নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওরসহ ভিবিন্ন হাওরে এবার বোরোর বাম্পার ফলন হলেও এলাকায় ধান কাটার শ্রমিক স্বল্পতা ও ধানের মূল্য কম থাকাসহ নানান সমস্যায় এলাকার কৃষকরা এবার দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওর পাড়ের জৈনপুর, শ্যামপুর, রামপাশা, সিয়াধার ও খূরশিমূল এলাকা ঘূরে কৃষকদের সাথে কথা বলে তাদের এসব সমস্যার কথা জানা গেছে।
কৃষকরা জানান, প্রকৃতি অনুকুলে থাকায় এবার হাওরে থাকা তাদের বোরো জমিতে বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু এবার হাওরে ধান কাটার জন্য বহিরাগত শ্রমিক না আসায় তারা স্থানীয় শ্রমিকদেরকে অধিক মুজুরী দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। এছাড়াও টানা বৃষ্টির কারনে হাওর এলাকার সব ক’টি রাস্তা-ঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় তারা জমির কাটা ও মাড়াইকৃত ধান বাড়িতে আনতে পাছেন না। এতে করে কৃষকেরা ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে স্থানীয় ধান ব্যবসায়ীদের কাছে ৪৫০-৫০০ টাকা দরে প্রতি মন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে তাদেরকে। এতে করে তারা এবার হাওরের জমিতে বোরো আবাদ করেও খরচই উঠবেনা বলে জানিয়েছেন ওইসব কৃষকেরা।
উপজেলার খুরশীমূল গ্রামের কৃষক মলয় দেব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত বছরের প্রায় দেড় লাখ টাকা ঋন মাথায় নিয়ে এবারও আমি ডিঙ্গাপোতা হাওরের থাকা আমার প্রায় ১৩ একর জমিতে নতুন করে আরো ১লাখ ২০ হাজার টাকা ঋন করে বোরো আবাদ করেছিলাম। কিন্তু এবার আমার জমিতে বাম্পার ফলনও হয়েছে। তবে এবার এলাকায় ধান কাটার জন্য বহিরাগত শ্রমিক না আসায় ৬০০-৬৫০ টাকা রোজ দিয়ে স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গত কযেকদিন ধরে বৃষ্টি থাকায় হাওর থেকে যাতায়াতের রাস্তাটিও নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নাম মাত্র মূল্যেই আমাদেরকে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।
একই ধরনের মন্তব্য করেন, উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের কৃষক খুর্শেদ আলম, রামপাশা গ্রামের কৃষক প্রণয় দেব, একই গ্রামের কৃষক মুখশেদ আলী, শিয়াধার গ্রামের কৃষক রিপন মিয়া, জৈনপুর গ্রামের কৃষক আল-আমিনসহ অনেকেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মফিজুল ইসলাম নাফিস বলেন, এবার উপজেলায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে এবং এবার বোরো বাম্পার ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে কৃষকেরা গড়ে প্রায় ৬৫ ভাগ জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে পারলেও গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টির কারনে কৃষকেরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন