শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সোনালি আসর

পাখি নিয়ে মজার কথা

প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মু হা ম্ম দ ব শি র উ ল্লা হ : প্রিয় সোনালী আসর বন্ধুরা! তোমরা কি কখনো ভেবে দেখেছো পৃথিবীতে পাখি কিভাবে এলো? জানি অনেকেই ভাবোনি। তাহলে এবার জেনে নেও পাখি কি ভাবে এলো। বিজ্ঞানের গবেষণায়, আদি কালে সরীসৃপ থেকে পাখির জন্ম হয়েছিল। পুরাজীব তত্ত্ববিদদের মতে, আজ থেকে প্রায় ১৫ কোটি বছর আগে এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। চার্লস ডারউইন ১৮৫৯ সালে তার ‘অরিজিন অব স্পেসিস’ বইতে লিখেছেন পাখি বিবর্তিত হয়েছে সরীসৃপ থেকে। এই বিজ্ঞানির নতুন তত্ত্ব তখন অনেক তোলপার তুলেছিল। ১৮৬১ সালে স্লেট পাথরের কনিতে অদ্ভূদ ধরনের এক প্রাণীর জীবষ্ম পাওয়া যায় ব্যাভেরিয়ার লাঙ্গেনালথেইম অঞ্চলে। আবিষ্কৃত জীবষ্মটির মাথা ছিল গিরগিটির মতো। চিকন লেজের সাথে ছিল কিছু চলনশীল কেশর। চোয়ালে দাঁতের সারি। ডানার হাড়ের শেষের দিকে ছিল তিনটি নখযুক্ত আঙুল। দেখতে অনেকটা সরীসৃপের কঙ্কালের মতো। বিজ্ঞানীদের ধারণা ওই প্রাণীটির গায়ে পালক ছিল এবং আকারে ছিল অনেকটা কাকের মতো। এই প্রাণীর অস্তিত্ব ছিল জুরাসিক যুগের শেষ পর্বে। এ জীবাষ্মটির বয়স হতে পারে প্রায় ১৪ কোটি বছর। বিজ্ঞানীরা এর নামকরণ করলেন ‘অর্কিওপটেরিক্স’ অর্থাৎ আদি পাখি হিসেবে। প্রথম প্রাপ্ত জীবাষ্মটি দেখতে মনে হয় এগুলো খুব একটা উড়তে পারতো না। এরা চামচিকে বা বাদুড়ের মতো চামড়ার ডানা নিয়ে ওড়ার চেষ্টা করতো।
অন্যদিকে পবিত্র কোরআনের ভাষ্য অনুযায়ী কাক হচ্ছে পৃথিবীর প্রাচীনতম পাখি। হযরত আদম আলাইহিসসালাওয়াতু ওয়া-সাল্লাম যে সময়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন সে সময়েও পৃথিবীতে কাক ছিল। প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা হাবিল ও কাবিলের কাহিনী হয়ত বা শুনে থাকবে। যে কাহিনীর সাথে কাকের একটা সম্পর্ক রয়েছে। আর যারা শুনোনি তারা শুনে নাও। হযরত আদম আলাইহিসসালাওয়াতু ওয়া-সাল্লাম এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিল। এই দুই ভাইয়ের মধ্যে একদিন ভিষণ ঝগড়া বাধে। যেমন তোমরা করে থাকো। এতে দুই ভাই মারামারিতে লিপ্ত হয়। এক পর্যায় হাবিল মারা যায়। কাবিল তখন কি করবে? এর আগে দুনিয়ায় কেউ মারাও যায়নি। কাবিল বড়ই দুর্চিন্তায় পড়ে গেল। মানুষ মরে গেলে মৃত্যুদেহ কি করা হবে? এভাবে নানা চিন্তায় পেরেশান হয়ে আছে কাবিল। ঠিক তখন দেখা গেল, দুটি কাক মারামারি করতে করতে একটি কাক মারা যায়। তখন জীবিত কাকটি ঠোঁট দিয়ে মাটি আঁচড়ে আঁচড়ে গর্ত করে মরা কাকটি মাটি চাপা দিয়ে দিল। অবশেষে কাবিলও তেমটা করলো।
বন্ধুরা এখন তোমাদের এই কাক নিয়ে কিছু বলছি। পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে কাক দীর্ঘজীবী পাখি। একটি কাক ২শ থেকে ৩শ বছর বেঁচে থাকে। কাকের গলার স্বর কর্কশ। মধুরতা নেই একটুও। কা কা ডাকের কারণেই হয়তবা এদের নাম কাক হয়েছে। রূপসি নয় মোটেও। গায়ের রং কালো। চোখ, পা ঠোঁটও কালো। মাথা গলা বুকের উপরের পশম নীলাভ চকচকে। এই কাকের রয়েছে অনেক দোষ ও গুণ। এরা বোকা ও বুদ্ধিমানও বটে। এদের খাবার ব্যাপারে নেই কোনো বাছবিচার। এরা পঁচাগলা মরা জীবজন্তু, ভাত তরকারি, ফলমূল সবই খেয়ে থাকে।
এই কাক নিয়ে রয়েছে অনেক গল্প কবিতাও। তোমরাতো চড়–ই আর কাকের মজার গল্পটি জানো। চড়–ই কাকের বুকের মাংস খাওয়ার জন্য কত চেষ্টাই না করেছে। কাক আর শেয়ালের গল্পটিতো কম যায় না। কাকের মুখের মাংস খাওয়ার জন্য যখন শেয়াল তোয়াজ করে বলে কাকের স্বর কি মধুর। কাক তা শুনে কা কা ডেকে উঠতেই মুখের মাংস ছিটকে পড়ে শিয়ালের সামনে। বোকা কাক। কাকের বুদ্ধির গল্পও রয়েছে, বৈজ্ঞানিদের দৃষ্টিতে কাকের অনেক বুদ্ধি। হয়তো পাখিদের রাজ্যে সব থেকে বুদ্ধিমান পাখি কাক। তোমরা শুনবে! কাকের বুদ্ধির গল্প? শুন, কাকের অনেক তৃষ্ণা পেয়েছে। পানি পান করবে কিন্তু কোথাও পানি দেখা যায় না। দেখতে পেল একটি কলসি। তাতে কিছু পানি আছে তবে তা নাগালের বাইরে। তখন কাক কিছু নুড়ি পাথর কলসির ভিতরে ফেলে এতে পানি উপরে উঠে আছে। চমৎকার বুদ্ধি। সর্বপরি বলবো কাক নিয়ে অনেক মজার মজার গল্প, কবিতা আমাদের নাগালে রয়েছে।
কাক দলবদ্ধভাবে থাকে। স্বজাতির প্রতি তাদের ভালোবাসা অপরিসীম। কেউ বিপদে পড়ে গেলে এরা দলবদ্ধভাবে প্রাণপণ চেষ্টা করে তাকে উদ্ধারের। কাকের দুটি প্রজাতি রয়েছে। পাতিকাক আর দাঁড়কাক। পাতিকাক শহুরে জীবনে অভ্যস্ত আর দাঁড়কাক খানিকটা ভীতু। পাতিকাক চুরিতে ওস্তাদ। এদের পোষ মানানো এবং কথা শেখানো যায়। পাতি কাকরা বাসা লোকালয়ের কাছাকাছি বানিয়ে থাকে।
অনেক জন্ম, মৃত্যু ও অবলুপ্তির পর্যায় পার হয়ে বর্তমানে এসে পৌঁছেছে পাখিরা। আমেরিকার পিয়ার্স ব্রডকর্বের মতে, এ পর্যন্ত পৃথিবীতে ১৬ লাখ ৩৪ হাজার জাতির পাখির জন্ম হয়েছে। এই গণনার হিসেবের তুলনায় এখন কম সংখ্যক পাখিই টিকে আছে।
তথ্য সূত্র : ইন্টারনেট

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন