প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতারা। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পর আমরা বিভিন্ন ভাবে সরকারের একাধিক মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য সকল প্রকার চেষ্টা চালিয়েও অজ্ঞাত কারণে সাক্ষাৎ পাইনি। আমরা বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত হলে, আমাদের সমস্যার সমাধান হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ১৯ তম দিনে চতুর্থ দিনের মত রোদ-বৃষ্টির মধ্যে আমরণ অনশন চালিয়েছেন ননএমপিও শিক্ষকরা। আমরণ অনশনে এ পর্যন্ত ৯২ জন শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরমধ্যে গুরুতর অসুস্থ ৬ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এমপিওভুক্তির প্রতিশ্রæতি দিলে, শিক্ষকরা আনন্দে আত্মহারা হয়েছিল, মনে করেছিল শেষ পর্যন্ত তাঁরা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, পারিবারিক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হতে যাচ্ছেন। কিন্তু ৭ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৮-২০১৯ বাজেট অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় আবারও শিক্ষকদের গভীর অন্ধকারে তলিয়ে যেতে হচ্ছে। ভাবতে অবাক লাগে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়ন না করে শিক্ষামন্ত্রী প্রহসনের এমপিও নীতিমালা করে শিক্ষকদের রাজপথে ঠেলে দিলেন।’
পুলিশ শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছে অভিযোগ করে শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘আপনারা দেখছেন পুলিশ প্রসাশনও কিরূপ দুর্ব্যবহার করে চলেছেন শিক্ষকদের সাথে। শিক্ষকদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালনের জন্য জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান গ্রহণ করলে, শিক্ষক নেতাদের গ্রেপ্তারসহ নানা রকম হয়রানি করা হয়, এমনকি মূষলধারে বৃষ্টির মাঝে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বৃষ্টি ঠেকাতে ব্যবহৃত পলিথিনটুকুও কেড়ে নিয়ে যায়। আমরণ অনশন কর্মসূচিতেও মাইক ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না।’
আমরণ অনশন চলাকালে শিক্ষকরা জানতে পারে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় অনশনরত শিক্ষকদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো বাজেট না রাখায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এসময় তারা ‘এমপিওভুক্তির আন্দোলন চলবেই চলবে, প্রতিষ্ঠান বাঁচার আন্দোলন চলছে চলবে, বাঁচা মরার আন্দোলন চলছে চলবে, দাবি আদায় না হলে রাজপথ ছাড়বো না, শিক্ষক মারার বাজেট মানিনা মানবো না’ স্লোগান দিতে থাকে।
এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি। তারপর থেকেই এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন নন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন