বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আজ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৭তম শাহাদাতবার্ষিকী

| প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


ফারুক হোসাইন : আজ ৩০ মে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তক জিয়াউর রহমানের ৩৭তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এইদিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সৈনিকের হাতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। সেই থেকেই তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি দিবসটিকে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবাষির্কী হিসেবে পালন করে আসছে। এবারও দলের প্রতিষ্ঠাতার শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি গত ২৫ মে থেকে ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে। দিনটি উপলক্ষে রাজধানীতে আজ থেকে তিনদিন দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে। প্রতিবছর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নগরীরর পথে পথে তবারক বিতরণ করতেন কিন্তু এবারই প্রথম তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীতে অনুপস্থিত থাকছেন। তবে পারিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, স্বামীর মৃত্যুবাষির্কীতে ইবাদত-বন্দেগিতে দিনপার করবেন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি বেগম খালেদা জিয়া।
জিয়াউর রহমান তার ঘটনাবহুল কর্মময় জীবনের কারণেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ প্রভৃতি গুণাবলী এদেশের গণমানুষের হৃদয় ষ্পর্শ করেছিল। জিয়া ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় একজন কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে জিয়া পিতার সঙ্গে কলকাতায় এবং দেশ বিভাগের পর করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাবুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার কোম্পানি যুদ্ধে সবচেয়ে অধিক খেতাব লাভ করে। সৈনিকজীবনে তিনি যেমন চরম পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন ঠিক জাতীয় সকল সঙ্কটকালেও শক্ত হাতে হাল ধরেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী যখন নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। বিএনপির দাবি জিয়াউর রহমানই তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। নয় মাসের মুক্তি সংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীরোত্তম খেতাব লাভ করেন।
১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহতের পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যূত্থানে খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয়। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। চারদিকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আধিপত্যবাদের শ্যেন দৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল সারা জাতি। এমসয় সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াকে মুক্ত করা হয় এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন তিনি।
গভীর দেশপ্রেমের গুণাবলি দিয়ে জিয়াউর রহমান জাতির মধ্যে নতুন করে জাগরণের সৃষ্টি করেন। দেশের মানুষের উপযোগী একটি স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটান। দেশে ঐক্যের রাজনীতিচালু করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন চরম বামপন্থীরা স্থান পায় তেমনি চরম ডানপন্থীরাও জায়গা করে নেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে ৫৪ বছরের জিয়া বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে দেশ-জাতিকে মুক্ত করেন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তার স্মরণকালের নামাজে জানাজায় প্রমাণীত তিনি কতো জনপ্রিয় ছিলেন।
কর্মসূচি
১০ দিনের কর্মসূচির মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা, আজ সকাল ১০টায় জিয়ার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করবে। কবর প্রাঙ্গণে মিলাদ মাহফিল, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বইমেলা প্রভৃৃতির আয়োজন ছাড়া আজ বিএনপি নয়াপল্টনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ বুকে ধারণ করবে। মহানগরের প্রতিটি থানায় দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে কাপড় ও ইফতারসামগ্রী বিতরণ করা হবে। ছাত্রদলের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের জিয়াউর রহমানের ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। বিভাগীয় শহরগুলোয় জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি পোস্টার প্রকাশ করবে। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিয়িায় প্রকাশ করবে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও বিশেষ দৃশ্য।#####

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন