শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোনালি আসর

পহেলা বৈশাখ ও শিশু

ফিচার

| প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সা হি দা সা ম্য লী না : প্রতিটা শিশু পৃথিবীতে আসে পরম মায়া নিয়ে। ওরা যেন পবিত্রতার চাদরে মাখা একটি দিনের একটি সকাল। ওদের চোখের ভাষা, বুলি হাজার আদরের যেন বিশাল ভান্ডার! একসময় শিশুদের নিয়ে এত ভাবা হতো না। এখন শিশুদের নিয়ে দেশ, জাতি, পরিবার, শিক্ষক সবাইকে ভাবতে হচ্ছে। এরাই আগামীর কর্ণধার! শিশুদের ঠিকমতো পরিমার্জনে পরিবার হতে শুরু করে সকলে এগিয়ে এসেছে। আসতেই হবে। শিশুদের ভূমিকা এখন সর্বক্ষেত্রে। ওদের বয়স অনুযায়ী মেধা, দক্ষতা, পরিবেশনায় বড়দের চাইতে কোনো অংশে কম নয়। তাই তো বড়দের সাথে পাল্লা দিয়ে শিশুরা তাদের সব দক্ষতাকে কাজে এগিয়ে নিচ্ছে। কবিতা আবৃত্তি, গান, নাচ, অভিনয় দিয়ে যেমন দেশে রতেœর সংখ্যা এখনই জানান দিচ্ছে তেমনি যে কোনো উপলক্ষকে কেন্দ্র করে নিজেদের আরো চৌকস প্রমাণে মেলে ধরছে প্রতিনিয়ত। যে কোনো দিবসে শুধু মেধা পরিবেশনায় নয় সাজে, কেনাকাটায়, ঘোরাফিরায়, খেলাধুলা, আনন্দে শিশুরা এখন যোগ দিচ্ছে সরাসরি। এটি আশার আলো বটে এবং শিশু অবস্থায় নিজেদের ভেতরের কলিগুলোকে রিহার্সেল করার সময় পাচ্ছে। ঝালাই করে নিচ্ছে তাদের সব যোগ্যতা। এটি আমাদের দেশের জন্য এক শুভ লক্ষণ। নব্বই আশি দশকে শিশুরা এতোটা সুযোগ পেত না, যত না পাচ্ছে বিংশ ও একবিংশ শতকে। বড়দের মনমানসিকতা পরিবর্তনের কারণে এই স্বর্ণ সময় আমরা দেখতে পাচ্ছি। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের শিশুদের নিয়ে অকল্পনীয় স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেখা মিলবে শীঘ্রই। গত পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশের শিশুরা সেজেছে, নেচেছে, পেখম তুলেছে গানে, নাচে, অভিনয়ে, আবৃত্তিতে। বৈশাখকে কেন্দ্র করে বৈশাখী ভাবনা তাদের কৌত‚হলের ঝাঁপি খুলে দিয়েছে। বৈশাখের জন্ম, উদযাপন, ইতিহাস তারাও জানে এখন বড়দের চাইতে বেশি। সকাল বেলা মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া হতে শুরু করে মেলায় ঘোরা, পান্তা-ভর্তা খাওয়া এখন রাজধানী হতে শুরু করে দেশের সব জেলায় দেখা গিয়েছে। বৈশাখী সাজে ছেলেরা পাঞ্জাবী বা বৈশাখের রং মেচিং করে লাল সাদা গেঞ্জি, মেয়েরা লাল সাদা শাড়ি বা ফ্রক ও সালোয়ার কামিজ পরিধান করে বৈশাখ উদযাপন এক আলাদা অনন্য মাত্রা যোগ করেছে ইতোমধ্যে। মার্কেটে গিয়ে বাবা-মায়ের সাথে বৈশাখের কেনাকাটায় শিশুদের দেখা মিলেছে দেশের সব জেলায়। বিগত কয়েক বছর ফ্যাশন হাউসগুলো শিশুদের পোশাক তৈরিতে একান্ত মনোনিবেশ করেছে। শিশুদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন ও মোটিফ, রঙ্গের কারুকাজ যোগ করেছে তারা। এক শিশুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তুমি কিসের কেনাকাটা করছ? বলল পহেলা বৈশাখের। অনেক শিশু পহেলা বৈশাখের প্রবর্তক স¤্রাট আকবরের নাম জানে। বাংলা সাল তারা বলতে পারে। যা অনেক ক্ষেত্রে বড়রা প্রায়ই জানে না। আরেক শিশুকে প্রশ্ন করা হলো পহেলা বৈশাখ কি? সে বলল, বাংলা বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। এভাবে প্রতিটি শিশুকে প্রতিটি উৎসবকে সামনে রেখে শিখানো যেতে পারে সব কিছু। শিশুদের আইকিউ বেশি সচল। তারা এখন যেটি বেশি রপ্ত ও মগজে ধারণ করতে পারবে বড় হবার পর মুখস্থ করলেও তা ততটা ক্ষণস্থায়ী হতে পারে না। শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ না করে এবং যে কোনো সাংস্কৃতিক কর্মকাÐেও জোরজবরদস্তি না করে এভাবে আনন্দ দিয়ে শিখানো যেতে পারে। এভাবে শিশুরা আপন মননে, আপন ভুবনে দেশীয় আবহ ও সংস্কৃতি সহজে ধারণ করতে পারবে। শিশুরা যেমন নরম, কোমল তেমনি শিখানোর পদ্ধতিটাও হতে হবে তদ্রƒপ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন