চার দিনেও যুবলীগ নেতা সৈকত হত্যাকান্ডের কোন কিনারা করতে পারছে না পুলিশ। খুঁজে বের করতে পারছে না সৈকতের গুপ্তঘাতকদের। কী কারণে তাকে এত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে তার মুটিভও উদ্ধার করতে পারছে না পুলিশ। এত ভয়াবহ হত্যাকান্ডের পরও পুলিশ এখনো অন্ধকারেই হাবুডুবু খাচ্ছে। যার ফলে একজন তরতাজা যুবকের নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনা ধামাচাপা পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, ঝুট ব্যবসায়ী মাহমুদুল হাসান সৈকতকে হত্যা করা হয় গত ২৬ মার্চ রাতে। পরদিন ২৭ মার্চ তার লাশ উদ্ধার করা হয় পার্শ্ববর্তী শিবপুর উপজেলার দক্ষিণ পুরানদিয়া এলাকা থেকে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট এবং পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জানা যায়, সৈকতকে অত্যান্ত নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। গুপ্তঘাতকরা তাকে অপহরণ করে তার হাত পিছমোড়া বাধ দিয়ে তাকে নিষ্ঠুরভাবে পিটানো হয়েছে। শক্ত লাঠি বা বস্তু দিয়ে তার কোমরের নীচের অংশে পিটিয়ে ২ পায়ের মাংস তুলোধুনা করে দেয়া হয়েছে। একের পর এক অব্যাহত আঘাতে চামড়ার নীচে মাংস কোষগুলো গলে গাঢ় তরলের মতো একাকার হয়ে গেছে। একাধারে লাঠি দিয়ে নির্যাতনের পর তার ঘাড় মটকে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, হত্যাকান্ডের সময় তাকে উপুড় করে নির্যাতন করা হয়েছে। গুপ্তঘাতকরা তার মাথা পা বা ভারী চাপ দিয়ে মাটিতে চেপে ধরে রাখায় তার নাকে-মুখে কাঁদা ঢুকে গেছে। চিকিৎসকদের মতে, ৩ টি কারণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। প্রথমত: তাকে পিটানোর সময় আঘাত সইতে না পারায় তার হার্ট ফেইল হয়ে যেতে পারে। দ্বিতীয়ত: ঘাড় মটকে দেয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তৃতীয়ত: উপুড় করে মাথা চেপে ধরায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, সৈকত হত্যাকান্ড কোন স্বাভাবিক হত্যাকান্ড নাও হতে পারে। খুব গভীর শত্রুতা না থাকলে কোন মানুষ কাউকে এভাবে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করতে পারে না। স্বাভাবিক শত্রুতা থাকলে একটি গুলি বা একটি ছুরিকাঘাতেই একজন মানুষকে হত্যা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে গুপ্তঘাতকরা পেশাদার খুনীদের মতো তাকে আস্তে আস্তে তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছে। আর এর পিছনে লুকায়িত থাকতে পারে বড় ধরনের কোন শত্রুতা। কী সেই শত্রুতা তা খুঁজে বের করতে হলে তার পরিবারের সদস্যদেরকেই আগে এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশকে ক্লু দিয়ে সহযোগিতা করলে পুলিশ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই গুপ্তঘাতকদেরকে খুঁজে বের করতে পারবে। নরসিংদী জেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আগে দেখতে হবে সৈকত হত্যাকান্ডের ঘটনা কোন রাজনৈতিক হত্যাকান্ড কিনা। পরে দেখতে হবে কোন ব্যবসায়িক কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা। কিংবা হত্যাকান্ডের পিছনে কোন পারিবারিক কারণ থাকতে পারে কিনা। ত্রিমুখী তদন্ত চালিয়ে সৈকত হত্যাকান্ডের মুটিভ উদ্ধার করতে হবে। এ ব্যাপারে শিবপুর থানার ওসি আবুল কালামের আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তদন্তে হত্যাকান্ডের ট্র্যাক খুঁজে পাওয়া গেছে। পুলিশ এখন ট্র্যাকের উপর দিয়ে হাটছে। যে কোন সময়ই সৈকতের খুনীরা ধরা পড়ে যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন