রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

বিএনপির তিন নেতার ভারত সফর : গণমাধ্যম এবং জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

মোবায়েদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কয়েকদিন আগে একটি কি দুটি জাতীয় দৈনিকে একটি খবর বেরিয়েছিল। খবরটিতে বলা হয় যে, বিএনপির দুই নেতা ব্যাংকক গেছেন। এরা হলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির মেম্বার আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। পরের দিন অপর একটি পত্রিকায় খবর বের হয় যে, আর এক ব্যক্তি ব্যাংকক গেছেন। তিনি হলেন এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্তজা। ঐ সব রিপোর্টে বলা হয় যে, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী দিল্লী থেকে লন্ডন যাবেন। সেখান থেকে আমেরিকা। এনডিপির গোলাম মোর্তজা সম্পর্কে আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এসব পলিটিশিয়ানের ব্যাংকক গমন সম্পর্কে যখন স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা-কল্পনা এবং গুঞ্জন শুরু হয় তখন ঐ দুই একটি পত্রিকায় আর একটি খবর আসে। ঐ খবরে বলা হয় যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক গেছেন। তিনি সেখানকার বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি হবেন অথবা চিকিৎসা নেবেন। সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের সাথে তার অ্যাপয়েন্টমেন্টও হয়ে গেছে। তার সাথে আছেন তার স্ত্রী রাহাত আরা। বেগম ফখরুলও সেখানে থরো মেডিক্যাল চেকাপ করাবেন। মির্জা ফখরুল সেখান থেকে আর কোথাও যাবেন না। তিনি এক সপ্তাহ পর সরাসরি ঢাকা ফিরে আসবেন।
এরপর এক সপ্তাহও অতিক্রান্ত হয়নি। গত শনিবার দুইটি দেশের দুইটি বিখ্যাত ইংরেজি দৈনিকে একটি খবর প্রকাশিত হয়। খবরটি যেন একটি বম্বশেল। একটি খবর প্রকাশিত হয় বাংলাদেশের ডেইলি স্টারে। অপরটি ইন্ডিয়ার দি হিন্দুতে। প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত ডেইলি স্টারের ঐ রিপোর্টের শিরোনাম ছিল, ‘Eyes on General Election/BNP in talks with Indian think tanks’। আর দি হিন্দুর শিরোনাম হলো, ‘BNP seeks India’s help for free and fair polls in Bangladesh’।
ডেইল স্টারের রিপোর্টটি লিখেছেন মোহাম্মদ আল মাসুম মোল্লা এবং পল্লব ভট্ট্যাচার্য। ৯ জুন প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বিএনপির তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল এখন ভারতে আছে এবং তারা ভারতের নেতৃস্থানীয় থিঙ্ক ট্যাংকসমূহের সাথে আলোচনা করছেন। তারা আগামী ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য পার্লামেন্টারি নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সাথে আলোচনা করবেন। এই দলটির নেতৃত্ব করছেন স্ট্যান্ডিং কমিটির মেম্বার আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিগত কয়েক দিনে তারা ভারতের অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ORF), বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন (VIF) এবং রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের (RGF) সাথে আলোচনা করেছেন। প্রতিনিধি দলের অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শিল্পপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
এই আলোচনায় ভারতের থিংক ট্যাংকসমূহ বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন এবং আইনের শাসন সম্পর্কে জানতে চায়। তারা জানায় যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং সুশাসনের অনুপস্থিতি সম্পর্কে তারা অবগত রয়েছেন। তারপরেও তারা আমাদের মুখ থেকে সেসব কথা শুনতে চেয়েছেন এবং আমরা তাদেরকে ব্রিফ করেছি। আমির খসরু বলেন যে, তারা ভারতে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলেন নাই। অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ORF) ভারতের একটি নেতৃস্থানীয় থিংক ট্যাংক। এর সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন ক‚টনীতিক, আমলা, অর্থনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই আলোচনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ভারতের প্রাক্তন হাই কমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। বাংলাদেশের একটি ইংরেজি পত্রিকাকে ORF এর সিনিয়র ফেলো জয়িতা ভট্টাচার্য্য জানান যে, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সাথে তাদের নিবিড় আলোচনা হয়েছে। তাদের আলোচনা এক ঘণ্টারও বেশি কাল স্থায়ী ছিল। গত শুক্রবার সকালে বিএনপি প্রতিনিধি দল দিল্লি ভিত্তিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (RSS) নেতৃবৃন্দের সাথে দুই ঘণ্টা ব্যাপী বৈঠকে মিলিতি হন।
প্রতিনিধি দল ইন্সটিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস(IDSA) এর সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে তারা প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করেন।
দুই
দিল্লিতে অবস্থান কালে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ভারতের বহুল প্রচারিত প্রখ্যাত ইংরেজি দৈনিক দি হিন্দুকে একটি সাক্ষাতকার দান করেন। ঐ সাক্ষাতকারে তিনি অভিযোগ করেন যে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে একদলীয় শাসন কায়েম করার চেষ্টা করছেন। পক্ষান্তরে বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে এই মর্মে আপিল করেছেন যে, বাংলাদেশে যাতে করে নির্বাচনের সময় জনগণ অবাধে ভোট দিতে পারে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেন সাহায্য করেন। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আশা প্রকাশ করেছেন যে, বাংলাদেশের বৃহৎ প্রতিবেশী হিসেবে আগামী নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে ভারত সাহায্য করবে। তিনি বলেন বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে এই ধরনের একটি ধারণা রয়েছে যে, ভারত সব সময় একটি দল অর্থাৎ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে সমর্থন করে। অবশ্য পত্রিকাটির মতে আওয়ামী লীগের প্রতি ভারতের সমর্থনের মধ্যে অনেক ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সমর্থন। দি হিন্দুর মতে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে পাকিস্তান পন্থিদেরকে পুনর্বাসিত করা হয়।
বেগম খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলে সন্ত্রাসী গ্রæপের উত্থান ঘটে। তাদের টার্গেট ছিল ভারত। পত্রিকাটি এ প্রসঙ্গে হরকাতুল জিহাদুল ইসলামীর (হুজি) নাম করেছে। দি হিন্দু শেখ হাসিনাকে এই বলে ক্রেডিট দিয়েছে যে, তার প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলে ঐসব সন্ত্রাসী গ্রæপকে দমন করা হয়েছে। অনেক সন্ত্রাসীকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ২০১২ সালে বেগম খালেদা জিয়া তার ভারত সফরকালে ঘোষণা করেন যে, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের মাটিকে ভারত বিরোধী কাজের জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
দি হিন্দুকে বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন যে, আমাদেরকে সামনের দিকে তাকাতে হবে। পেছনে তাকালে চলবে না। ৮০ এবং ৯০ দশকের রাজনীতি এখন অচল। দি হিন্দু হুমায়ুন কবিরকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা বলে উল্লেখ করেছে। মি. কবির বলেছেন, তারেক রহমান চান যে আমরা ভারতের সাথে কথা বলি। আজ বাংলাদেশের তরুণ সমাজের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করা হবে। হুমায়ুন কবিরকে উদ্ধৃত করে দি হিন্দু বলেছে যে, অতীতে বিএনপির আমলে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে যে খারাপ সম্পর্ক ছিল সেটি ছিল বোকামি এবং বিভ্রান্ত (misguided and foolish.)।
২০১৪ সাল থেকে যখন বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে এবং দি হিন্দুর ভাষায় শেখ হাসিনাকে ‘ওয়াক ওভার দেয়’, তখন থেকে বিএনপি ক্ষমতা হারিয়ে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। এছাড়া হাসিনা সরকার বিএনপির সব শ্রেণির নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে ৭৮ হাজার মামলা দায়ের করেছে। বিএনপি নেতৃত্বের দাবি অনুযায়ী এসব মামলায় বিএনপির ১৮ লক্ষ কর্মীকে জড়িত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হয় অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে অথবা গ্রেফতার করা হয়েছে অথবা তাদেরকে জোর করে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে।
২০১৬ সালে দি হিন্দুকে প্রদত্ত একটি সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের করা হয়েছে বলে বিএনপি যে অভিযোগ করে সেসব অভিযোগও তিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন যে, এসব হলো বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং দুর্নীতির মামলা।
পত্রিকাটি উল্লেখ করেছে যে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দাতব্য তহবিল তসরুফের মামলায় বেগম জিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। এই দন্ড বিএনপির সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বিদ্বতা করা থেকে বিরত রাখতে পারে। ভারত সফররত বিএনপির প্রতিনিধি দল এই কারান্ডি সম্পর্কে বলেন, এই দন্ড গণতন্ত্র ও নির্বাচনী রাজনীতির কণ্ঠরোধ করবে এবং ধর্মীয় চরমপন্থাকে উস্কে দেবে।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এই মর্মে হুঁশিয়ার করেন যে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং গণতন্তের অনুপস্থিতি বাংলাদেশের অনেক কর্মীকে আন্ডার গ্রাউন্ডে যেতে বাধ্য করছে। এখন এক মাত্র যে পথ খোলা আছে সেটি হলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাথে নিয়ে ভারত বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিশ্চয়তা বিধান করবে।
তিন
গত রবিবার এক শ্রেণির পত্র পত্রিকায় আর একটি খবর বেরিয়েছে। ঐ খবরে বলা হয়েছে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্যাংকক থেকে লন্ডন গেছেন। সেখানে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান তারেক রহমানের সাথে দুই দফা বৈঠক করেছেন। রবিবার লন্ডনের একটি ইফতার মাহফিলে তারেক রহমানের প্রধান অতিথি থাকার কথা। ঐ ইফতার মাহফিলে মির্জা ফখরুলও উপস্থিত থাকবেন। ঢাকার একটি অন লাইন বাংলা নিউজ পোর্টালের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি খবর দিয়েছেন যে, লন্ডন সময় রবিবার মধ্যরাতে মির্জা ফখরুল ঢাকার পথে লন্ডন ছাড়বেন।
বোধগম্য কারণেই বিএনপির এই চার নেতার বিদেশ সফর রাজনৈতিক মহলে প্রবল জল্পনা কল্পনার সৃষ্টি করেছে। হুমায়ুন কবির অবশ্য লন্ডন থেকে দিল্লি এসেছিলেন এবং সেখানেই আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং আব্দুল আউয়াল মিন্টুর সাথে যোগ দেন। সেখান থেকেই তিনি আবার লন্ডন ফিরে গেছেন। পত্র পত্রিকার রিপোর্টে বলা হচ্ছে যে, হুমায়ুন কবির এখন বলতে গেলে লন্ডনেই থাকেন। তিনি নাকি এই মুহুর্তে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। এই তিন নেতার দিল্লি সফর নিয়ে বোধগম্য কারণেই ঢাকার এক শ্রেণির পত্র পত্রিকায় তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। ডেইলি স্টার এবং দি হিন্দুর রিপোর্টে বলা হয়েছে, দিল্লিতে তারা বড় বড় রাজনৈতিক দলের কোনো নেতার সাথে দেখা করেননি।
গত রবিবার দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পৃষ্ঠায় এসম্পর্কে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টের শিরোনাম, ‘বিএনপির তিন নেতা ভারতে/ মির্জা ফখরুল লন্ডনে/ দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা’। এই রিপোর্টে ইত্তেফাকের নয়াদিল্লি প্রতিনিধি অঞ্জন রায় চৌধুরী জানিয়েছেন যে, দিল্লিতে বিএনপি প্রতিনিধি দলের সাথে ভারতের কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতার সাথে কোনো আলোচনা হয়নি। আমির খসরু দি হিন্দুকে বলেছেন তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করেননি। দলের অস্থায়ী প্রধান তারেক রহমানের নির্দেশে তারা দিল্লি এসেছেন। তারা এই বার্তা দিতে এসেছেন যে, ভারতীয় প্রশাসন যেন কোনো দল বিশেষকে সর্মথন না করে। তাদের উচিত বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে দৃঢ় ও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির ওপর স্থাপন করতে সাহায্য করা।
বিএনপির এই প্রতিনিধি দলের দিল্লি সফরে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
Email: journalist15@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
কাজল ১২ জুন, ২০১৮, ২:৪৮ এএম says : 0
এটা কোন ব্যাপার না
Total Reply(0)
গনি মিয়া ১২ জুন, ২০১৮, ২:৪৯ এএম says : 0
সকল কাজেই আলোচনা সমালোচনা থাকবেই
Total Reply(0)
মারুফ ১২ জুন, ২০১৮, ২:৫০ এএম says : 0
বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারতের কোন দলকে সমার্থন করা উচিত হবে না।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন