রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মহাকাশে ৪৭৩৯তম বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট

| প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফলভাবে উৎক্ষেপণ হয়েছে। উৎক্ষেপিত হওয়ার পর বাংলাদেশের গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশনে প্রাথমিক সিগন্যালও পেয়েছে। শুক্রবার রাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস স্টোরের লঞ্চ পেড থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের সাথে সাথে একটি এলিট ক্লাবে যুক্ত হয়ে যায় বাংলাদেশ। নিজস্ব স্যাটেলাইট রয়েছে এমন সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশ এখন ৫৭তম। যার সূচনা হয়েছিল ৬০ বছর আগে ১৯৫৭ সালে সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মাধ্যমে। ওই বছর প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ স্পুটনিক-১ পাঠিয়ে মহাকাশে জায়গা করে নেয় দেশটি। এরপর একে একে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, চীনসহ অন্যান্য রাষ্ট্র যুক্ত হতে থাকে। যার সর্বশেষ সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে নাম লেখালো বাংলাদেশ।
স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ও এর গতিবিধি নিয়ে কাজ করে এন২ওয়াইও.কম ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, ইতোমধ্যে মহাকাশে ৫৯টি দেশ, কয়েকটি দেশ যৌথভাবে এবং বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা মিলে প্রায় ৪ হাজার ৭৩৮টি স্যাটেলাইট উক্ষেপণ করেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এই তালিকায় যুক্ত হলো ৪ হাজার ৭৩৯তম স্যাটেলাইট হিসেবে। রাষ্ট্রগুলোর বাইরে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি, আরব স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনস অর্গানাইজেশন, এশিয়া স্যাটেলাইট টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি, ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর দ্য এক্সপ্লয়টেশন অব মেটেওরলোজিক্যাল স্যাটেলাইটস, নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনেরর স্যাটেলাইট পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আগে উৎক্ষেপণ হওয়া ৪ হাজার ৭৩৮টি স্যাটেলাইটের মধ্যে বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে এক হাজার ৭৩৮টি। অন্যদিকে উইনডোজ টু ইউনিভার্স ডট অর্গ এর তথ্য মতে মহাকাশে সক্রিয় স্যাটেলাইট ২ হাজার ২৭১টি।
ওয়েবসাইটটির তথ্য অনুযায়ি, মহাকাশে সবচেয়ে বেশি স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই দেশটির স্যাটেলাইটের সংখ্যা ১৬শ’ ১৮টি। এর মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ৮০৩টি। এরপরেই আছে যুক্তরাষ্ট্রের এক সময়ের শক্তিশালী প্রতিদ্ব›দ্বী রাষ্ট্র সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের স্যাটেলাইট ১৫শ’ ৪টি। রাশিয়ার বর্তমানে সক্রিয় স্যাটেলাইট ১৪২টি। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে এশিয়ার শক্তিশালী রাষ্ট্র চীন। চীনের স্যাটেলাইট ২৯৮টি এবং সক্রিয় আছে ২০৪টি। অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো মিলে উৎক্ষেপণ করেছে এক হাজার ৩২২টি স্যাটেলাইট। এর মধ্যে এখন সক্রিয় রয়েছে ৫৮৯টি। এরপর রয়েছে জাপানের রয়েছে ১৭২টি, ভারতের ৮৮টি, ফ্রান্সের ৬৮টি, জার্মানির ৫২টি, কানাডার ৪৮টি, যুক্তরাজ্যের ৪২টি, ইতালির ২৭টি, দক্ষিণ কোরিয়ার ২৪টি, স্পেনের ২৩টি, অস্ট্রেলিয়ার ২১টি, আর্জেন্টিনা ১৮টি। ১৭টি করে আছে ব্রাজিল ও ইসরাইলের, ইন্দোনেশিয়ার ১৬টি, তুরস্কের ১৫টি, সউদী আরবের ১৩টি, মেক্সিকো ও সুইডেনের ১২টি করে, ৯টি করে স্যাটেলাইট আছে এমন দেশগুলো হচ্ছে ডেনমার্ক, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান। নরওয়ের স্যাটেলাইট আছে ৮টি, মালয়েশিয়া ৭টি, কাজাখস্তান, নেদারল্যান্ড, আলজেরিয়া, নাইজেরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার আছে ৬টি করে, মিশরের ৫টি, লুক্সেমবার্গ ও গ্রিসের ৪টি করে স্যাটেলাইট আছে। ৩টি করে স্যাটেলাইট আছে পাকিস্তান, চিলি, চেক প্রজাতন্ত্র, ভেনিজুয়েলা ও ভিয়েতনামের। ২টি করে আছে বেলারুশ ২টি, সাবেক চেকোশ্লোভাকিয়া, ইকুয়েডর, উত্তর কোরিয়া, ফিলিপাইন, পোল্যান্ড ও পর্তুগালের। আজারবাইজান, বলিভিয়া, বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, ইরাক, ইরান, লাউস, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, মরোক্কো, পেরু, ¯েøাভাকিয়া ও উরুগুয়ের প্রতিটি রাষ্ট্রের একটি করে কৃত্রিম উপগ্রহ আছে।
রাষ্ট্রগুলোর এককভাবে স্যাটেলাইট থাকার পাশাপাশি কয়েকটি রাষ্ট্র যৌথভাবেও স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। চীন-ব্রাজিল সর্বাধিক যৌথভাবে ৩টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। ফ্রান্স-জার্মানি, ফ্রান্স-ইতালি, সিঙ্গাপুর-তাইওয়ান যৌথভাবে ২টি করে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। এছাড়া তুর্কিমিনিস্তান-মোনাকো ও যুক্তরাষ্ট্র-ব্রাজিলের যৌথভাবে ১টি করে স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছে।
সংস্থাগুলোর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন্স স্যাটেলাইট সংস্থার (ইটসো) ৮৫টি, গেøাবাল স্টারের ৮৪টি, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ৮২টি, সোসাইটি ইউরিপোয়ান স্যাটেলাইট ৫৫টি, ইউরোপিয়ান টেলিকমিউনিকেশন্স স্যাটেলাইট সংস্থার (ইইউটেলসেট) ৫১টি, অরবকমের ৪১টি, ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল স্যাটেলাইট সংস্থার (ইমারসেট) ১৭টি, শূন্য থ্রি বি নেটওয়ার্কসের ১৬টি, আরব স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন্স সংস্থার ১৩টি, এশিয়া স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন্স কোম্পানির (এশিয়াসেট) ৮টি, ইউরোপিয়ান মেটেওরলোজিক্যাল স্যাটেলাইট সংস্থার (ইইউমেটসেট) ৮টি, ন্যাটোর (নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন) ৮টি, ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের ৫টি, রিজিওনাল আফ্রিকান স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন্স সংস্থার ২টি, ইন্টারন্যাশনাল কফি সংস্থার (৫১ সদস্য) ১টি ও সী লঞ্চের ১টি কৃত্রিম স্যাটেলাইট মহাকাশ পদক্ষিণ করছে।
বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফল উৎক্ষেপণের পর এখন জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার অরবিটে পৌঁছানোর পর পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে বলে জানিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সেখান থেকে ঘুরতে ঘুরতে স্যাটেলাইটটি নির্দিষ্ট অরবিটাল ¯øটের দিকে যাচ্ছে এবং কাক্সিক্ষত অরবিটে পৌঁছাতে সাত থেকে নয় দিন সময় লেগে যাবে। স্যাটেলাইট অপারেশন প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম জানান, সব মিলিয়ে ৩৬ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে মহাকাশের ১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে নিজস্ব অরবিটাল ¯øটে স্থাপিত হবে এই কৃত্রিম উপগ্রহ। তবে অরবিটাল ¯øটে স্যাটেলাইটকে বসিয়ে কাজ শুরু করতে সময় লাগবে প্রায় দুই মাস। ###

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
নিঝুম ১৪ মে, ২০১৮, ২:১৫ এএম says : 0
যত তমই হোক কেন এখন মহাকে আমাদেরও স্যাটেলাইট আছে
Total Reply(0)
হাসান জাহাঙ্গীর ১৪ মে, ২০১৮, ২:১৬ এএম says : 0
এভাবেই এক এক করে আমরা সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবো। ইনশা আল্লাহ
Total Reply(0)
Al Noman ১৪ মে, ২০১৮, ১২:৩৯ পিএম says : 0
ভাল সংবাদ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন