব কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে স্থাপিত র‌্যাবের প্রধান নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে মনিটরিং করা হয়েছিল। গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার হারুন-অর-রশিদ বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে এ নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন।
বিশ্ব তাবলীগ জামাতের মুরুব্বীগণ জানান, বিশ্বে তাবলীগের দাওয়াত পৌঁছে যাওয়ায় পর্যায়ক্রমে ইজতেমায় শরীক হওয়া মুসল্ল­ীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানের সময় টঙ্গী তুরাগ তীরের এ বিশাল ময়দানেও স্থান সংকুলান হচ্ছে না। আগত মুসল্ল­­ীদের যাতায়াতের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীদের অসুবিধা ও দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ২০১১ সাল থেকে দুই দফায় ইজতেমা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়। যাঁরা প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেননি। প্রথম পর্বের আখেরী মোনাজাত শেষে মুসল্ল­ীগণ ময়দান ছেড়ে দেওয়ার পর মাঝে ৪দিন বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শুরু হয়।
গাজীপুর জেলা তথ্য কর্মকর্তা এসএম রাহাত হাসনাত জানান, ভীড়ের কারণে যারা মূল ময়দানে যেতে পারবেন না, আখেরি মোনাজাতে তাদের শরিক হতে টঙ্গীর মধুমিতা রোড, টঙ্গী বিসিক এলাকা, নোয়াগাঁও এবং চেরাগআলী, টঙ্গী স্টেশন রোড, রেল স্টেশন, মেঘনা রোড, কামারপাড়া, উত্তরা বিমানবন্দর সড়ক এর আশপাশের প্রায় ১০কিলোমিটার পর্যন্ত অতিরিক্ত মাইকের সংযোগ দিয়ে মোনাজাত শোনার ও অংশ নেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।
আখেরী মোনাজাত শেষে চিল্লায় নাম লেখানো জামাতবন্দী মুসল­ীরা ঢাকার কাকরাইল মসজিদে গিয়ে রিপোর্ট করে তাবলীগের মুরুব্বীদের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী জামাতবন্দী হয়ে দ্বীনের দাওয়াতী মেহনতে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়বেন। এসব জামাতবন্দীদের মধ্যে ৪০দিন, ৩ মাস, ৬ মাস, ১ বছর চিল্ল­াধারী মুসল­­ীগণ রয়েছেন। তারা বহিঃবিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা শহর এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে দাওয়াতি কাজে দ্বীন ও ইসলামের মেহনত করবেন।
যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় :
আখেরী মোনাজাতে অংশ নিতে সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে দলে দলে মুসল্লী­রা ইজতেমা ময়দানের দিকে ছুটতে থাকেন। প্রধান সড়কে গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় মোনাজাতে শরিক হতে পায়ে হেঁটেই রওনা দেন অনেক মুসল্লী­। রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে এসব যানচলাচল বন্ধ থাকে। তাই এ রাস্তায় পায়ে হেঁটেই পৌঁছানোর চেষ্টা ছাড়াও অনেকে ইজতেমা ময়দানে পৌঁছাতে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল, পিকআপ, সিএনজি অটোরিকশা বা ভ্যানগাড়িতে গাদাগাদি করে চেপে বসেন। মুসল্লী­দের ইজতেমা ময়দানে পৌঁছে দিতে নিজের ব্যক্তিগত মোটরসাইকলে নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন অনেকেই। তারা ভাড়ার বিনিময়ে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে আব্দুল­াপুর পর্যন্ত মুসল্লীদের পৌঁছে দেন ১০০ টাকার বিনিময়ে। এছাড়া সিএনজি অটোরিকশায় জনপ্রতি ভাড়া নেয়া হয় ৫০ টাকা। আর পিকআপ ও প্যাডেলচালিত ভ্যানে বিমানবন্দর পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া নেয়া হয়েছে ২০ টাকা করে।
একই মোটরসাইকেলে চড়ে আব্দুল­াহপুর গিয়ে মোনাজাতে অংশ নেয়া মুসল্লী আব্দুর রহমান জানান, খিলগাঁও থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত বাসে চড়ে এসেছি। এরপর থেকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেলে করেই আসলাম। কিন্তু সুযোগ বুঝে এরা ভাড়া বেশি আদায় করেছে। আব্দুল­াহপুর পর্যন্ত ১০০ টাকা না হয়ে ৫০ টাকা হওয়া উচিত ছিল বলেও তারা অভিযোগ করেন। এছাড়া অনেকেই সিএনজি অটোরিকশা, পিকআপ, প্যাডেলচালিত ভ্যানগাড়িতে চড়ে ইজতেমার দিকে এগিয়ে যান। এছাড়া দূর পাল্লার গাড়ীগুলো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছে বলে মুসল্লীরা জানায়।

ইজতেমা ঘিরে ছিল জমজমাট মৌসুমি ব্যবসা :
টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে বাহারি সব পণ্যের ব্যবসা খুলে বসেছিলেন স্থানীয় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি হকার ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ছিল জমজমাট ব্যবসা। টঙ্গীর তুরাগ পাড় ছাড়াও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা রাস্তার দুই পাশে তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন। ইজতেমার আখেরি মোনাজাত শেষে মুসল্লী­রা পায়ে হেঁটেই ফিরছেন অনেকেই। এসব মুসল্লী­দের জন্য রাস্তার দু’পাশে বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। রাস্তার দুপাশে বসে এমন অসংখ্য অস্থায়ী দোকান। সেখানে বিক্রি হয় আতর, টুপি-জায়নামাজ, তসবিহ, চাদর, কম্বল ও জ্যাকেটসহ নিত্যপণ্যের সকল দ্রব্যসামগ্রী।
১ বদনা পানি ১০ টাকা :
রোববার ইজতেমা ময়দানের আশপাশে প্রতি বদনা পানি ১০টাকা হারে বিক্রি করতে দেখা গেছে। অনেক মুসল্লি প্রতি পাতা পত্রিকা ২টাকা করে কিনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও আশপাশের ফুটপাতে বসে মোনাজাতে অংশ নেন।
ইজতেমায় ৮ মুসল্লীর মৃত্যু :
দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় শনিবার দুই মুসল্লীর মৃত্যু হয়েছে। টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক চিত্তরঞ্জন দাস বলেন, বার্ধক্যজনিত কারণে রাত ১টার দিকে মুসল্লী মোবারক হোসেন ওরফে মোহর আলী (৬৫) মৃত্যু হয়। তার বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুরে। শ্বাসকষ্টজনিত কারণে শনিবার সকাল সোয়া ৬টার দিকে শহীদুল ইসলামের (৫৬) মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে। ইজতেমায় আগত বিদেশি মুসল্লীসহ এ পর্যন্ত দুই পর্বে বিভিন্ন বয়সী মোট ৮জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
গণমাধ্যমের বদৌলতে মোনাজাতে অংশগ্রহণ:
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মোনাজাতের সময় বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করে বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মোনাজাত। টিভির সামনে বসে দেশ বিদেশের কোটি কোটি মানুষ মোনাজাতে অংশ নেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
তারেক মাহমুদ ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ৩:২৩ এএম says : 0
আমাদের সকলের উচিত আল্লাহর দরবারে আকুতি জানিয়ে দুনিয়ার কৃতকর্মের জন্য নিঃশার্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা
Total Reply(0)
মোঃ আল আমিন ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ৯:২৮ এএম says : 0
বাংলাদেশ যে একটি শন্তিপূর্ন দেশ এবং ভ্রাত্তিবন্ধন দেশ আর একে অপরের প্রতি সহনশিলতা বজায় রাখার দেশ হিসাবে আল্লাহ তাআলা বহিঃবিশ্বে পরিচিত করে তুলে এই তাবলিগ জামাতের সাথীদের মেহনতের ফলে। তাই আমি সবাইকে অনুরোধ করবো কেউ বাজে মন্তব্য না করে কাধে কাধ মিলিয়ে ভ্রত্তি বজায় রেখে আখেরাত কে সামনে রেখে দুনিয়ার জীবন পার করি।
Total Reply(0)
M Nazrul Islam ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১:৪৪ পিএম says : 0
Allah jeno sobaike jannat dan koren amin
Total Reply(0)
Nk Niloy ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১:৪৪ পিএম says : 0
আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন আমিন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন